সরকারি ব্যাংকগুলোকে মিতব্যয়ী হওয়ার নির্দেশ

করোনাভাইরাসের কারণে সারা দেশে অঘোষিত লকডাউন (অবরুদ্ধ অবস্থা) চলছে। অফিস-আদালত প্রায় বন্ধ। ঠিক এ সময় অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ পানি, গ্যাস, বিদ্যুৎ প্রভৃতি ব্যবহারে সাশ্রয়ী হতে সরকারি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে। 

আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ গতকাল সোমবার এটিসহ অনাবশ্যক পরিচালন ব্যয় কমানোর ৯ দফা নির্দেশনা দিয়েছে। সোনালী, জনতা, কৃষি, কর্মসংস্থানসহ সরকারি ৬ ব্যাংক এবং বাংলাদেশ হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশনসহ ৪ সংস্থার ক্ষেত্রে এ নির্দেশনা প্রযোজ্য।
বলা হয়েছে, সরকারি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো অস্থাবর সম্পত্তি কেনা, অফিস স্পেস ভাড়া, সাজসজ্জা প্রভৃতি সাময়িকভাবে বন্ধ রাখতে হবে। আর এখন থেকে ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকেরা (এমডি) অনাবশ্যক বিদেশ ভ্রমণ করতে পারবেন না।
ক্যালেন্ডার, ডায়েরি ও জাতীয় প্রচারমূলক ব্যয়ে অর্থ বরাদ্দ সীমিত রাখা এবং ভ্রমণ, যাতায়াত ভাতা, আপ্যায়ন খরচ, উন্নয়ন তহবিলসহ বিবিধ খরচের ক্ষেত্রে মিতব্যয়ী হওয়ার কথাও বলা হয়েছে। আর গাড়ি ব্যবহারে অনুসরণ করতে হবে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা।
আরও বলা হয়েছে, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সভা, বার্ষিক সাধারণ সভা এখন থেকে যার যার অফিসের মধ্যেই করতে হবে। বাইরের কোনো হল ভাড়া করা যাবে না। ক্রান্তিকালে ভিডিও সম্মেলন করতে হবে।
ব্যাংকের ফ্রন্ট লাইনে যাঁরা কাজ করেন, তাঁদের অধিকতর স্বাস্থ্য সুরক্ষা এবং যাতায়াতসহ অন্যান্য সুবিধা বাড়ানোর কথাও বলা হয়েছে নির্দেশনায়।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে, নভেল করোনাভাইরাসের কারণে অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব পড়ছে। এ সংকট মোকাবিলায় রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে অধিক পরিমাণে তারল্য বাড়িয়ে অর্থনীতির চাকা সচল রাখা ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা।
কয়েকটি ব্যাংকের এমডির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চেয়ারম্যান ও এমডিদের অনাবশ্যক বিদেশ ভ্রমণের সুযোগ নেই। আর আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের অনুমতি ছাড়া কেউ বিদেশে যেতেও পারেন না।
তাঁরা বলছেন, তালিকাভুক্ত রূপালী ব্যাংক ছাড়া সবারই সভা বা বার্ষিক সভা যার যার অফিসে করার বাস্তবতা রয়েছে। পুরোদমে অফিস শুরু না হওয়ায় গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি খরচ এখন কমই হচ্ছে।
ব্যাংকাররা আরও বলছেন, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের নির্দেশনার বড় দুর্বলতা হচ্ছে, এর কোনো তদারকি থাকে না। বিভাগটির কোনো নির্দেশনা পরিপালিত না হলে কারও বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিমূলক পদক্ষেপও নেওয়া হয় না।