১৫ দিনে মোবাইল ব্যাংকিং হিসাব খুলেছেন ২৬ লাখ শ্রমিক

বেতন-ভাতা পেতে নতুন করে প্রায় ২৬ লাখ শ্রমিক মোবাইল ব্যাংকিং হিসাব খুলেছেন। গত ১৫ দিনে এসব হিসাব খোলা হয়েছে। নতুন করে শ্রমিকের হিসাব খেলায় শীর্ষে রয়েছে দেশের সবচেয়ে বড় মোবাইলে আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান (এমএফএস) বিকাশ। এরপর ডাচ্‌–বাংলা ব্যাংকের ‘রকেট’ ও ডাক বিভাগের আর্থিক সেবা ‘নগদ’–এ বেশি হিসাব খোলা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে খোঁজ নিয়ে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

রপ্তানিমুখী কারখানার শ্রমিকদের বেতন দিতে পাঁচ হাজার কোটি টাকার তহবিল গঠন করেছে সরকার। ওই তহবিল পরিচালনার নীতিমালা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। নীতিমালা অনুযায়ী, বেতনের টাকা সরাসরি শ্রমিকের হিসাবে পাঠিয়ে দেবে ব্যাংকগুলো। যাঁদের হিসাব নেই, তাঁদের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ও জন্মনিবন্ধন সনদের ভিত্তিতে মোবাইল ব্যাংকিং হিসাব খোলার উদ্যোগ নিতে বলা হয়। আবার শ্রমিকেরা চাইলে বিনা মাশুলে ব্যাংক হিসাবও খুলতে পারবেন বলে নীতিমালায় বলা হয়।

নীতিমালা অনুযায়ী, মজুরির টাকা সরাসরি শ্রমিকের ব্যাংক হিসাব বা মোবাইল ব্যাংকিং হিসাবে পাঠিয়ে দেবে ব্যাংক। এ জন্য এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোকে ২০ এপ্রিলের মধ্যে রপ্তানিমুখী কারখানার শ্রমিকের হিসাব খুলতে বলা হয়। এরপর এমএফএস প্রতিষ্ঠান ও কারখানাগুলো হিসাব খোলার উদ্যোগ নেয়। ৬ থেকে ২০ এপ্রিলের মধ্যে বিকাশে সাড়ে ১২ লাখ নতুন হিসাব খোলা হয়।

বিকাশের যোগাযোগ বিভাগের প্রধান শামসুদ্দিন হায়দার প্রথম আলোকে বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনার পর প্রায় নতুন করে সাড়ে ১২ লাখ হিসাব খোলা হয়েছে, এর বড় অংশই পোশাক খাতের শ্রমিকের। আমরা নিজেরা অনেক হিসাব খুলেছি। আবার কারখানাগুলোর উদ্যোগে এবং অনেক শ্রমিক নিজ উদ্যোগে হিসাব খুলেছেন।

বেসরকারি খাতের ডাচ্‌–বাংলা ব্যাংকের সেবা রকেট প্রায় ৭ লাখ নতুন হিসাব খুলেছে। আগে থেকে দেশের প্রায় সাড়ে ৬০০ প্রতিষ্ঠানের বেতন-ভাতা পরিশোধ করা হয় রকেট হিসাবের মাধ্যমে। এর বেশির ভাগই পোশাক খাতের প্রতিষ্ঠান। প্রতি মাসে রকেটের মাধ্যমে প্রায় ৮০০ কোটি টাকা বেতন দেওয়া হয়।

ডাচ্‌–বাংলা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কাশেম মোহাম্মদ শিরিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘নতুন করে ৭ লাখ শ্রমিকের মোবাইল ব্যাংকিং হিসাব খোলা হয়েছে। এর ফলে আমাদের মোট হিসাব সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১ কোটি ৯০ লাখ। হিসাব খোলা এখনো অব্যাহত আছে।’

এদিকে সরকারের ডাক বিভাগের সেবা 'নগদ' নতুন করে ৬ লাখ ৯৭ হাজার ২০০ হিসাব খুলেছে। এর মধ্যে বিজিএমইএ সদস্যভুক্ত কারখানার ৪ লাখ ৬৮ হাজার ২০০ ও বিকেএমইএ সদস্য কারখানার ২ লাখ ২৯ হাজার।

নগদের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনার পর আমরা নতুন করে প্রচার প্রচারণা চালিয়েছি। শ্রমিকদের হিসাব খোলার জন্য নানাবিধ উদ্যোগ নিয়েছি। এর ফলে প্রায় ৭ লাখ নতুন করে হিসাব খোলা সম্ভব হয়েছে। এখনো হিসাব খোলা অব্যাহত আছে।’