কুমিল্লায় ধান কাটার শ্রমিক পাঠালেন তারাগঞ্জের ইউএনও

কুমিল্লা জেলায় ধান কাটার জন্য শ্রমিক পাঠানোর উদ্যোগ নিয়েছেন রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আমিনুল ইসলাম। আজ মঙ্গলবার ও গতকাল সোমবার দুই দিনে ১০০ জন শ্রমিক পাঠানো হয়েছে। ধানকাটা শেষে তাঁদের আবার তারাগঞ্জে নিয়ে আসা হবে।

তারাগঞ্জের পোদ্দারপাড়া গ্রামের শ্রমিক ইব্রাহিম হোসেন (৩২) বলেন, ‘স্যার কুমিল্লা যাবারে তো মন চায় না। কিন্তু না যায়াও উপায় পাওছু না। ঘরোত খাবার নাই। হাতোত টাকাও নাই। মোর বাবা-মাও অসুস্থ। খুব কষ্টে চলছুন। ওই জন্যে জীবনের রিকস নিয়া কুমিল্লা ধান কাটিবার যাওছুন।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা অশোক কুমার বলেন, তারাগঞ্জে ধানকাটা–মাড়াই আরও ১৫দিন পর শুরু হবে। এখানকার শ্রমিকেরা এখন বেকার সময় পার করছেন। অন্যদিকে কুমিল্লা জেলায় এখন ধানকাটা মাড়াইয়ের মৌসুম চলছে। শ্রমিক সংকটের কারণে সেখানকার চাষিরা খেত থেকে ধান ঘরে তুলতে পারছেন না। বর্ষা মৌসুমও আসন্ন। দ্রুত ধান কাটা না হলে হাজারো টন ধান খেতেই নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। মূলত এর পরিপ্রেক্ষিতে তারাগঞ্জ থেকে কুমিল্লায় ধানকাটা শ্রমিক পাঠাতে উদ্যোগ নেন ইউএনও আমিনুল ইসলাম। বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আনিছুর রহমানের সঙ্গে। তিনিও উৎসাহ দেন। এরপর শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলা হয়। শ্রমিকেরা আগ্রহ প্রকাশ করলে সোমবার ৬০ জন ও মঙ্গলবার ৪০ জন শ্রমিককে পাঁচটি গাড়িতে করে পাঠানো হয়। শ্রমিকদের যাওয়ার ভাড়া উপজেলা পরিষদ থেকে দেওয়া হয়। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে প্রতি দুই আসনে একজন করে শ্রমিক বসানো হয়। প্রত্যেক শ্রমিককে দেওয়া হয়েছে মাস্ক ও সাবান।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোস্তফা জামান চৌধুরী বলেন, এখন পর্যন্ত তারাগঞ্জে কোনো করোনা রোগী শনাক্ত হয়নি। আর যাঁরা কুমিল্লায় ধান কাটতে গেছেন তাঁরা সুস্বাস্থ্যের অধিকারী।

ইউএনও আমিনুল ইসলাম বলেন, তারাগঞ্জ থেকে শ্রমিক পাঠানোর ফলে কুমিল্লা অঞ্চলের চাষিদের ধান যেমন গোলায় উঠবে, তেমনি করোনা পরিস্থিতিতে বেকার হয়ে যাওয়া শ্রমিকেরা রোজগারের পথ পাবেন।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান বলেন, পর্যায়ক্রমে আরও শ্রমিক পাঠানো হবে। ধানকাটা–মাড়াই শেষে শ্রমিকদের ফিরিয়ে আনা হবে।