ব্যাংক-কর্মীদের যাতায়াত নির্বিঘ্ন করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ

করোনাভাইরাসের কারণে সরকারি ছুটির মধ্যেও সীমিত আকারে ব্যাংকিং চালু আছে। এ জন্য কর্মরত ব্যাংক কর্মকর্তাদের নির্বিঘ্নে কর্মস্থলে যাতায়াতের উদ্যোগ নিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির।

কয়েক দিন ধরে কর্মস্থলে যেতে ব্যাংক কর্মকর্তাদের হেনস্তার খবর ছড়িয়ে পড়ে। এর পরিপ্রেক্ষিতে আজ শনিবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকসহ তফসিলি ব্যাংকের কর্মকর্তাদের নির্বিঘ্নে যাতায়াতের উদ্যোগ নিয়েছেন গভর্নর।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দীনের কাছে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধকল্পে সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটির মধ্যেও সরকারের নির্দেশনা ও জনগণের আর্থিক চাহিদা মেটানো, বেতন-ভাতা পরিশোধ, অভ্যন্তরীণ ও অত্যাবশ্যকীয় বৈদেশিক ব্যবসা-বাণিজ্য চালু রাখার উদ্দেশ্যে লেনদেন সুবিধা প্রদান, দেশব্যাপী জ্বালানি তেল ও সুলভ মূল্যে খাদ্য বিতরণসংক্রান্ত সরকারি কার্যক্রম অব্যাহত রাখার উদ্দেশ্যে ব্যাংকিং লেনদেন বজায় রাখার ব্যবস্থা করেছে। অর্থনীতির চাকাকে সচল রাখার প্রয়াসে সীমিত আকারে ব্যাংকিং ব্যবস্থা চালু রাখা হয়েছে। পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত ৫ থেকে ৯ এপ্রিল পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত দেশের সব ব্যাংকের সীমিত পরিসরে কিছু শাখা খোলা থাকবে। যথাযথ কর্মপরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে এসব ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কর্মস্থলে যাতায়াত ব্যবস্থা সুগম রাখা আবশ্যক।

চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধকল্পে সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটির দিনগুলোতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ নিজ প্রতিষ্ঠানের পরিচয়পত্র প্রদান সাপেক্ষে কর্মস্থল ও বাসস্থানে যাতায়াতের ক্ষেত্রে তাঁরা এবং তাঁদের বহনকারী বাহন যাতে কোনো প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হতে না হয়, সে লক্ষ্যে দায়িত্বরত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসমূহকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন গভর্নর ফজলে কবির।

জানা যায়, ব্যাংকগুলোর নির্দিষ্ট কিছু শাখায় সকাল ১০টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত নগদ জমা ও উত্তোলন করা যাচ্ছে। লেনদেন-পরবর্তী আনুষঙ্গিক কার্যক্রম শেষ করার জন্য ব্যাংক খোলা রাখা যাবে বেলা তিনটা পর্যন্ত। ৯ এপ্রিল পর্যন্ত এভাবেই চলবে নির্দিষ্ট কিছু শাখার ব্যাংক সেবা। পাশাপাশি ওই সময় পর্যন্ত চেক ক্লিয়ারিং, কল মানি, রপ্তানি উন্নয়ন তহবিলসহ আরও কিছু সেবা চালু রাখবে বাংলাদেশ ব্যাংক।

ব্যাংকগুলো জানায়, সরকারি ছুটির সময় রাজধানীর শাখাগুলোতে ভিড় না থাকলেও জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ভালো গ্রাহক আসছেন। এর ফলে অনেক সময় সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা যাচ্ছে না। এমন অনেক ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেখা যাচ্ছে।

এদিকে গত বৃহস্পতিবার অনেক কর্মকর্তা সড়কে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কর্তৃক হয়রানির শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠে। হয়রানি রোধে তাঁরা কেন্দ্রীয় ব্যাংককে উদ্যোগ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেন গভর্নর।