এফডিআই: বাংলাদেশ ব্যাংককে পরামর্শ দিল অর্থ মন্ত্রণালয়

সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগ (এফডিআই) আকর্ষণে নিয়মকানুন সহজ করতে ব্যাংকিং জটিলতা কমাতে বাংলাদেশ ব্যাংককে পরামর্শ দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ গত মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবিরকে এ ব্যাপারে চিঠি দিয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, চীন থেকে অনেক বিদেশি বিনিয়োগ অন্য দেশে চলে যাচ্ছে। এসব বিনিয়োগ দেশে আনতে সরকার উদ্যোগ নিয়েছে। তবে বিনিয়োগকারীরা যাতে তাদের অর্থ-লভ্যাংশ সহজে নিজ দেশে বা অন্যত্র নিয়ে যেতে পারেন, সে জন্য ব্যাংকিং জটিলতা কমানোর জন্য পদক্ষেপ নিতে হবে বাংলাদেশ ব্যাংককে।

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের প্রভাবে বিশ্বব্যাপী অর্থনীতিতে ব্যাপক পরিবর্তন আসছে। চীন থেকে অনেক বিদেশি বিনিয়োগ বা শিল্পপ্রতিষ্ঠান অন্যত্র স্থানান্তরের সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। এ অঞ্চলের অনেক দেশ যেমন ভারত, ভিয়েতনাম ও ইন্দোনেশিয়া এ ধরনের বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে নিজ নিজ দেশের বিনিয়োগসংক্রান্ত আইন, বিধিবিধান, কর-ব্যবস্থা এবং ব্যাংকিং পদ্ধতি সহজতর করছে। দেশগুলোর আইনি কাঠামো, নীতিসহায়তায়, ব্যাংকিং নিয়মনীতি ও পদ্ধতিতে প্রযুক্তির ব্যবহারসহ ব্যাপক পরিবর্তন আনা হয়েছে। চিঠিতে এসব কথা বলা হয়েছে।

আরও বলা হয়েছে, বিদেশি বিনিয়োগকারীরা যাতে অনায়াসে বিনিয়োগের অর্থ-লভ্যাংশ নিজ দেশ বা অন্যত্র নিয়ে যেতে পারেন, সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সব সংস্থা কর্তৃক জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে ব্যাংকিং কার্যক্রমে নিয়মনীতি সহজীকরণ বা যুগোপযোগী করতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৮ জুন অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা যাতে বিনিয়োগের অর্থ-লভ্যাংশ নির্বিঘ্নে নিজ দেশে নিয়ে যেতে পারেন, সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশনা দেন। এ ব্যাপারে সর্বোত্তম ব্যাংকিং সেবা নিশ্চিতকরণের ওপর প্রধানমন্ত্রী গুরুত্বারোপ করেন—এ কথাও গভর্নরকে মনে করিয়ে দেওয়া হয়।

বলা হয়, বাংলাদেশের শ্রমবাজার সহজলভ্য। রাজনৈতিক অবস্থাও স্থিতিশীল। প্রবাসী বাংলাদেশিরা দেশের শিল্প, কৃষি এবং সেবা খাতে বিনিয়োগে অধিক হারে আগ্রহী। আমানতের সুদের হার বিদেশি ব্যাংকের তুলনায় অধিক হওয়ায় দেশীয় ব্যাংকগুলোতে বিভিন্ন সঞ্চয় স্কিমে তাঁরা বিনিয়োগে উৎসাহিত হচ্ছেন। কিন্তু অনেক সময় সঞ্চয় স্কিমের মেয়াদ শেষে অর্থ উত্তোলন এবং প্রবাসে অর্থ প্রত্যাবাসনের সময় তাঁরা ব্যাংকের জটিল প্রক্রিয়ার সম্মুখীন হন, যা অনেক প্রবাসীকে দেশে বিনিয়োগে নিরুৎসাহিত করে।

বিদ্যমান ফরেন এক্সচেঞ্জ রেগুলেশন অ্যাক্ট, ১৯৪৭-কে যুগোপযোগী করার জন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সমন্বয়ে গঠিত কমিটি একটি খসড়া তৈরি করেছে। বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে এই আইনে আর কী কী পরিবর্তন আনা দরকার, সেগুলো অন্তর্ভুক্ত করে দ্রুততম সময়ে আইনটি পাস করাতে হবে বলেও উল্লেখ করা হয়।