যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ১ কোটি মানুষ চাকরি হারাতে পারে

করোনা মহামারির কারণে যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ১ কোটি মানুষ চাকরি হারাবে। ছবি: রয়টার্স
করোনা মহামারির কারণে যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ১ কোটি মানুষ চাকরি হারাবে। ছবি: রয়টার্স

করোনা মহামারির কারণে যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ১ কোটি মানুষ চাকরি হারাবে। সম্প্রতি দেশটির এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে। অর্থনীতিবিদেরা আশঙ্কা করছেন, যুক্তরাষ্ট্র সরকার এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভের অভূতপূর্ব হস্তক্ষেপের পরও কয়েক মাসের মধ্যে লাখো কর্মসংস্থান স্থায়ীভাবে মুছে যাবে। আল–জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

গত বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, আগের সপ্তাহের ২ লাখ ৮১ হাজার ব্যক্তি চাকরি ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছেন, যা এর আগের প্রতিবেদনের তুলনায় ৩৩ শতাংশ বেশি। অনেক বিশ্লেষক মনে করছেন, সংখ্যা কিছুটা বাড়িয়ে বলা হচ্ছে।

মার্কিন বিনিয়োগ ব্যাংক গোল্ডম্যান স্যাকস আশঙ্কা করছে, আগামী সপ্তাহে প্রকাশিত পরিসংখ্যানে দেখা যাবে চাকরি হারানোর সংখ্যা ২২ লাখ ৫০ হাজারে পৌঁছেছে। অন্যদিকে ব্যাংক অব আমেরিকা বলছে, এই সংখ্যা ৩০ লাখ পর্যন্ত হতে পারে। এ ছাড়া রক্ষণশীলদের অনুমান, অনন্ত ১০ লাখ মানুষ কর্মসংস্থান হারাবে।

গোল্ডম্যান স্যাকস বলছে, মার্কিন অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এপ্রিল থেকে জুনের মধ্যে ২৪ শতাংশ কমবে। আগামী মাসে বেকারত্বের হার ৯ শতাংশে গিয়ে পৌঁছাবে।

সময় গড়াতে গড়াতে এসব পরিসংখ্যানে পরিবর্তনও আসতে পারে। বিশেষজ্ঞরা শ্রমিকদের ওপর প্রভাবের এই মাত্রা সম্পর্কে একমত না হলেও আঘাত দ্রুত এবং তীব্র হতে পারে—এমন আশঙ্কা করছেন তাঁরা।

এ মুহূর্তে অর্থনীতিবিদেরা বিশ্বাস করেন, করোনার আঘাত অর্থনীতির বিভিন্ন ক্ষেত্রের জন্য হয়তো অস্থায়ী হবে। করোনাভাইরাসের সংকট কেটে গেলে অনেকে আবার চাকরিতে ফিরতে পারবে। তবে হারানো মজুরি, কম বিনিয়োগ এবং অনিরাপদ ভবিষ্যৎ ২০২০ সালের পরও অব্যাহত থাকতে পারে।

এর আগে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার একটি গবেষণায় বলা হয়, করোনাভাইরাসের কারণে আড়াই কোটি মানুষ চাকরি হারাবে। করোনাভাইরাস শুধু জীবন ও স্বাস্থ্যেই প্রভাব ফেলছে না, এই ভাইরাস সংক্রমণের প্রভাব পড়েছে অর্থনীতিতেও। যার ফলে ব্যবসা-বাণিজ্য নিম্নমুখী ও কর্মীরা বেশ বাজেভাবে আতঙ্কে ভুগছে। সংস্থাটি বলছে, এর আগে ২০০৮-০৯ সালে বিশ্বজুড়ে যে অর্থনৈতিক মন্দা হয়, আন্তর্জাতিকভাবে ওই সময় যে তৎপর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল, ওই রকম পদক্ষেপ এবারও নেওয়া হলে বেকারত্বের এই সংখ্যা তাৎপর্যপূর্ণভাবে কমে যেতে পারে। কর্মক্ষেত্রে শ্রমিকদের রক্ষা, অর্থনীতিকে চাঙা করা এবং অর্থ উপার্জনের পথকে ধরে রাখতে জরুরিভিত্তিক বৃহৎ ও পারস্পরিক সহযোগিতামূলক পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।