করোনায় ই-কমার্সের ব্যবসা কেমন হচ্ছে?

করোনাভাইরাসের কারণে অনলাইনে পণ্য কেনার প্রবণতা বেড়ে গেছে। গত রোববার সীমিত পরিসরে অনেক দোকানপাট খুললেও ভয়াবহ ক্রেতাসংকট চলছে। তার মানে লকডাউন শিথিল করা হলেও ক্রেতাদের একটি অংশ অনলাইনের ওপর ভরসা রাখছে।

অনলাইনে কেনাকাটা কতটা বেড়েছে তার কিছু খণ্ডচিত্র কয়েকটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্মকর্তার মুখ থেকে জানা গেল। করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব) আজ বুধবার যৌথভাবে আয়োজিত অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে অংশ নিয়ে তাঁরা নিজেরাই দিয়েছেন ব্যবসা বৃদ্ধির পরিসংখ্যান। সেই সঙ্গে কিছু সমস্যার কথাও বলেছেন।

করোনার কারণে গত দুই মাসে আড়াই লাখ অর্ডার সরবরাহ করেছে চালডাল ডট কম। এমন তথ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জিয়া আশরাফ বলেন, সরবরাহকারী কর্মীরা মোটরসাইকেলের পেছনে পণ্য পরিবহনের জন্য যে বক্স বহন করেন, সেটি আইনিভাবে স্বীকৃত নয়। এর স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য উদ্যোগ দরকার।

করোনায় অঘোষিত লকডাউনে ৪০ কোটি টাকার পণ্য বিক্রি করেছে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালি। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রাসেল বলেন, ইভ্যালিতে পণ্য বিক্রি করছেন হাজারখানেক বিক্রেতা। তাঁরা প্রতিদিন ১০-২০টি পণ্যের ক্রয়াদেশ পাচ্ছেন।

করোনায় ক্রয়াদেশ বা অর্ডার তিন থেকে চার গুণ বেড়েছে বলে উল্লেখ করেন সিন্দাবাদ ডট কমের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জিসান কিংশুক হক। তিনি বলেন, ‘গত তিন-চার বছরে আমরা যতটুকু এগোতে পেরেছি, তার চেয়ে বেশি এগিয়েছি গত কয়েক সপ্তাহে।’

ই-কমার্স উদ্যোক্তা আশীষ চক্রবর্তী বলেন, ই-কমার্সের ৮০ শতাংশই আগে ক্যাশ অন ডেলিভারি হতো। তবে করোনার কারণে ক্যাশ অন ডেলিভারি কমেছে। ই-পেমেন্ট বেড়েছে।

তবে সব ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানই যে ব্যবসা করেছে, তা নয়। সিন্দাবাদের জিসান কিংশুক হক বলেন, করোনার সময় ই-কমার্সের মাধ্যমে ওষুধ, মুদি ও কিছু নিত্যপণ্য বিক্রি ব্যাপক হারে বেড়েছে। তবে ৮০ শতাংশ ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান এই পণ্যগুলো বিক্রি করে না।

অন্যদিকে ই-ক্যাবের অর্থসম্পাদক মোহাম্মদ আবদুল হক বলেন, দেশে ই-কমার্সের বাজার প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকার। সারা দেশের প্রায় ৮০ হাজার পরিবার প্রতিদিন ই-কমার্সের শপ থেকে সেবা নেয়। তবে করোনায় ই-কমার্স খাতে ক্ষতি মাসিক প্রায় ৬৬৬ কোটি টাকা। বর্তমানে ১০-১৫ শতাংশ প্রতিষ্ঠান সেবা প্রদান করছে। ৮৫ শতাংশ প্রতিষ্ঠানই বন্ধ রয়েছে।