যুক্তরাষ্ট্রের তেলের দাম ইতিহাসের সর্বনিম্নে

যুক্তরাষ্ট্রের তেলের দাম প্রতি ব্যারেল মাইনাস ৩৭.৬৩ ডলার। ছবি: রয়টার্স
যুক্তরাষ্ট্রের তেলের দাম প্রতি ব্যারেল মাইনাস ৩৭.৬৩ ডলার। ছবি: রয়টার্স

করোনাভাইরাস মহামারির কারণে বিশ্বজুড়ে প্রায় সব দেশেই চলছে লকডাউন। এতে হু হু করে বিশ্ববাজারে কমছে জ্বালানি তেলের দাম। তবে যুক্তরাষ্ট্রের তেলের বাজারে যে প্রভাব পড়েছে, তা বিশ্বের ইতিহাসে আর কখনো হয়নি। গতকাল সোমবার ইতিহাসে প্রথমবারের মতো মার্কিন তেলের দাম শূন্যের নিচে নেমে গেছে। এর অর্থ হলো, উৎপাদকেরা তেল কেনার জন্য উল্টো ক্রেতাদের অর্থ দিচ্ছেন।


আসলে তেলের চাহিদা কমে যাওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের তেল সংরক্ষণাগারগুলো আর অতিরিক্ত তেলের চাপ নিতে পারছে না। উৎপাদকেরা আশঙ্কা করছেন, মে মাসে সংরক্ষণাগার একেবারে উপচে পড়বে। এ পরিস্থিতিতে এই তেল নিজেদের কাছ থেকে সরাতে চাইছেন তাঁরা। গতকাল যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (ডব্লিউটিআই) তেলের দাম কমে প্রতি ব্যারেল হয়েছে মাইনাস ৩৭ দশমিক ৬৩ ডলার। বিবিসি অনলাইনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
বিশ্বজুড়ে লকডাউনের কারণে ভ্রমণ, মানুষের চলাচল সব বন্ধ। এতে তেলের চাহিদা একেবারেই নেই। বিশ্লেষকেরা বলছেন, বিভিন্ন চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার সময় হওয়ায় তেলের দাম কমেছে। গতকাল মূলত মে মাসে যেসব তেল সরবরাহ করার কথা ছিল, সেগুলোর দাম কমেছে। কারণ সংরক্ষণাগারগুলোতে মে মাসের তেল রাখার জায়গা আর নেই।
জুনে যে ডব্লিউটিআই তেল সরবরাহ করার কথা ছিল, তার দাম গতকাল কমে ব্যারেলপ্রতি ২০ ডলারে ঠেকেছে। অন্যদিকে ব্রেন্ট ক্রুড অয়েলের দাম ৮ দশমিক ৯ শতাংশ কমে গতকাল হয়েছে ব্যারেলপ্রতি ২৬ ডলার।
বিশ্লেষকেরা আশঙ্কা করছেন, বিশ্বজুড়ে লকডাউন জারি থাকলে জুনে যেসব তেল সরবরাহ করার কথা, তার দামও আরও কমতে পারে।


মূলত করোনাভাইরাস মহামারির কারণে চলতি বছরের শুরু থেকে চাহিদা কমেছে জ্বালানি তেলের বাজার। ফলে বিশ্ববাজারে হু হু করে কমছে দাম। যুক্তরাষ্ট্রের তেল সংরক্ষণাগারগুলো অতিরিক্ত তেলের চাপ আর নিতে পারছে না। এতে দাম আরও কমে যাচ্ছে। মার্চের শেষে ১৮ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন অবস্থানে নেমে আসে দাম।


এর মধ্যে এক মাস ধরে উৎপাদন কমানো নিয়ে তর্কবিতর্ক চলছে তেলের বাজারে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আলোচনা শুরু হয় তেল উতপাদনকারী দেশগুলোর মধ্যে। ১৩ এপ্রিল নানা আলোচনা জল্পনার পর ওপেক প্লাস ও তেল উৎপাদক মিত্রদেশগুলো উৎপাদন কমানোর ঐতিহাসিক সমঝোতায় পৌঁছায়। দৈনিক ৯৭ লাখ ব্যারেল তেল উৎপাদন কমানোর ব্যাপারে একমত হয়েছে শীর্ষ তেল উৎপাদক ও রপ্তানিকারকদের এই জোট, যা বিশ্বের মোট উৎপাদনের ১০ শতাংশ। ২০২২ সালের এপ্রিল পর্যন্ত বিভিন্ন মাত্রায় উৎপাদন কমানো হবে।