করোনায় বিপর্যস্ত অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে আট পরামর্শ

সানেমের নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান। ছবি: সংগৃহীত
সানেমের নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান। ছবি: সংগৃহীত

মহামারি করোনাভারইরাস দিনকে দিন ভয়াবহ রূপ ধারণ করছে। সারা বিশ্বে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ মরছে। অর্থনীতি বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। মন্দা শুরু হওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। করোনা-পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের অর্থনীতি কীভাবে বিপর্যয় কাটাতে পারে, সে বিষয়ে আলোচনাও শুরু হয়েছে।

গবেষণা প্রতিষ্ঠান সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান করোনার বিপর্যয় কাটিয়ে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার পরিবর্তে দুই বছর মেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণের পাশাপাশি আট দফা পরামর্শ দিয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার সানেমের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়েছে।

সানেমের নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হানের আট দফা সুপারিশ:

প্রথম দফা: দুই বছর মেয়াদি পুনরুদ্ধার পরিকল্পনার মূল উদ্দেশ্য হবে, বাংলাদেশের অর্থনীতিকে গত বছরের ডিসেম্বরের অবস্থানে ফিরিয়ে আনা।

দ্বিতীয় দফা: অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার বাস্তবায়নের প্রারম্ভিক সময় দুই বছর পিছিয়ে ২০২২ সালে নিয়ে যেতে হবে। অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা নতুনভাবে প্রণয়ন করতে হবে, কারণ পরিকল্পনার একটি বড় অংশ করোনার কারণে সৃষ্ট বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রাসঙ্গিকতা হারিয়েছে।

তৃতীয় দফা: তৈরি পোশাক খাতসহ অন্যান্য রপ্তানিমুখী শিল্প ও অভ্যন্তরীণ বাজারনির্ভর খাত এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি (এসএমই) খাতে সহায়তা প্রদানের জন্য রাজস্ব উদ্দীপক (ফিসক্যাল স্টিমুলাস) প্যাকেজ ও মুদ্রাবিষয়ক নীতি প্রণয়ন করতে হবে।

চতুর্থ দফা: দরিদ্র, অতিদরিদ্র, প্রান্তিক জনগোষ্ঠী ও বর্তমান পরিস্থিতে আকস্মিকভাবে অসহায় হয়ে পড়া মানুষদের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতা ও পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করতে হবে।

পঞ্চম দফা: বাণিজ্য, কর কাঠামো ও ব্যাংক খাতে ‘রাজনৈতিকভাবে বাস্তবায়নযোগ্য’ কিছু নীতি সংশোধন (পলিসি রিফর্ম) করতে হবে।

ষষ্ঠ দফা: রাজস্ব উদ্দীপনা (সরকারি ব্যয় বৃদ্ধি ও কর কমানো) বাস্তবায়ন এবং মুদ্রাবিষয়ক নীতিকে সহজ করার জন্য অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক উৎস থেকে অর্থ সংগ্রহের উপায় খুঁজে বের করা প্রয়োজন।

সপ্তম দফা: কমপক্ষে তিন বছরের জন্য স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি ) তালিকা থেকে উত্তরণের সময়কাল বিলম্বিত করতে হবে।

অষ্টম দফা: টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের সময়কাল ২০৩০ সাল থেকে বৃদ্ধি করে ২০৩৫ সাল পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ার জন্য আন্তর্জাতিক মহলে জোর প্রচেষ্টা চালাতে হবে।