বিনিয়োগকারীদের শেয়ার ও অর্থ আত্মসাৎ করে চম্পট

বিনিয়োগকারীদের শেয়ার ও অর্থ আত্মসাৎ করে পালিয়ে গেছেন দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সদস্যভুক্ত একটি ব্রোকারেজ হাউজের মালিকেরা। ক্রেস্ট সিকিউরিটিজ নামের ওই প্রতিষ্ঠান ও তার তিন পরিচালকের সব ব্যাংক হিসাব জব্দের নির্দেশ দিয়েছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ও ডিএসই কর্তৃপক্ষ।

বিএসইসির পক্ষ থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার ব্যাংক হিসাব জব্দের নির্দেশনা–সংক্রান্ত চিঠি বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী ও সংশ্লিষ্ট শাখাপ্রধানের কাছে পাঠানো হয়। নিয়ম অনুযায়ী, শেয়ারবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে বিএসইসি কোনো গ্রাহকের ব্যাংক হিসাব জব্দ করতে পারে না। বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে সেই কাজটি করে থাকে বিএসইসি।

তবে ব্রোকারেজ হাউসটি থেকে যাতে আর কোনো শেয়ারের লেনদেন হতে না পারে সে জন্য এটির ডিপি (ডিপজিটরি পার্টিসিপেন্ট) হিসাব স্থগিত করে দেওয়া হয়েছে। এই ডিপি হিসাবের মাধ্যমে শেয়ারের কেনাবেচার কাজটি নিষ্পন্ন হয়। শেয়ারবাজারেরই প্রতিষ্ঠান সেন্ট্রাল ডিপজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেড বা সিডিবিএলের মাধ্যমে এই লেনদেনটি হয়ে থাকে। সিডিবিএল বিএসইসির নিয়ন্ত্রণাধীন প্রতিষ্ঠান।

>

বিনিয়োগকারী শেয়ার বিক্রি করে টাকা মেরে কার্যালয় ও বাসায় তালা ঝুলিয়ে দিয়ে উধাও ক্রেস্ট সিকিউরিটিজের মালিকেরা

ডিএসই সূত্রে জানা গেছে, প্রতিষ্ঠানটি বেশ কিছু বিনিয়োগকারীর শেয়ার বিক্রি করে দিয়ে অর্থ আত্মসাৎ করে পালিয়ে গেছে বলে অভিযোগ করেন কয়েকজন বিনিয়োগকারী। একই সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটি ডিএসইতে লেনদেন নিষ্পন্ন করতে ব্যর্থ হয়। বিনিয়োগকারীদের অভিযোগ ও লেনদেন নিষ্পন্ন করার ক্ষেত্রে ব্যর্থ হওয়ার ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে ডিএসইর প্রতিষ্ঠানটির কার্যালয় ও মালিকের ঠিকানায় সরেজমিনে পরিদর্শন করে। এ সময় তারা কার্যালয় ও মালিকের ধানমন্ডির বাসা তালাবদ্ধ পায়। পরে তাৎক্ষণিকভাবে ডিএসইর পক্ষ থেকে বিষয়টি নিয়ন্ত্রক সংস্থাকেও জানানো হয়। এরপর বিএসইসি ও ডিএসই মিলে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়।

জানতে চাইলে ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী সানাউল হক প্রথম আলোকে বলেন, প্রতিষ্ঠানটির তিন পরিচালকের সব ব্যাংক হিসাব জব্দের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। তাঁরা যাতে দেশ ছেড়ে পালাতে না পারেন, সে জন্য সংশ্লিষ্ট সব কর্তৃপক্ষকেও বিষয়টি জানানো হয়েছে। গ্রাহকের কত টাকা আত্মসাৎ করেছেন, এ বিষয়ে জানতে চাইলে সানাউল হক বলেন, ‘এখনো এ বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ কোনো তথ্য আমাদের হাতে নেই।’

ডিএসই সূত্রে জানা গেছে, সর্বশেষ ২১ জুন প্রতিষ্ঠানটি ডিএসইতে লেনদেন করে। রাজধানীর পল্টনে প্রধান কার্যালয়ের বাইরে নারায়ণগঞ্জ ও কুমিল্লায় ব্রোকারেজ হাউসটির শাখা রয়েছে। বর্তমান এটির সব কার্যক্রম বন্ধ আছে।