বাংলাদেশ ব্যাংকের উপদেষ্টা কাজেমী মারা গেছেন

আল্লাহ মালিক কাজেমী
আল্লাহ মালিক কাজেমী

বিশিষ্ট ব্যাংকার ও বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিবর্তন ব্যবস্থাপনা উপদেষ্টা আল্লাহ মালিক কাজেমী আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। আজ শুক্রবার বিকেল ৫ টা ০৬ মিনিটে রাজধানীর এভার কেয়ার হাসপাতালে ( সাবেক অ্যাপোলো) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। তাঁর বয়স হয়েছিল ৭২ বছর।

আল্লাহ মালিক কাজেমীর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, কয়েক দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর আজ বিকেলে আল্লাহ মালিক কাজেমী মারা গেছেন। পারিবারিকভাবে তাঁর দাফন সম্পন্ন হবে।

বিশিষ্ট এই ব্যাংকার হৃদ্‌যন্ত্রের জটিলতা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। এরপর গত মঙ্গলবার তাঁর করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। এরপর থেকে সেখানেই চিকিৎসা নিচ্ছিলেন।

জানা যায়, আল্লাহ মালিক কাজেমী ১৯৭৬ সালে বাংলাদেশ ব্যাংকে যোগদান করেন। এরপর ২০০২ সাল থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর পদে থেকে নিয়মিত চাকরি শেষ করেন। ২০০৮ সালে তাঁকে চুক্তিভিত্তিক উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এরপর কয়েক দফায় মেয়াদ বেড়ে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি ওই পদেই বহাল ছিলেন। বৈদেশিক বাজার ও মুদ্রা ব্যবস্থাপনা, তারল্য ব্যবস্থাপনা, মুদ্রানীতি প্রণয়নসহ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাঁর বিচরণ ছিল। ব্যাংক খাতের যে কোনো সমস্যা, নতুন নীতি প্রণয়নে তিনি পরামর্শ দিয়ে আসছিলেন। শুধু কেন্দ্রীয় ব্যাংক নয়, বাণিজ্যিক ব্যাংক ও ব্যবসায়ীরাও তাঁর কাছে বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ নিতেন।

আল্লাহ মালিক কাজেমীর মৃত্যুতে বিবৃতিতে সাবেক গভর্নর আতিউর রহমান বলেছেন, কাজেমী ভাই শুধু একজন নিপাট ভলো মানুষ ও দক্ষ কেন্দ্রীয় ব্যাংকারই ছিলেন না। ছিলেন একটি প্রতিষ্ঠান। কি গভীর ছিল তাঁর বহু মাত্রিক জ্ঞানের ভান্ডার তা অনেকেরই অজানা।কেন্দ্রীয় ব্যাংকিং ও আর্থিক থাত বিষয়ক এক চলন্ত এনসাইক্লোপিডিয়া আল্লাহ মালিক কাজেমী এ সময়টায় চলে যাবার কারনে যে শূন্যতা তেরি হলো তা পূরন হবার নয়। বিশেষ করে করোনা সংকট থেকে আমাদের অর্থনীতিকে পুনরুদ্ধারের এই দু:সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের জন্য তাঁর প্রাজ্ঞ পরামর্শ কতোটা প্রয়োজনীয় ছিল তা বলে শেষ করা যাবে না। আমি ব্যক্তিগত ও পেশাগত ভাবে তাঁর কাছে কি পরিমান ঋনী তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারছি না।বৈদেশিক মুদ্রা বিষয়ে তাঁর জ্ঞানের কোনো সীমা পরিসীমা ছিল না। আমার মতে বাংলাদেশের ইতিহাসে এমন পারদর্শী ও প্রজ্ঞাবান কেন্দ্রীয় ব্যাংকার আর একজনও আসেন নি। তিনি যে ব্যক্তিগত  ও পেশাদারিত্বের আদর্শ রেখে গেছেন তা অনুসরণ করাই হবে তাঁর প্রতি সর্বোচ্চ শ্রদ্ধা প্রদর্শনের সামিল।