করোনা বদলে দিল এনবিআরের বাজেট কার্যক্রম

প্রতিবছর এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি বাজেট নিয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ব্যস্ততার সীমা থাকে না। প্রতিদিন সকাল-বিকাল দুই বেলা ৭-৮ টি ব্যবসায়ী সংগঠনের সঙ্গে প্রাক–বাজেট আলোচনা করতেন এনবিআরের কর্মকর্তারা। এ প্রাক–বাজেট আলোচনার বাইরেও কোন খাতে করের কী পরিবর্তন করা যেতে পারে, তা নিয়েও নিজেদের আলাপ আলোচনা চলত। কিন্তু এবার আর সেই চিত্র নেই। করোনা বদলে দিয়েছে এনবিআরের সেই ব্যস্ততা।

দেশজুড়ে লকডাউনের কারণে এবার ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর সঙ্গে প্রাক–বাজেট আলোচনা না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এনবিআর। এর বদলে প্রতিবারের মতো এবারও ই–মেইলে বাজেট প্রস্তাব নেওয়া হচ্ছে। 

কয়েক দফা সময় বৃদ্ধির পর আজ রোববার ই–মেইলে বাজেট প্রস্তাব জমার সময় শেষ হচ্ছে। কিন্তু এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, এখনো ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইসহ বড় সংগঠনগুলোই বাজেট প্রস্তাব জমা দেয়নি। পরিস্থিতি বিবেচনায় এনবিআর বলছে, সময় পেরিয়ে গেলেও ই–মেইলে বাজেট প্রস্তাব পাঠানো হলে তা বিবেচনা করা হবে।

এনবিআরের প্রধান বাজেট সমন্বয়কারী আবু নূর রাশেদ আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, করোনার কারণে এবার প্রাক–বাজেট আলোচনা হচ্ছে না। তবে ই–মেইলে ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর বাজেট সুপারিশ পাওয়ার পর তাৎক্ষণিকভাবেই তা শুল্ক, ভ্যাট ও আয়কর বিভাগের নীতি অনুবিভাগে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এভাবেই বাজেটের কাজ চলছে।
এনবিআরের সূত্রগুলো বলছে, করোনার কারণে আগামী ২০২০–২১ অর্থবছরের বাজেটের ফোকাসই পরিবর্তন হয়ে গেছে। বিভিন্ন ব্যবসা খাতের ক্ষতি পুষিয়ে দিতে কী ধরনের শুল্ক-কর সুবিধা দেওয়া যায়, সেটা নিয়েই কাজ করছে এনবিআর।

এদিকে বাজেট সামনে রেখে এনবিআর ও এফবিসিসিআইয়ে যৌথ পরামর্শক সভা নিয়েও অনিশ্চয়তা আছে। সাধারণত এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে এ পরামর্শক সভা অনুুষ্ঠিত হয়, এবারও সেভাবেই পরিকল্পনা করা হয়েছিল। কিন্তু বর্তমান বাস্তবতায় এবার এপ্রিলে পরামর্শক সভা হচ্ছে না। পরিস্থিতির উন্নতি হলে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, এখন পর্যন্ত ৫০-৬০ টি ব্যবসায়ী ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান তাদের বাজেট প্রস্তাব জমা দিয়েছে। অন্যান্য বছর সারা দেশ থেকে দুই শতাধিক সংগঠনের বাজেট প্রস্তাব পায় এনবিআর। ব্যবসায়ীদের অনাগ্রহের কারণে ৯ এপ্রিল এফবিসিসিআই, মোবাইল ফোন অপারেটরদের সংগঠন অ্যামটব, কৃষি ও পোলট্রি খাতসহ বেশ কয়েকটি ব্যবসায়ী সংগঠনকে বাজেট প্রস্তাব পাঠানোর জন্য বিশেষ অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দেয় এনবিআর। তবে এসব সংগঠনের অনেকেই এখনো তাদের সুপারিশ পাঠায়নি।

গত ১৯ মার্চ থেকে এনবিআর মাসব্যাপী প্রাক–বাজেট আলোচনা শুরু করেছিল। মাত্র দুই দিন আলোচনা হওয়ার পর করোনার কারণে তা অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত হয়।