এবার কোরবানির আগে ভারত থেকে গরু আসবে না

ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

দেশে পবিত্র ঈদুল আজহার আগে এ বছর ভারত থেকে গরু আনা ঠেকাবে সরকার। সীমান্তে ‘বিট খাটালের’ মাধ্যমে গরু আনার অনুমতি এ বছর দেওয়া হয়নি। 

চামড়াশিল্প নিয়ে সরকারের এক টাস্কফোর্সের সভায় আজ সোমবার এ তথ্য জানান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (আনসার ও সীমান্ত) মো. সাহেদ আলী। তিনি বলেন, এবার দেশীয় খামারিরা যাতে গবাদিপশুর ভালো দাম পান, তা নিশ্চিত করতে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

বিট খাটাল হলো একটি খোয়াড়ের মতো স্থান। যেখানে ভারত থেকে আনা গরু জড়ো করা হয়। এরপর শুল্ক কর্মকর্তারা মালিকানাবিহীন দেখিয়ে গরুগুলোকে বাজেয়াপ্ত ঘোষণা করেন।

এটি রাষ্ট্রীয় সম্পদ হিসেবে বাজেয়াপ্ত করার জন্য কাগজে–কলমে সংক্ষিপ্ত বিচার দেখানো হয়। এরপর ‘রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাজেয়াপ্ত’ গরু মাত্র ৫০০ টাকার বিনিময়ে গরু ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করে দেওয়া হয়। বৈধভাবে এটাই গরু আনার ব্যবস্থা। তবে ভারতের কাছে এ ব্যবস্থার কোনো স্বীকৃতি নেই।

২০১৪ সালের মে মাসে ভারতে নরেন্দ্র মোদির সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর সীমান্তে গরু–বাণিজ্য অনেকটাই কমে গেছে। এর আগে বছরে ২০ লাখের বেশি গরু আনার আনুষ্ঠানিক হিসাব ছিল। এদিকে ভারতীয় গরু আনা কমে যাওয়ার পর বাংলাদেশেও গবাদিপশু পালন উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের হিসাবে, বিগত কয়েক বছরে পবিত্র ঈদুল আজহায় দেশে ১ কোটি ১০ লাখের মতো পশু কোরবানি দেওয়া হয়। এর মধ্যে গরু-মহিষ থাকে ৪০ থেকে ৪৫ লাখ। সেটা দেশীয় খামারিদের গরু-মহিষ দিয়েই পূরণের আশা করছে সরকার। এ ছাড়া করোনা পরিস্থিতিতে এ বছর পশু কোরবানির সংখ্যাও কমার আশঙ্কা রয়েছে।

অবশ্য গরুর মাংসের দাম কমে না। বাজারে এখনো এক কেজি গরুর মাংসের দাম ৫৮০ টাকার আশপাশে। ভোক্তা অধিকার সংগঠন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) হিসাবে, ঢাকায় ২০১৪ সালে এক কেজি গরুর মাংসের গড় দাম ছিল ৩০০ টাকা।

এমন পরিস্থিতিতে গরু আসা ঠেকানোর কথা জানাল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

চামড়াশিল্পের উন্নয়নে সুপারিশ প্রদান ও কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন টাস্কফোর্সের সভাটি আজ অনলাইনে অনুষ্ঠিত হয়। এতে শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এবং বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দপ্তরের উচ্চপদস্থ কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।

সভায় সাভারের চামড়াশিল্প নগরের পরিস্থিতি ও আসন্ন ঈদুল আজহায় চামড়া কেনা নিয়ে আলোচনা হয়।

বৈঠকে সালমান এফ রহমান চামড়াশিল্প নগর প্রস্তুত না করেই ট্যানারিগুলোকে জোর করে সাভার পাঠানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেন।