রোজায় সরবরাহ বাড়াতে পণ্য খালাসে বন্দরের চিঠি

চট্টগ্রাম বন্দর। প্রথম আলো ফাইল ছবি
চট্টগ্রাম বন্দর। প্রথম আলো ফাইল ছবি

বাজারে সরবরাহ বাড়াতে রোজার পণ্য খালাস করে নেওয়ার জন্য আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে চিঠি দিয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর। আজ রোববার এই চিঠি দেওয়া হয়। পণ্য খালাস নেওয়ার জন্য সরাসরি আমদানিকারকদের কাছে চিঠি দেওয়ার মতো উদ্যোগ সাম্প্রতিক সময়ে এবারই প্রথম।

বন্দর সূত্রে জানা গেছে, বন্দর চত্বরে যাদের আমদানি করা পণ্য রয়েছে তাদের কাছে পৃথক পৃথক চিঠি দিয়ে তা খালাসের জন্য এই চিঠি দেওয়া হয়। আবার ব্যবসায়ীদের সংগঠন চট্টগ্রাম চেম্বার এবং আমদানিকারকের পক্ষে পণ্য খালাসে নিয়োজিত প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের কাছেও এই চিঠি দেওয়া হয়েছে।

বন্দর পর্ষদের সদস্য জাফর আলম প্রথম আলোকে জানান, বন্দরে যেসব প্রতিষ্ঠানের আমদানি করা পণ্য আছে তাদের তালিকা করে তা খালাস নেওয়ার জন্য চিঠি দেওয়া হচ্ছে। এতে যেমন বাজারে রোজার পণ্যের সরবরাহ বাড়বে, তেমনি বন্দরে কনটেইনার জটও কমবে।

বন্দরের হিসাব অনুযায়ী, রোববার বন্দরে এক হাজার ৪৭৩ টন পেঁয়াজ, ৪৭৫ টন আদা, ৮৫০ টন রসুন রয়েছে। এ ছাড়া ৫৭ হাজার ৫০০ টন তাজা ফল রয়েছে। এই চারটি পণ্যবাহী কনটেইনার রয়েছে আড়াই হাজার।

আমদানিকারকদের কাছে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, বন্দরে এখন ৪৩ হাজার ৭৪০ একক কনটেইনার পড়ে আছে, যা ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি। গত এক মাস ধরে পণ্যবাহী কনটেইনার খালাসের হার ছিল কম। এর মধ্যে রোজার পণ্য রয়েছে। পণ্য খালাস কমে যাওয়ায় বন্দরের স্বাভাবিক কার্যক্রম চালানো যাচ্ছে না।
বাজারে এখন চীনের আদার দাম কেজিপ্রতি ৩০০ টাকা ছাড়িয়ে গেছে। অথচ চীন থেকে এখন চট্টগ্রাম বন্দর পর্যন্ত প্রতি কেজি আদা আমদানিতে খরচ পড়বে ৯৮ টাকা। মূলত আদা আমদানি কমে যাওয়ায় বাজারে এই সংকট তৈরি হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে বন্দর কর্তৃপক্ষ হিসাব করে দেখেছে, বন্দরে এখন পৌনে পাঁচ লাখ কেজি আদা পড়ে আছে। এই পরিস্থিতিতে আদা আমদানিকারক মেসার্স খাতুনগঞ্জ ট্রেডিং, মেসার্স তানজিল এন্টারপ্রাইজ, মেসার্স সাবরিন এন্টারপ্রাইজের কাছে পৃথক চিঠি দিয়ে তা খালাস নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে বন্দর।
আদার মতো বন্দরে এখন সাড়ে আট লাখ কেজি রসুন পড়ে আছে। এসব রসুন খালাস নেওয়ার জন্য ছয়টি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া আমদানি করা ১৪ লাখ ৭৩ হাজার কেজি পেঁয়াজ খালাস নেওয়ার জন্য চারটি প্রতিষ্ঠানকে চিঠি দেওয়া হয়।
ভোগ্যপণ্য ছাড়াও রোজায় ফলের সরবরাহ বাড়াতে চিঠি দিয়েছে বন্দর। ফল আমদানিকারক সমিতির কাছে চিঠি দিয়ে ৫৭ হাজার ৫০০ টন তাজা ফল খালাস নেওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছে বন্দর।

বন্দরের চিঠির বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে সংশ্লিষ্ট আমদানিকারকদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তবে পণ্য খালাসে দেরি হওয়া নিয়ে আমদানিকারকেরা জানিয়েছেন, পণ্য খালাসের সঙ্গে যুক্ত সব সংস্থার কার্যক্রম সীমিত আকারে চলছে। কাস্টমস এর কার্যক্রম স্বাভাবিক হলেও অন্য সংস্থাগুলোর কার্যক্রম এখনো পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি। এতে সময় লাগছে।

আদা–রসুন আমদানিকারক নুর হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, বন্দরে পণ্য আসার পর এখন খালাসে সময় লাগছে বেশি। অনেকগুলো সংস্থা থেকে অনুমোদন বা পরীক্ষা–নিরীক্ষা করাতে হয়। আগে এক–দুদিনে শেষ করা গেলেও এখন কয়েকদিন সময় লাগছে।