ভ্যাট আদায়ে মরিয়া এনবিআর

মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট আদায়ে মরিয়া জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। সুপার শপ, মোবাইল ব্যাংকিং, সিগারেট, ইন্টারনেট, ওষুধ—এসব খাতে নজরদারি বাড়িয়েছেন ভ্যাট কর্মকর্তারা। এসব খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রাখার জন্য গত রোববার মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এনবিআরের সদস্য (মূসক বাস্তবায়ন ও আইটি) জামাল হোসেন সব কমিশনারেটে এই চিঠি দেন। এর আগে গত ১৮ এপ্রিল এমন চিঠি দেওয়া হয়েছিল।

চিঠিতে বলা হয়েছে, ভ্যাটের লক্ষ্য অর্জনে বেশি রাজস্ব আদায় হয় এমন খাত, যেমন সুপার শপ, মোবাইল ব্যাংকিং, বিকাশ, সিগারেট, ইন্টারনেট, ওষুধ—এসব খাতের ওপর নির্ভর করতে হবে। তাই এসব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ নিবিড় করতে হবে। এ ছাড়া উৎসে ভ্যাট ও বকেয়া রাজস্ব আদায়েও বিশেষ মনোযোগী হতে হবে।

গত এপ্রিল পর্যন্ত সাময়িক হিসাবে ৬৭ হাজার ৭৬০ কোটি টাকা ভ্যাট আদায় হয়। অবশ্য এখনো এপ্রিল মাসের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ভ্যাট রিটার্ন জমা হয়নি। এই রিটার্ন জমা হলে ভ্যাট আদায় আরও কিছুটা বাড়বে। এ বছর ভ্যাটের সংশোধিত লক্ষ্য হলো ১ লাখ ৮ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। লক্ষ্য অর্জনে এপ্রিল ও মে—এই দুই মাসে ভ্যাট আদায় করতে হবে প্রায় ৪১ হাজার কোটি টাকা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শীর্ষ কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, ‘লক্ষ্য অর্জনে চেষ্টা করছি। তবে গতবারের চেয়ে যাতে কম রাজস্ব আদায় না হয়, সেদিকেই বেশি মনোযোগ। গতবারের সমান ভ্যাট আদায় করতে হলে আগামী দুই মাসে ১৯ হাজার ৪১৬ কোটি টাকা আদায় করতে হবে।’

সুপার শপে বেচাকেনার ওপর ৫ শতাংশ হারে ভ্যাট দিতে হয়। বর্তমানে রাজধানী ও রাজধানীর বাইরে কার্যক্রম পরিচালনাকারী প্রায় দুই শ সুপার শপ আছে। সুপার শপ থেকে এনবিআর গড়ে এক শ কোটি টাকার মতো ভ্যাট পায়। এ ছাড়া সিগারেট প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে প্রতিবছর গড়ে ১০ থেকে ১২ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আসে। এই রাজস্বের সিংগভাগই আসে সিগারেটের ব্যান্ডরোল বিক্রি করে।

জীবনরক্ষাকারী ওষুধ ছাড়া অন্য সব ওষুধে ভ্যাট দিতে হয়। তবে এটি গ্রাহক বা ভোক্তা পর্যায়ে নয়। এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে উৎপাদন পর্যায়ে ১৫ শতাংশ ভ্যাট দিতে হয়। আর এই ভ্যাটের টাকা যোগ করেই ঔষধ প্রশাসন কর্তৃক বেঁধে দেওয়া মূল্য ঘোষণা দেয় ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো। ফলে ফার্মেসি বা ভোক্তা পর্যায়ে কোনো আলাদা কোনো ভ্যাট দিতে হয় না। এ ক্ষেত্রে ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকেই ভ্যাট আদায় করে এনবিআর। করোনার পরিস্থিতির মধ্যে ওষুধ কোম্পানিগুলো ওষুধ সরবরাহ মোটামুটি ঠিক রেখেছে।