দিনে দোকানে ক্ষতি ১,০৭৪ কোটি টাকা, বলছে সমিতি

বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি জানিয়েছে, সাধারণ ছুটিতে কেনাবেচা বন্ধ থাকায় তাদের দোকানগুলোর দিনে ক্ষতি হচ্ছে ১ হাজার ৭৪ কোটি টাকা। তারা এ হিসাব করেছে একেকটি দোকানে গড়ে ২০ হাজার টাকা বিক্রি ধরে। আর লভ্যাংশ ধরা হয়েছে ১০ শতাংশ।

এ হিসাব দিয়ে দোকান মালিক সমিতি কর্মচারীদের বেতন দিতে আড়াই হাজার কোটি টাকার একটি তহবিল গঠনের দাবি জানিয়েছে। তারা বলছে, রপ্তানি খাতে মজুরি ও বেতন দিতে যে তহবিল গঠন করা হয়েছে, তারাও আংশিক সহায়তা হিসেবে একই ধরনের তহবিল চায়।

দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, সরকার কখনো ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের এ ধরনের সহায়তা দেয়নি। তাঁরাও আবেদন জানাননি। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে ২০১৩ সালে মতিঝিলে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশের সময় আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত বায়তুল মোকাররমের ৩৩৩ জন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীকে ৫০ হাজার টাকা করে সহায়তা দিয়েছিলেন।
হেলাল উদ্দিন আরও বলেন, এবারের করোনা দুর্যোগে শুধু বেতন দিতে ব্যবসায়ীরা ঋণ সহায়তা চাচ্ছেন। এটা শুধু ছোটদের জন্য প্রযোজ্য হবে, যাঁদের কর্মচারী ১৫ জনের কম।

দোকান মালিক সমিতি বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য তুলে ধরে তাদের দেওয়া হিসাবে বলেছে, ১৫ জনের কম কর্মচারী থাকা পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৫৩ লাখ ৭২ হাজার ৭১৬, যা মোট প্রতিষ্ঠানের ৩৯ ভাগ। এসব প্রতিষ্ঠানে ৯৭ লাখ ১৩ হাজার ৯২৯ জন কর্মী কাজ করেন। তাঁদের মোট মাসিক বেতন ১৪ হাজার ৫৭০ কোটি টাকা।

দোকান মালিক সমিতি বলছে, একজন কর্মচারীর গড় বেতন ১৫ হাজার টাকা ধরে তারা আংশিক বেতন ৭ হাজার টাকা হিসাবে আড়াই হাজার কোটি টাকার তহবিল চায়। এ তহবিল থেকে তারা বিনা সুদে ঋণ চেয়েছে। এক বছরের জন্য তারা এই ঋণ দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে, যা ছয় মাস পর থেকে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা পরিশোধ শুরু করবেন।

সমিতির পক্ষ থেকে ঋণের কিস্তি পরিশোধে ছয় মাস সময় দেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়। পাশাপাশি চক্রবৃদ্ধি সুদ আদায় বন্ধ রেখে সরল সুদের দাবি করেছে।
দোকান মালিক সমিতির বিবৃতিতে বলা হয়, ক্ষুদ্র ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা প্রতিদিন নগদ টাকায় লেনদেন করেন। দোকান বন্ধ থাকায় তাঁরা নগদ টাকা পাচ্ছেন না। বেতনও দিতে পারছেন না।
বিবৃতিতে বিভিন্ন জেলার ২৬ জন নেতার নাম রয়েছে।

উল্লেখ্য, করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণার আগে ২৫ মার্চ থেকে দোকানপাট বন্ধের ঘোষণা দেয় দোকান মালিক সমিতি। পরে তা বাড়িয়ে সরকারের ঘোষিত সাধারণ ছুটির সঙ্গে মেলানো হয়। এদিকে সরকারও সাধারণ ছুটি বাড়িয়ে আগামী ৯ এপ্রিল পর্যন্ত নির্ধারণ করেছে, যা প্রথম ঘোষণায় ৪ এপ্রিল পর্যন্ত ছিল।