বাজারে নগদ টাকা বাড়াতে উদ্যোগ

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে অর্থনীতির সংকট মোকাবিলায় আবারও নীতি সুদহার ও ব্যাংকগুলোর জমার হার কমাল বাংলাদেশ ব্যাংক। এর ফলে ব্যাংকগুলোর কাছে নগদ টাকার পরিমাণ বাড়বে, কম সুদে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে টাকাও ধার করতে পারবে। এর আগে গত ২৩ মার্চ একদফায় নীতি সুদহার ও ব্যাংকগুলোর জমার হার কমানো হয়েছিল।

করোনার কারণে যে অর্থনৈতিক সংকটের আশঙ্কা করা হচ্ছে, তা মোকাবিলায় বাজারে তারল্য জোগান বাড়াতে হবে। এ জন্যই ১৫ দিনের মধ্যে দুই দফায় নীতি সুদহার ও জমার হার কমিয়ে আনতে হলো কেন্দ্রীয় ব্যাংককে।

আজ এক বিজ্ঞপ্তিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানায়, করোনার কারণে অর্থনীতির ওপর যে বিরূপ প্রভাব পড়েছে, তা মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক ঘোষিত আর্থিক প্রণোদনা বাস্তবায়নে মুদ্রাবাজারে প্রয়োজনীয় তারল্য জোগান নিশ্চিত করতে হবে। এ জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের মুদ্রানীতি কমিটির এক জরুরি সভায় ব্যাংকগুলোর নগদ জমা (সিআরআর) দুই সপ্তাহ ভিত্তিতে ৫ শতাংশ থেকে ৪ শতাংশ ও দৈনিক ভিত্তিতে সাড়ে ৪ শতাংশ থেকে ৩ দশমিক ৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হলো, যা ১৫ এপ্রিল থেকে কার্যকর হবে।

ব্যাংকগুলোকে আমানতের নির্দিষ্ট অংশ সিআরআর হিসাবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে নগদ জমা রাখতে হয়। নতুন সিদ্ধান্তের ফলে ব্যাংকগুলোর হাতে নগদ টাকার পরিমাণ বাড়বে। গ্রাহকদের টাকার চাহিদা মেটাতে সুবিধা হবে।

পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংকের রেপো সুদহার বার্ষিক ৫ দশমিক ৭৫ শতাংশ থেকে ৫০ বেসিস পয়েন্ট কমিয়ে ৫ দশমিক ২৫ নির্ধারণ করা হয়, যা ১২ এপ্রিল থেকে কার্যকর হবে। রেপোর মাধ্যমে ব্যাংকগুলো কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে স্বল্প সময়ের জন্য টাকা ধার করে থাকে। এর ফলে কিছুটা কম সুদে টাকা ধার করতে পারবে।

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে দেশের সম্ভাব্য অর্থনৈতিক প্রভাব উত্তরণে ৫ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৬৭ হাজার ৭৫০ কোটি টাকার প্যাকেজ ঘোষণা করেন। এর আগে তৈরি পোশাক খাতের জন্য ৫ হাজার কোটি টাকার প্যাকেজ ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। ফলে পাঁচটি প্যাকেজে আর্থিক সহায়তার পরিমাণ ৭২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকা, যা জিডিপির প্রায় ২ দশমিক ৫২ শতাংশ। এর বড় অংশই যাবে ব্যাংকগুলো থেকে। এ জন্য কম সুদে ব্যাংকগুলোকে টাকা ধার দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক, কমিয়ে আনছে জমার পরিমাণও।

এর আগে গত ২৩ মার্চ কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানায়, ১ এপ্রিল থেকে ব্যাংকগুলোর নগদ জমা (সিআরআর) দুই সপ্তাহ ভিত্তিতে সাড়ে ৫ শতাংশ থেকে ৫ শতাংশ হবে। আর দৈনিক ভিত্তিতে ৫ শতাংশ থেকে ন্যূনতম সাড়ে ৪ শতাংশ হবে। পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংকের রেপো সুদ হার বার্ষিক ৬ শতাংশ থেকে ২৫ বেসিস পয়েন্ট হ্রাস করে ৫ দশমিক ৭৫ শতাংশ পুনর্নির্ধারণ করা হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বাজারে কম সুদে টাকা দিতে আরও নানা উদ্যোগ নেবে বাংলাদেশ ব্যাংক। কমানো হবে বাংলাদেশ ব্যাংকের সুদহার বা ব্যাংক রেটও। কম সুদের পুনঃ অর্থায়ন তহবিলও গঠন করা হবে।