অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে দেশগুলোর যত প্রচেষ্টা

‘আপনাদের জন্য আমি আজ প্রধানমন্ত্রী। জনগণের সেবা ও নিরাপত্তা দেওয়া আমার প্রধান কাজ। আপনারাই আমার অক্সিজেন’—এই ব্রত নিয়ে করোনাভাইরাস মোকাবিলায় জনগণের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। শুধু ট্রুডোই নন; এগিয়ে আসছেন বড় বড় অর্থনীতির বড় বড় সব মাথা। অবস্থা যে কতটা নাজুক, বোঝা যায় যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন পরিসংখ্যান দেখলে। গত রোববার মার্কিন বিনিয়োগ ব্যাংক গোল্ডম্যান স্যাকস বলছে, এপ্রিল থেকে জুন মাস পর্যন্ত মার্কিন অর্থনীতি ৫ শতাংশ সংকুচিত হবে। সংস্থাটি বলছে, জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত প্রবৃদ্ধির হার দাঁড়াবে শূন্য শতাংশ। আর পুরো বছরের প্রবৃদ্ধির হার দাঁড়াবে শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ থেকে ১ দশমিক ২ শতাংশ। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজেকে ‘যুদ্ধ সময়ের প্রেসিডেন্ট’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। বিপদের কথা জানিয়েছে চীনও। গত দুই মাসে সারা বিশ্বের ‘কারখানা’ খ্যাত দেশটির আমদানি, রপ্তানি—দুটোই কমেছে। করোনাভাইরাসের কারণে খুব শিগগির বিশ্ব অর্থনীতি মন্দার কবলে পড়তে যাচ্ছে, যা আগের সব রেকর্ড ভেঙে দেবে, জাতিসংঘও বলেছে এমন আশঙ্কার কথা। আর এমন পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিশ্বনেতাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। অবশ্য গত ফেব্রুয়ারি থেকেই এটি উপলব্ধি করেছে বিভিন্ন দেশ।

প্রথমে শুরু করেছে হংকং
অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে যে এগিয়ে আসতে হবে—এটি প্রথমে উপলব্ধি করে হংকং। করোনাভাইরাসের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হংকংয়ের অর্থনীতিতে আত্মবিশ্বাস ফেরাতে গত ফেব্রুয়ারিতে দেশটির সরকার ১ হাজার ৫৪০ কোটি ডলারের ত্রাণ প্যাকেজ ঘোষণা করে। পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয় হংকংয়ে যখন করোনাভাইরাসের কারণে সব বন্ধ করে দেওয়া হলো, তখন তা ব্যবসা-বাণিজ্যসহ সামগ্রিক অর্থনীতিতে বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। রেস্টুরেন্ট ও হোটেল ব্যবসায় ধস নামে। সেই ক্ষতি পুষিয়ে দিতে হংকং সরকারের পক্ষ থেকে প্রণোদনার ঘোষণা দেওয়া হয়। বলা হয়, ১৮ বছর এবং তার বেশি বয়সের ব্যক্তিদের প্রত্যেককে ১০ হাজার হংকং ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় এক লাখ টাকা) করে দেওয়া হবে। সেই সঙ্গে সরকারি অফিসগুলোতে কাজের পরিধি কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। আর যেসব অফিসে সম্ভব, সেসব অফিসে কর্মীদের ঘরে থেকে কাজ করতে বলা হয়েছে।

জনগণের জন্য যা করবে কানাডা
করোনা মোকাবিলায় সবচেয়ে বেশি মানবিক হয়েছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। ‘সেল্ফ আইসোলেশনে’ থাকা ট্রুডো জাতির উদ্দেশে বক্তব্য দেওয়ার পরই পাল্টে গেছে কানাডার পুরো দৃশ্যপট। নজিরবিহীন মমত্ববোধের এ বক্তব্য হৃদয় ছুঁয়েছে সারা বিশ্বের মানুষের।

সরাসরি অর্থসহায়তা ও কর স্থগিত করার মাধ্যমে ৮ হাজার ২০০ কোটি ডলারের পুনরুদ্ধার প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন ট্রুডো, যা দেশটির মোট জিডিপির ৩ শতাংশ। দেশটির নাগরিকদের সবাইকে অনুরোধ করা হয়েছে ১ মাস নিজের বাসায় থাকার। সবার ব্যাংক হিসাবে মাসিক বেতনের টাকা পৌঁছে দেবে সরকার। শুধু তা–ই নয়, ভাড়া বাসায় যাঁরা থাকেন, তাঁদের ভাড়াও সরকার বহন করবে। ওষুধ, প্রয়োজনীয় খাবার, পানির দোকান খোলা থাকলেও সরকারের পক্ষ থেকে প্রতিটি নাগরিকের বাসায় এক মাসের যাবতীয় সব ধরনের খাবার, পানি, ওষুধ, মাস্ক পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া কারও কোনো কিছুর প্রয়োজন হলে যোগাযোগ করলেই সরকারি তরফ থেকে তা পৌঁছে দেওয়া হবে। শুধু তা–ই নয়, সারা বিশ্বে ছড়িয়ে থাকা কানাডার নাগরিকদের জন্যও কাজ করবে সরকার। এক ভাষণে ট্রুডো বলেন, ‘বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বসবাসরত কিংবা ভ্রমণরত কানাডীয়দের নিয়ে তোমরা উদ্বিগ্ন। আমি তোমাদের কথা দিতে চাই, দেশের বাইরে থাকা একজন কানাডীয়ও আমাদের সহযোগিতার বাইরে থাকবে না। তাদের ফ্লাইট পেতে, ঘরে ফিরে আসার খরচের জন্য যদি সহায়তা দিতে হয়, সেটি আমি করব। ইতিমধ্যে সে জন্য বিশেষ সহায়তা প্রকল্পও হাতে নেওয়া হয়েছে।’

ঘরে ঘরে চেক তুলে দেবে ট্রাম্প সরকার
যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ৫০টি অঙ্গরাজ্যে ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস। মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ২০০। করোনা মোকাবিলায় ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে এক লাখ কোটি ডলারের প্রণোদনা তহবিল ঘোষণা করা হয়েছে। যার মধ্যে ২৫ হাজার কোটি ডলার নাগরিকদের সরাসরি অর্থ প্রদানের জন্য ব্যবহৃত হওয়ার কথা রয়েছে। এ বিষয়ে কংগ্রেসের সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছে হোয়াইট হাউস। কী পরিমাণ অর্থের চেক একজন পাবেন, কারা অগ্রাধিকার পাবেন—এসব বিষয়েও আলোচনা চলছে। মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্টিভেন মানচিন বলেছেন, করোনভাইরাসজনিত অর্থনৈতিক সংকট রোধে এই প্রণোদনা তহবিল থেকে নাগরিকদের সরাসরি অর্থ দেওয়ার বিষয়ে সমর্থন রয়েছে তাঁর। মানচিন আশা করছেন, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে এই চেক প্রদান শুরু করা সম্ভব হবে। সেই সঙ্গে গত সপ্তাহে করোনাভাইরাসের প্রভাব থেকে অর্থনীতিকে বাঁচাতে নীতিনির্ধারণী সুদের হার প্রায় শূন্যে নামিয়ে এনেছে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ। ১৯ মার্চ ব্যাংক অব আমেরিকা জানায়, গ্রাহকেরা মর্টগেজ, ছোট ব্যবসা ও গাড়িশিল্পের জন্য নেওয়া ঋণের কিস্তি পরে পরিশোধ করতে পারবে।

যাত্রী নেই। যুক্তরাষ্ট্রের ডালাস বিমানবন্দরের বাইরে অলস বসে আছে শত শত ট্যাক্সিক্যাব। ছবি: রয়টার্স
যাত্রী নেই। যুক্তরাষ্ট্রের ডালাস বিমানবন্দরের বাইরে অলস বসে আছে শত শত ট্যাক্সিক্যাব। ছবি: রয়টার্স

ব্যবসা-বাণিজ্য বাঁচাতে মরিয়া যুক্তরাজ্য
নবনিযুক্ত ব্রিটিশ অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনাক করোনাভাইরাসের মহামারি মোকাবিলায় ১ হাজার ৪৫০ কোটি ডলারের জরুরি পুনরুদ্ধার প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন। এ ছাড়া যুক্তরাজ্যের অর্থনীতিকে বাঁচাতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের জন্য ৩৩ হাজার কোটি ডলারের প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে। এই অর্থ দিয়ে ছোট ছোট ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানসহ বিমান সংস্থাগুলোকে সহায়তা করা হবে। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে ছোট ছোট অসংখ্য দোকান, স্টোর বন্ধ রয়েছে দেশটিতে। ব্যবসায়ীরা মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। এসব মানুষকে সাহায্য করতেই এগিয়ে এসেছে দেশটির সরকার। এ ছাড়া এর আগে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন করোনা গবেষণায় প্রায় ছয় কোটি ডলারের প্যাকেজ ঘোষণা করেন।

জাপান, ফ্রান্স, পর্তুগাল, স্পেন, জার্মানি, ইতালি, অস্ট্রেলিয়া, ভারত যা করছে

করোনার কারণে রপ্তানি ও আমদানি কমে যাওয়ায় জাপানের অর্থনীতি চাপে পড়েছে। সেই সঙ্গে করোনা মোকাবিলা করতেও হিমশিম খাচ্ছে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির এ দেশ। সম্প্রতি জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে জানিয়েছেন, মন্ত্রী এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরকে নিয়ে একটি প্যানেল গঠন করা হবে। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব থেকে অর্থনীতিকে রক্ষায় একটি প্যাকেজ ঘোষণা করবেন তিনি।

করোনাভাইরাসের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতিতে কোটি কোটি ডলার সরবরাহ করে বিপর্যয় এড়াতে চাইছে ফ্রান্স। সম্প্রতি ফরাসি অর্থমন্ত্রী ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও ক্ষতিগ্রস্ত খাতের জন্য পাঁচ হাজার কোটি ডলার সহায়তা প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন। ‘লকডাউন’ পদক্ষেপে ৩৫ লাখের বেশি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে প্রভাব ফেলবে, এতে দেশের অনেক অর্থনৈতিক কার্যক্রম স্থগিত হয়ে যাবে—এমন আশঙ্কাতেই এগিয়ে আসছে সরকার। 

গত ১৮ মার্চ থেকে ১৫ দিনের জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে পর্তুগাল। তবে সেই সঙ্গে ১ হাজার কোটি ডলারের সহায়তা প্যাকেজও উন্মোচন করেছে সরকার, যা দেশটির জিডিপির ৪ শতাংশের বেশি। এটি পর্যটন, টেক্সটাইলসহ ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাকে সহায়তায় ব্যয় করা হবে। শুল্কহার নমনীয় করাসহ সামাজিক সুরক্ষা প্রদানে সক্ষমতা বাড়াতে আর্থিক সংস্থাগুলোর জন্য প্রায় ৫০০ কোটি ডলার আলাদা করা হয়েছে।

করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিক ও দুর্বল সংস্থাগুলোর সুরক্ষার জন্য ২১ হাজার ৯০০ কোটি ডলার পুনরুদ্ধার প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন স্পেনের প্রধানমন্ত্রী। জার্মান সরকার সব ধরনের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের জন্য ১১০ কোটি ডলারের তহবিল গঠন করেছে।

করোনাভাইরাসে চীনের পরে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ইতালি। দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৩ হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছেন। প্রতিদিনই বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। ১৬ মার্চ ইতালি সরকার ২ হাজার ৮০০ কোটি ডলারের পুনরুদ্ধার প্যাকেজ ঘোষণা করে। যার মধ্যে কর্মসংস্থানের জন্য ব্যয় হবে একটি বড় অংশ। কিছু অংশ ব্যয় হবে স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার জন্য।

অস্ট্রেলিয়া করোনাভাইরাসের মহামারি মোকাবিলায় ১১০ কোটি ডলারের একটি আর্থিক পুনরুদ্ধার প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। প্যাকেজটির প্রায় অর্ধেক নিম্ন-আয়ের অস্ট্রেলিয়ানদের জন্য ব্যয় করা হবে। তুরস্ক তাদের পুনরুদ্ধার প্যাকেজের আকার নির্ধারণ করেছে ১ হাজার ৫৪০ কোটি ডলারের। করোনার প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতির পুনরুদ্ধারে এগিয়ে এসেছেন ভারতের মোদি সরকারও। যদিও এখনো কোনো কার্যকর ঘোষণা আসেনি। তবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত খাতগুলোকে রক্ষায় আর্থিক প্যাকেজ তৈরির কাজ করতে গঠন করা হয়েছে বিশেষ ‘কোভিড-১৯ অর্থনৈতিক টাস্কফোর্স’। দেশটির কেরালা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন রাজ্যের সব মানুষকে এক মাস বিনা মূল্যে খাদ্যের জোগান দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। এ জন্য কে কত আয় করে, সেই হিসাবনিকাশ করবে না রাজ্য সরকার। পিনারাই বিজয়নের ঘোষণায় এটা স্পষ্ট, প্রয়োজনে সব স্তব্ধ হলেও সাধারণ মানুষ সংকটে পড়বে না।

ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পদক্ষেপ
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় ৮২ হাজার কোটি ডলারের জরুরি প্যাকেজ ঘোষণা করেছে ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক (ইসিবি)। এর মাধ্যমে বিপর্যস্ত গ্রিস, ইতালিসহ পুরো ইউরোজোনে সরকারি ও সংস্থার যে দেনা রয়েছে, তা পরিশোধ করা হবে। এক টুইটে ইসিবিপ্রধান ক্রিস্টিনা লাগার্দে বলেন, ইউরোর কাছে তাঁর প্রতিশ্রুতির ‘সীমাবদ্ধতা নেই’।

এডিবি ও আইএমএফের বিশেষ তহবিল
প্রাথমিকভাবে ৬৫০ কোটি ডলারের বিশেষ প্যাকেজ ঘোষণা করেছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এই সংকট মোকাবিলায় ৫০ বিলিয়ন ডলারের তহবিল গঠনের ঘোষণা দিয়েছে। জি-২০-এর নেতারা তাঁদের নাগরিকদের এবং অর্থনীতির সুরক্ষায় নানা পদক্ষেপ নিয়েছেন। তাঁরা সাধারণ জনগণের ঋণের সুদের হার কমিয়ে দিয়েছেন।

বিশ্বব্যাংকের ১২০০ কোটি ডলারের তহবিল
বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য ১ হাজার ২০০ কোটি ডলারের সহায়তা তহবিল গঠনের ঘোষণা দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। জরুরি এই অর্থ সহায়তার মধ্যে স্বল্প সুদে ঋণ, অনুদান এবং প্রযুক্তিগত সহায়তা রয়েছে। গত নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া করোনার হানায় বিশ্ব আরেকটি মন্দার মুখোমুখি হতে পারে—এমন আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিশ্বব্যাংকের সহায়তার মূল উদ্দেশ্য হলো, উন্নয়নশীল দেশগুলো যাতে এই সংকট মোকাবিলা করতে পারে এবং করোনার প্রভাব মোকাবিলা করে বেসরকারি খাতের উন্নয়ন করতে পারে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের যত পদক্ষেপ
করোনাভাইরাসের প্রভাব থেকে অর্থনীতিকে সুরক্ষিত রাখতে নানা পদক্ষেপ নিচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংকও। সম্প্রতি গ্রাহকদের জন্য নানা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর ফলে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি এবং ওষুধ ক্রয়ের ক্ষেত্রে ডেবিট-ক্রেডিট কার্ড ও বিকাশ-রকেটের মতো সেবায় কোনো মাশুল দিতে হবে না। পাশাপাশি জরুরি কেনাকাটায় লেনদেনের সীমাও বাড়িয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। পাশাপাশি বিশেষ পরিস্থিতিতে জরুরি সেবা চালুর জন্য পরিকল্পনা প্রণয়নের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী, ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি এবং ওষুধ ক্রয়ের ক্ষেত্রে কোনো মাশুল কাটা যাবে না। এভাবে দৈনিক সর্বোচ্চ ১৫ হাজার এবং প্রতি মাসে ১ লাখ টাকার জরুরি পণ্য কেনা যাবে। এর বেশি কেনাকাটায় মাশুল দিতে হবে।

এ ছাড়া ঋণগ্রহীতাদের জন্যও বিশেষ সুবিধার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশ অনুযায়ী, আগামী জুন পর্যন্ত কোনো ঋণগ্রহীতা ঋণ শোধ না করলেও ঋণের শ্রেণিমানে কোনো পরিবর্তন আনা যাবে না। এর ফলে বর্তমানে কোনো ঋণগ্রহীতা যদি ৩০ জুন পর্যন্ত কিস্তি পরিশোধে ব্যর্থ হন, তাহলে তাঁকে খেলাপি করা যাবে না। তবে যদি কোনো খেলাপি ঋণগ্রহীতা এই সময়ের মধ্যে ঋণ শোধ করেন, তাঁকে নিয়মিত ঋণগ্রহীতা হিসেবে চিহ্নিত করা যাবে।