প্রণোদনার অর্থে মজুরি হচ্ছে পোশাকশ্রমিকের

ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

করোনাভাইরাসের ক্ষতি কাটাতে সরকার ঘোষিত প্রণোদনার অর্থে পোশাকশ্রমিকদের গত মাসের মজুরি দেওয়া শুরু হয়েছে। ব্যাংক হিসাব বা মোবাইল ব্যাংকিং হিসাবের (এমএফএস) মাধ্যমে আজ রোববার প্রথম কিছু কারখানার শ্রমিক এপ্রিলের মজুরি পেয়েছেন। চলতি সপ্তাহের মধ্যে অধিকাংশ কারখানার শ্রমিক মজুরি পেয়ে যাবে বলে দাবি করেছেন তৈরি পোশাকমালিকদের দুই সংগঠন বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ নেতারা।

শিল্পপুলিশ জানায়, সাভার-আশুলিয়া, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রাম ও ময়মনসিংহ ও খুলনায় বিজিএমইএর সদস্য ১ হাজার ৮৮২ পোশাক কারখানার মধ্যে ৪৭টি গতকাল মজুরি পরিশোধ করেছে। এ ছাড়া নিট পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর সদস্য ১ হাজার ১০১ কারখানার মধ্যে ৭টি মজুরি দিয়েছে। অন্যদিকে বস্ত্রকল মালিকদের সংগঠন বিটিএমএর সদস্য ৩৮৯ সদস্যের মধ্যে ৯টি মজুরি দিয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী গত ২৫ মার্চ জাতীয় উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে রপ্তানিমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকদের মজুরি দেওয়ার জন্য ৫ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেন। পরে অর্থ মন্ত্রণালয় নির্দেশনা দিলে বাংলাদেশ ব্যাংক ২ এপ্রিল একটি নীতিমালা জারি করে। নীতিমালায় বলা হয়, সচল কারখানা শ্রমিকের তিন মাসের (এপ্রিল, মে ও জুন) মজুরি দিতে তহবিল থেকে ঋণ পাবে। ঋণের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক কোনো সুদ নেবে না, তবে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো ২ শতাংশ পর্যন্ত মাশুল নিতে পারবে। এই ঋণের টাকা বাংলাদেশ ব্যাংককে ২ বছরের মধ্যে শোধ করবে ব্যাংকগুলো।

গত ২৮ এপ্রিল সরকার-মালিক-শ্রমিক ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে প্রাথমিকভাবে সিদ্ধান্ত হয় এপ্রিল মাসে কারখানা বন্ধকালীন সময়ে শ্রমিক-কর্মচারীরা মোট মজুরির ৬০ শতাংশ অর্থ পাবেন। আর যে কয়দিন কর্মদিবস ছিল সে কয়দিনের পূর্ণ মজুরি পাবে তারা। পরদিন কয়েকটি শ্রমিক সংগঠনের সঙ্গে বৈঠক করে সেটি চূড়ান্ত করে শ্রম মন্ত্রণালয়। তবে সেই বৈঠক বর্জন করে শতভাগ মজুরি দেওয়ার দাবি করেন ইন্ডাস্ট্রিঅল বাংলাদেশ কাউন্সিলের (আইবিসি) নেতারা। ৪ মে তাদের সঙ্গে সরকার ও মালিকপক্ষ সভা করে। তাতে এপ্রিলের মজুরি ৬৫ শতাংশ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। তবে বাড়তি ৫ শতাংশ মে মাসের মজুরির সঙ্গে দেবে মালিকেরা। সভাশেষে রাতে আইবিসির নেতারা সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানায় সর্বসম্মতিক্রমে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। অবশ্য গত বৃহস্পতিবার আইবিসি ও গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের নেতাদের সঙ্গে সমঝোতা করে বিজিএমইএ।

জানতে চাইলে তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সহসভাপতি আরশাদ জামাল প্রথম আলোকে বলেন, শ্রমিকদের ব্যাংক বা এমএফএস হিসাবে মজুরি যাওয়া শুরু হয়েছে। আশা করছি, চলতি সপ্তাহের মধ্যেই অধিকাংশ শ্রমিক মজুরি পেয়ে যাবেন। ঈদ বোনাসের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে সরকার, মালিক ও শ্রমিক ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে সিদ্ধান্ত হবে।

জানতে চাইলে বিকেএমইএ সহসভাপতি মোহাম্মদ হাতেম প্রথম আলোকে বলেন, মজুরি দিতে সাত-আট দিন লেগে যেতে পারে। তবে কিছু কারখানাকে ঋণ দিতে সহযোগিতা করছে না ব্যাংক। আবার কিছু কারখানা ঋণের জন্য আবেদনই করেনি। তাতে শেষ পর্যন্ত শতভাগ কারখানার মজুরি পরিশোধ নিয়ে শঙ্কা