ঈদের আগে পোশাকশ্রমিক ছাঁটাই করা যাবে না: শ্রম মন্ত্রণালয়

ঈদের আগে কোনো পোশাকশিল্পের শ্রমিক ছাঁটাই বা কোনো কারখানা লে-অফ করা যাবে না। শ্রম মন্ত্রণালয় আজ রোববার আবারও এই নির্দেশনা দিয়েছে।

শ্রম প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ানের সভাপতিত্বে গত ৪ মে শ্রম ভবনে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত। সেই বৈঠকে পোশাকশিল্প মালিকদের দুই সংগঠন বিজিএমইএ ও বিকেএমইএর সাবেক ও বর্তমান নেতাদের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন ইন্ডাস্ট্রিঅল বাংলাদেশ কাউন্সিলের (আইবিসি) অধীভুক্ত শ্রমিক সংগঠনের নেতারা। সেদিনের বৈঠকে যেসব সিদ্ধান্ত হয়েছিল তা আজকে নির্দেশনা হিসেবে জানিয়েছে শ্রম মন্ত্রণালয়। তবে বৈঠক শেষে আইবিসির নেতারা দাবি করেছিলেন সর্বসম্মতিক্রমে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। অবশ্য ৭ মে তাঁদের সঙ্গে বিজিএমইএর একটি সমঝোতা হয়। তার আগে ২৯ এপ্রিল সরকার, মালিক ও শ্রমিক ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে শ্রমিক ছাঁটাই না করতে সিদ্ধান্ত হয়েছিল।

শ্রম মন্ত্রণালয় নির্দেশনায় বলেছে, এপ্রিলে যেসব শ্রমিক সম্পূর্ন মাস কাজ করেছে তারা পুরো মজুরি পাবে। যারা কাজ করেনি তারা মোট মজুরির ৬৫ শতাংশ পাবে। অর্থাৎ এপ্রিলে শ্রমিকেরা যে কয়দিন কাজ করেছেন সে কয়দিনের পুরো মাসের হিসাবে মজুরি ও ভাতা, বাকি সময়ের জন্য ৬৫ শতাংশ হারে মজুরি পাবেন। আবার ঘোষিত ৬৫ শতাংশের ৬০ শতাংশ এপ্রিলের মজুরির সঙ্গে পাবেন শ্রমিকেরা। বাকি ৫ শতাংশ মে মাসের মজুরির সঙ্গে সমন্বয় করে শ্রমিকদের দেবেন মালিকেরা।

করোনাভাইরাস সংক্রমণে সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটির শুরুর পর অনেক কারখানা লে-অফ ঘোষণা করে। শ্রমিক ছাঁটাইয়ের ঘটনা ঘটে। শিল্প পুলিশের হিসাবে, করোনার এই সময়ে প্রায় সাড়ে আট হাজার পোশাকশ্রমিক ছাঁটাই হয়েছে। তার মধ্যে সাভার-আশুলিয়ায় ছয় হাজারের বেশি শ্রমিক ছাঁটাইয়ের শিকার হোন।

জানতে চাইলে জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি আমিরুল হক আমিন ও গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক জলি তালুকদার বলেন, সরকার, মালিক ও শ্রমিক ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে সিদ্ধান্তের পর কয়েকটি কারখানা ছাঁটাইকৃত শ্রমিকদের পুনর্বহাল করেছে। তবে সব কারখানা ছাঁটাইকৃত শ্রমিকদের পুনর্বহাল করেনি। আবার নতুন করে শ্রমিক ছাঁটাইয়ের ঘটনাও ঘটছে বলে অভিযোগ করেন তাঁরা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সহসভাপতি আরশাদ জামাল প্রথম আলোকে বলেন, 'শ্রমিক ছাঁটাই না করতে আমরা একাধিকবার মালিকদের অনুরোধ করেছি। ফলে বড় কারখানা ছাঁটাই করছে না। তবে ছোট-মাঝারি কারখানাগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন। তারপরও শ্রমিক ছাঁটাই না করতে সদস্যদের আমরা চাপে রেখেছি।'