বিশ্ববাজারে তেলের দাম প্রতি ব্যারেল ২৬ ডলার

এশিয়ার বাজারে আজ অপরিশোধিত তেলের দাম ৬ শতাংশ বেড়েছে। অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অপরিশোধিত তেলের দাম বেড়েছে ৫ শতাংশ। ছবি: রয়টার্স
এশিয়ার বাজারে আজ অপরিশোধিত তেলের দাম ৬ শতাংশ বেড়েছে। অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অপরিশোধিত তেলের দাম বেড়েছে ৫ শতাংশ। ছবি: রয়টার্স

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আশা করছেন, তেলের দাম নিয়ে চলা ‘মূল্যযুদ্ধের’ ইতি টানতে খুব শিগগির চুক্তিতে যাবে সৌদি আরব ও রাশিয়া। মার্কিন প্রেসিডেন্টের এমন আশাবাদের পর আজ বৃহস্পতিবার বিশ্ববাজারে বেড়েছে জ্বালানি তেলের দাম।

এশিয়ার বাজারে আজ অপরিশোধিত তেলের দাম ৬ শতাংশ বেড়েছে। ব্যারেল প্রতি ২৬ ডলার হয়েছে। অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অপরিশোধিত তেলের দাম বেড়েছে ৫ শতাংশ।

বিনিয়োগকারীরা আশা করছেন, দাম আরও বাড়বে। তাঁরা আশা করছেন, যুক্তরাষ্ট্রের শেল অয়েল বা পাথরের খাঁজে সঞ্চিত তেল উৎপাদনকারীরা উৎপাদন কমাতে বাধ্য হবে। কারণ, এই তেল উৎপাদনে অপেক্ষাকৃত ব্যয় বেশি হয়।

সিএমসি মার্কেটের বাজার বিশ্লেষক মাইকেল ম্যাকার্থি বলেন, উচ্চ ঋণের কারণে ওই উৎপাদনকারীরা উৎপাদন কমাতে বাধ্য হবেন।

গতকাল বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ডাকোটার অন্যতম বড় শেল অয়েল উৎপাদনকারী কোম্পানি হোয়াইটিং পেট্রোলিয়াম দেউলিয়া হয়ে যাওয়ার কথা জানায়।

এর আগে গত শুক্রবার বড় জ্বালানি কোম্পানিগুলোর প্রধানদের সঙ্গে হোয়াইট হাউসে বৈঠক করেন ট্রাম্প। এসব কোম্পানির মধ্যে ছিল এক্স মোবিল, শেভরনের মতো কোম্পানি। তারা সৌদ আরব থেকে তেল আমদানি সম্ভাব্য শুল্ক আরোপ করার মতো অনেক বিকল্প নিয়ে আলোচনা করে।

আর এ সবকিছু মিলিয়ে এশিয়ার বাজারে কিছুটা বেড়েছে তেলের দাম।

বিশ্বজুড়ে নভেল করোনাভাইরাস মহামারির প্রভাবে ব্যাপক চাহিদা কমেছে জ্বালানি তেলের। দেশে দেশে বন্ধ হয়েছে বিমান চলাচল। লকডাউনের কারণে ঘর থেকে বের হতে পারছে না মানুষ। সব মিলিয়ে কমেছে চাহিদা। ফলে দামের ওপর মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করে। গত সোমবার তেলের দাম কমে ১৮ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন অবস্থানে নেমে আসে। বিবিসি অনলাইনের এক প্রতিবেদনে বলা হয় ওই দিন অপরিশোধিত তেলের দাম ৮ শতাংশ কমে হয় ব্যারেলপ্রতি ২২ দশমিক ৫৮ ডলার। ২০০২ সালের নভেম্বরের পর যা সর্বনিম্ন। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অপরিশোধিত তেলের দাম নেমে আসে ২০ ডলারের নিচে।

চলতি বছরের শুরু থেকেই তেলের বাজারের এই মন্দা ভাবিয়ে তোলে তেল উৎপাদনকারী দেশগুলোকে। জ্বালানি তেলের বর্তমান বাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনা ও করণীয় নির্ধারণে ৫ মার্চ থেকে অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় বৈঠকে বসে ওপেক ও নন-ওপেক দেশগুলো। এতে সিদ্ধান্ত হয়, তেলের দাম বাড়াতে অপরিশোধিত তেলের উৎপাদন দিনে ১৫ লাখ ব্যারেল কমাবে তারা, যা বিশ্বের মোট সরবরাহের প্রায় ৩ দশমিক ৬ শতাংশ। ওপেক আশা করছিল, রাশিয়া প্রতিদিন ৫ লাখ ব্যারেল উৎপাদন কমাতে সম্মত হবে। তবে এতে সম্মতি জানায়নি ওপেকের মিত্র জোট ওপেক প্লাসের নেতৃত্বে থাকা রাশিয়া। এ কারণে নতুন চুক্তি হওয়ার বিষয়টি ভেস্তে যায়। করোনাভাইরাসের পাশাপাশি এর প্রভাবেও ব্যাপক দরপতন হয় তেলের দামের। এর মধ্যে তেলের দাম কমায় সৌদি আরামকো। শুরু হয়ে যায় রাশিয়া ও সৌদি আরবের মধ্যে ‘মূল্যযুদ্ধ’।