পোশাক কারখানায় লে-অফ ও ছাঁটাইয়ের বিরুদ্ধে ভিন্নধর্মী প্রতিবাদ

লে-অফ ও ছাঁটাইয়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অংশ নেন মানবাধিকারকর্মী হামিদা হোসেন। ছবি: বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতি
লে-অফ ও ছাঁটাইয়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ কর্মসূচিতে অংশ নেন মানবাধিকারকর্মী হামিদা হোসেন। ছবি: বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতি

গণহারে পোশাক কারখানা লে-অফ ঘোষণা ও বেশ কয়েক হাজার শ্রমিক ছাঁটাইয়ের বিরুদ্ধে অনলাইনে ভিন্নধর্মী এক প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছে বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতি। কর্মসূচির আওতায় গত দুই দিন সংগঠনটির আহ্বানে পোশাকশ্রমিক, শিক্ষক, আলোকচিত্রীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ ‘ছাঁটাই-লে-অফ না, পূর্ণ বেতন চাই’ দাবিটি একটি কাগজে লিখে নিজের ছবিসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করেন।

গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতি আজ বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানিয়েছে। এতে বলা হয়, গত সোমবার সন্ধ্যা ছয়টায় সংগঠনের সভাপ্রধান তাসলিমা আখতার, সাধারণ সম্পাদক জুলহাস নাইন ও সাংগঠনিক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম দাবিসহ নিজেদের ছবি ফেসবুকে পোস্ট করে কর্মসূচির সূচনা করেন। পরবর্তী সময়ে পোশাকশ্রমিকদের পাশাপাশি দাবি হাতে ছবি পোস্ট করে সংহতি জানান মানবাধিকারকর্মী হামিদা হোসেন, অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, নৃবিজ্ঞানী রেহনুমা আহমেদ, আলোকচিত্রী শহিদুল আলম, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সেউতি সাবুর ও শেহজাদ আরেফীন, গণসংহতি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সম্পাদক আবুল হাসান রুবেল, নারী সংহতির সভাপতি শ্যামলী শীল, ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি গোলাম মোস্তফা প্রমুখ।

পূর্ণ মজুরির দাবিতে সোচ্চার হয়েছেন এই পোশাকশ্রমিক। ছবি: বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতি
পূর্ণ মজুরির দাবিতে সোচ্চার হয়েছেন এই পোশাকশ্রমিক। ছবি: বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতি

আজ সন্ধ্যা ছয়টায় কর্মসূচি শেষে সংগঠনের সভাপ্রধান তাসলিমা আখতার বলেন, করোনার এই দুর্যোগে প্রায় অধিকাংশ কারখানা লে-অফ ঘোষণা করেছে। হাজার হাজার শ্রমিক ছাঁটাইয়ের শিকার হয়েছেন। এর ফলে ইতিমধ্যে পোশাকশ্রমিকেরা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন। আগামী মাস থেকে এটি ভয়াবহ রূপ নেবে। তাই এখনই লে-অফ বাতিল ও ছাঁটাই বন্ধ করে শ্রমিকদের জীবন বাঁচাতে মালিক, সরকার ও বিদেশি ক্রেতাদের দায়িত্ব নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে।

করোনার সংক্রমণ রোধে গত ২৬ মার্চ সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটি শুরু হয়। তখন ৪০ শতাংশ কারখানা লে-অফ ঘোষণা করে। তখন সাধারণ ছুটিও দেয় কিছু কারখানা। তবে ৪ এপ্রিলের পর লে-অফের সংখ্যা বাড়তে থাকে। বিষয়টি নিশ্চিত করে বিজিএমইএর একজন সহসভাপতি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ইতিমধ্যে ৯০ শতাংশ কারখানা লে-অফ করেছে।

জানা যায়, যেসব কারখানা লে-অফ করেছে তারা শ্রমিকদের মূল মজুরির অর্ধেক ও বাড়ি ভাড়া দেবে। যাতায়াত, খাদ্য ও চিকিৎসা ভাতা পাবেন না শ্রমিকেরা। তাতে কোনো শ্রমিকের মোট মজুরি ৮ হাজার টাকা হলে লে-অফের কারণে তিনি পাবেন ৪ হাজার ১০০ টাকা। কারখানার উৎপাদন বন্ধ থাকায় ওভারটাইম ও হাজিরা ভাতা পাবেন না শ্রমিকেরা। যেসব শ্রমিকের চাকরির বয়স এক বছরের কম, তাঁরাও কোনো অর্থ পাবেন না।