অর্থমন্ত্রী জেনেশুনে কঠিনকে ভালোবাসলেন

আ হ ম মুস্তফা কামাল । ফাইল ছবি
আ হ ম মুস্তফা কামাল । ফাইল ছবি

রবীন্দ্রনাথের ‘শেষ লেখা’ কাব্যগ্রন্থের ‘রূপ নারানের কূলে’ কবিতার বিখ্যাত উক্তিটি সামনে তুলে আনলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। রবীন্দ্রনাথের উক্তিটি হচ্ছে, ‘সত্য যে কঠিন, কঠিনেরে ভালোবাসিলাম, সে কখনো করে না বঞ্চনা।’

স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর উদ্দেশে ওই উক্তি একটু এদিক-সেদিক করে অর্থমন্ত্রী বললেন, ‌‌‌‘সত্য যে বড় কঠিন, তাই সব জেনেশুনে আমরা এই কঠিনকেই ভালোবেসেছি।’

আজ সোমবার জাতীয় সংসদে ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেট আলোচনার ওপর সমাপনী বক্তব্য দিতে গিয়ে অর্থমন্ত্রী এ কথা বলেন। সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

অর্থমন্ত্রী কঠিনকে ভালোবাসার প্রসঙ্গটি সামনে আনেন এবারের বাজেট সমাজের সব শ্রেণির মানুষের জন্য করতে গিয়ে তাঁকে যে কঠিন চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে হয়েছে, সে কথা বলতে গিয়ে। মুস্তফা কামাল বলেন, কৃষক, শ্রমিক, চা-পানের দোকানদার থেকে শুরু করে সমাজের সব শ্রেণির মানুষের জন্যই এবারের বাজেটটি তিনি করেছেন। দেশের কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীকে বাজেট থেকে তিনি বাদ দিতে পারেননি। কাউকে বাদ দিতে পারলে তিনি অবশ্যই বাজেটের আকার ছোট রাখতে পারতেন, এমনকি বাজেট ঘাটতিও ছোট রাখতে পারতেন। ‌

গত ১১ বছরে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) আকার তিন গুণ বেড়েছে উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী স্বীকার করেন, ‘দেশের কর-জিডিপির অনুপাত অনেক কম, ১০ শতাংশেরও নিচে। অথচ আমাদের মতো দেশগুলোর কারোরই তা ১৮ শতাংশের নিচে না। ১৪ শতাংশে উঠতে পারলেও বছরে ১ লাখ ২০ হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত আসবে। এ জন্য কর ব্যবস্থায় স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতি (অটোমেশন) দরকার।’

অর্থমন্ত্রী বলেন, গত বছর অটোমেশন শুরু করলেও শেষ করতে পারেননি। করোনার জন্যই তা শেষ হয়নি। তিনি বিশ্বাস করেন, যত দ্রুত সম্ভব এ বছর তা বাস্তবায়ন করতে পারবেন।

অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, আগামী বাজেট বাস্তবায়ন করা যাবে। ১১ জুন সংসদে বাজেট উপস্থাপনের ৭ দিন পরই এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি নিয়ে আরেকটি গবেষণা করে। সেখানে এডিবি বলেছে, এ বছর বাংলাদেশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করবে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ, যা বাংলাদেশের প্রক্ষেপণ ৮ দশমিক ২ শতাংশের কাছাকাছি।

এডিবির এই প্রাক্বলনের উদাহরণকে তুলে ধরলেও সম্প্রতি বিশ্বব্যাংক যে বলেছে চলতি অর্থবছরে জিডিপির প্রবৃদ্ধির হার হবে ১ শতাংশ, সেটি আর উল্লেখ করেননি অর্থমন্ত্রী।

আগামী ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকার বাজেট পেশ করেন অর্থমন্ত্রী। কাল মঙ্গলবার এ বাজেট পাস হলে পরদিন বুধবার কার্যকর হবে।