আদার দাম কমল ২ কারণে

আদা। প্রথম আলো ফাইল ছবি
আদা। প্রথম আলো ফাইল ছবি

চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে আজ শনিবার প্রতি কেজি চীনা আদা বিক্রি হয়েছে ১১৫ টাকায়। এক দিন আগেও এই আদা বিক্রি হয়েছিল ১৫০ টাকায়। এই বাজারে এক সপ্তাহ আগে আদার সর্বোচ্চ দাম ওঠে ২৫০ থেকে ২৬০ টাকায়।


আদার দাম কমে আসার পেছনে দুটি কারণ রয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে। প্রথমত বন্দরে আটকে থাকা আদা খালাস করে বাজারজাত করা হয়েছে। আবার আদার চাহিদা কমেছে। পাশাপাশি বাজারে প্রশাসনের নজরদারিও ছিল।


পাইকারি বাজারে আদার দাম কমতে থাকায় খুচরা বাজারেও ধারাবাহিকভাবে কমতে শুরু করেছে। খুচরায় প্রতি কেজি আদা ২৮০–৩০০ টাকা পর্যন্ত উঠেছিল। এই আদা বিক্রি হচ্ছে ১৬০-১৮০ টাকা কেজিতে। পাইকারি বাজারে আজকের দর অনুযায়ী খুচরায় তা ১৪০ টাকার নিচে নেমে আসবে বলে ব্যবসায়ীরা জানান।


খাতুনগঞ্জ হামিদুল্লাহ মিঞা মার্কেট আড়তদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইদ্রিস প্রথম আলোকে বলেন, রোজার আগে বাজারে আদার সরবরাহ কম ছিল। চাহিদা ছিল বেশি। এতে আদার দাম এত বেশি বেড়ে যায়। এখন সরবরাহ বেড়েছে। চাহিদাও নেই। ফলে দামও অস্বাভাবিক কমে গেছে।


চট্টগ্রাম কাস্টমসের হিসাবে দেখা যায়, চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে এ বছরের জানুয়ারি থেকে ১১ মার্চ পর্যন্ত আদা আমদানি হয় ১২ হাজার ৭৮২ টন। গত বছর একই সময়ে আমদানি হয়েছিল ৩১ হাজার ৪০২ টন। অর্থাৎ এ সময়ে আমদানি কমেছে প্রায় ৫৯ শতাংশ। আমদানি কমার পাশাপাশি বন্দরে জাহাজজটে আদার চালান আটকে যায়। এতে বাজারে সরবরাহ সংকট তৈরি হয়। এই পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে আদার দাম বাড়িয়ে দেন ব্যবসায়ীরা।
আদার দাম বাড়ানোর পর বাজারে অভিযান চালায় প্রশাসন। চট্টগ্রাম বন্দরেও আটকে থাকা ৪ লাখ ৭৫ হাজার কেজি আদা খালাস করে নেন ব্যবসায়ীরা। জাহাজজট কমতে থাকায় আদার নতুন চালানও খালাস হতে থাকে। অন্যদিকে মিয়ানমার থেকে টেকনাফ স্থলবন্দর দিয়েও গত মাসে সাড়ে সাত লাখ কেজি আদার চালান খালাস হয়। এসবের ইতিবাচক প্রভাব বাজারে পড়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।


শীর্ষস্থানীয় আদা আমদানিকারক চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের ফরহাদ ট্রেডিংয়ের কর্ণধার নুর হোসেন প্রথম আলোকে বলেন,‌ ‘তিন দিন আগে ৮১ হাজার কেজি আদা ১৩৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছি। তখন বাজারে কেজি প্রতি আদা ২০০ টাকার বেশি বেচাকেনা হয়েছে।’ আদার দাম কমার ক্ষেত্রে তাঁর ভূমিকা বেশি দাবি করে তিনি বলেন, আদার চালান আটকে থাকায় সংকটের সময় বাজারজাত করতে পারেননি তিনি। বন্দর থেকে যখন হাতে পেয়েছেন, তখনই বাজারমূল্যের চেয়ে কম দামে বাজারে ছেড়ে দিয়েছেন।’


ব্যবসায়ীরা জানান, আদার দাম বাড়ার সময় ক্রেতারাও আদা কেনার জন্য তাড়াহুড়ো করেছিলেন। এখন আদা কেনার জন্য ক্রেতা কম। ব্যবসায়ীরা জানান, ক্রেতারা নিজেদের চাহিদানুযায়ী আদা কিনে নিয়েছেন। একটি পরিবারে মাসে এক কেজির বেশি আদা দরকার হয় না। এতে আদার চাহিদায় কমায় দামও কমছে।