শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থায় নতুন দুই কমিশনার

২০১১ সালের পর পুনর্গঠিত হলো শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। গত রোববার সংস্থাটির চেয়ারম্যান পদে শিবলী রুবাইয়াত–উল–ইসলামের যোগ দেওয়ার পর আজ বুধবার যোগ দিলেন নতুন দুই কমিশনার। তাঁরা হলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ ও একই বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমসের অধ্যাপক মিজানুর রহমান।

জানা গেছে, মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নতুন তিন কমিশনারের নিয়োগ অনুমোদন করেন। এর পর আজ অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে দুজনের নিয়োগের প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। তাঁদেরকে চার বছরের জন্য নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ঈদের ছুটির আগে আজই শেষ কার্যদিবস হওয়ায় প্রজ্ঞাপন জারির পরপরই নতুন কমিশনাররা নতুন কর্মস্থলে যোগ দেন। এর মধ্য দিয়ে খায়রুল কমিশনের পর শিবলী কমিশনের যাত্রা শুরু হয়েছে শেয়ারবাজারে। অপর কমিশনার পদে শিল্পসচিব আব্দুল হালিমের নিয়োগ চূড়ান্ত পর্যায়ে থাকলেও অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে চুক্তি না হওয়ায় তাঁর বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়নি। এ নিয়ে বিএসইসির পাঁচ সদস্যের কমিশনের মধ্যে চারজনের পদ পূরণ হলো।

২০১০ সালের কেলেঙ্কারির পর বিধ্বস্ত শেয়ারবাজার মেরামতের জন্য পুনর্গঠিত বিএসইসির দায়িত্বে আসেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এম খায়রুল হোসেনের নেতৃত্বাধীন কমিশন। তাঁর হাত ধরে শেয়ারবাজারে বেশ কিছু আইনি সংস্কার হলেও বাজারের ওপর বিনিয়োগকারীদের আস্থা প্রতিষ্ঠায় পুরোপুরি ব্যর্থ হন তিনি। এতে ২০১০ সালের কেলেঙ্কারিতে বিধ্বস্ত শেয়ারবাজারে প্রাণ ফেরেনি।

দীর্ঘ নয় বছর দায়িত্ব পালনকালে শতাধিক কোম্পানি তালিকাভুক্তির অনুমোদন দেয় খায়রুল কমিশন। এর বেশির ভাগই ছিল মানহীন। এ কারণে মানহীন কোম্পানির অনুমোদন দিয়ে বিনিয়োগকারীসহ বাজার সংশ্লিষ্টদের মধ্যে ব্যাপকভাবে তিরস্কৃত ও সমালোচিত হন খায়রুল কমিশন। আর যখন বিদায় নেন, বাজার ২০১১ সালের চেয়েও খারাপ অবস্থায়। বাজারের পতন ঠেকাতে বেঁধে দেওয়া হয়েছে শেয়ারের সর্বনিম্ন দাম।একই সঙ্গে করোনার হানায় ২৬ মার্চ থেকে বন্ধ বাজারের লেনদেন।

নতুন কমিশনের সামনে তাই বড় চ্যালেঞ্জ চরম আস্থাহীন বাজারে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরানো। পাশাপাশি দ্রুত সময়ের মধ্যে বন্ধ লেনদেন চালুর দাবিটিও সামনে রয়েছে। করোনায় বিধ্বস্ত অর্থনীতি ও ব্যবসা–বাণিজ্যের বিপুল ক্ষতির মধ্যে শেয়ারবাজারে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে শিবলী কমিশনকে। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় তিনি সতীর্থ হিসেবে পেয়েছেন তাঁরই বিদ্যাপীঠের দুইজন সহকর্মীকে।

খায়রুল হোসেন ও শিবলী রুবাইয়াতের নেতৃত্বাধীন আলাদা আলাদা দুই কমিশনের একটি জায়গায় মিল রয়েছে। খায়রুল হোসেন কমিশনের তিনজন তথা সংখ্যাগরিষ্ঠ ছিলেন শিক্ষক। শিবলী রুবাইয়াতের নেতৃত্বে পুনর্গঠিত কমিশনেও তিনজন শিক্ষকতা পেশা থেকেই যুক্ত হচ্ছেন শেয়ারবাজার সংস্থার কাজে। শ্রেণিকক্ষের পাঠদানের সঙ্গে যুক্ত শিক্ষকেরা তাঁদের শিক্ষার অভিজ্ঞতাকে কীভাবে শেয়ারবাজারে বাস্তব প্রয়োগ ঘটান, সেটাই দেখার অপেক্ষায় লাখ লাখ বিনিয়োগকারী। এর মধ্যে এ তিন শিক্ষকের অনেক সহকর্মী ও শিক্ষার্থীরাও রয়েছেন।