করোনায় বিমান কোম্পানির ব্যবসা লাটে ওঠার জোগাড়

বিমান
বিমান

করোনাভাইরাস ঠেকাতে প্রায় সব দেশেই বিমান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। ফলে সারা পৃথিবীতেই বিপাকে পড়েছে বেসামরিক বিমান পরিবহন। বহু আন্তর্জাতিক উড়ান বাতিল, দেশীয় উড়ান কমানো, যাত্রী কমে যাওয়ার মতো সমস্যায় কার্যত ধুঁকছে অধিকাংশ কোম্পানি। ব্রিটেনের ইজি জেট ও লুফথানসা বলেছে, করোনাভাইরাসের প্রভাব দীর্ঘমেয়াদি হলে সরকারের সহযোগিতা ছাড়া তাদের পক্ষে টিকে থাকাই কঠিন হয়ে উঠতে পারে। বিবিসি সূত্রে এ খবর পাওয়া গেছে।

এই পরিস্থিতিতে অন্যদের মতো বিমান কোম্পানিগুলোকে বাঁচাতে পুনরুজ্জীবন প্যাকেজের পরিকল্পনা করছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। ১১ হাজার ৯০০ কোটি রুপির এই প্যাকেজ নিয়ে ইতিমধ্যে অর্থ মন্ত্রণালয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড পত্রিকা।

গতকাল বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক বিমান কোম্পানিগুলোর মধ্যে সর্বশেষ অস্ট্রেলীয় জাতীয় পতাকাবাহী বিমান কোম্পানি কানতাস আন্তর্জাতিক বিমান চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে।

কানতাসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা অ্যালান জয়েস বলেছেন, ‘চাহিদা একদম নেই বললেই চলে। অধিকাংশ মানুষের করার মতো কাজ নেই। এই পরিস্থিতিতে জাতীয় পতাকাবাহী বিমান কোম্পানির ভবিষ্যৎ নির্ধারণে আমাদের কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’

এদিকে ভারতীয় পত্রিকাগুলো জানাচ্ছে, বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রণালয়ের দেওয়া প্রস্তাব খতিয়ে দেখছে তারা। বিমান পরিবহন সংস্থাগুলোর অধিকাংশ ক্ষেত্রে সাময়িকভাবে কর ছাড় দেওয়া হতে পারে। অর্থাৎ, যত দিন না করোনার সংক্রমণ কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে সংস্থাগুলো, তত দিন ওই কর দিতে হবে না। একই বন্দোবস্ত করা হতে পারে বিমানের জ্বালানি করের ক্ষেত্রেও। এই পুরো পর্বে অংশ নেওয়া কিন্তু নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কেন্দ্রের পদস্থ একটি সূত্রের বক্তব্য, করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে আসা এবং কোম্পানিগুলোর ঘুরে দাঁড়ানো পর্যন্ত এই কর ছাড়ের ব্যবস্থা করা হতে পারে।

>

ব্রিটেনের ইজি জেট ও লুফথানসা বলেছে, করোনার প্রভাব দীর্ঘমেয়াদি হলে সরকারের সহযোগিতা ছাড়া টিকে থাকাই কঠিন হয়ে উঠতে পারে।

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সারা বিশ্বে মৃতের সংখ্যা ৯ হাজার অতিক্রম করেছে। আক্রান্ত ২ লাখ ২০ হাজারের বেশি মানুষ। ছড়িয়ে পড়েছে ১৬০টির বেশি দেশে। বাংলাদেশে আক্রান্ত ১৭ জন। ভারতে আক্রান্ত হয়েছেন ১৬৯ জন। পুরো এই পরিস্থিতির জেরে ভারতীয় অনেক বিমান কোম্পানি আন্তর্জাতিক উড়ান বাতিল করেছে। দেশীয় উড়ানও কমিয়ে দিতে হয়েছে তাদের।

সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনস ও ভারতের টাটা গোষ্ঠীর যৌথ কোম্পানি ভিস্তারা তাদের আন্তর্জাতিক সব উড়ান বাতিল করে দিয়েছে। একই পথে হাঁটতে বাধ্য হয়েছে গোএয়ার। দেশের সবচেয়ে বড় বিমান পরিবহন সংস্থা ইন্ডিগো বহু আন্তর্জাতিক উড়ান বন্ধ রেখেছে। দেশীয় উড়ানের সংখ্যাও কমিয়ে দিতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছে তারা। আবার যেসব বিমান চলছে, তাতেও যাত্রীসংখ্যা খুবই কম। ফলে আর্থিক সংকটে পড়েছে প্রায় কোম্পানি।

বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রতিবছরই মার্চের পর থেকে যাত্রী বাড়ে ১৬-২৩ শতাংশ। কিন্তু এবার যাঁরা আগে থেকে টিকিট কেটে রেখেছিলেন, তাঁদের সিংহভাগ বাতিল করছেন। পরিস্থিতির চাপে সামান্য টাকা কেটে বাকিটা ফেরত দিতে বাধ্য হচ্ছে কোম্পানিগুলো। ফলে লোকসান বাড়ছে।