জুনে যুক্তরাষ্ট্রের ৪৮ লাখ মানুষ কাজ পেয়েছেন

করোনার বিরূপ প্রভাবে দেখা দেওয়া মন্দায় মার্চ–এপ্রিল দুই মাসে লাখো মানুষ তাদের কাজ হারিয়ে ফেলার পর মে মাস থেকে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে মার্কিন শ্রমবাজার। ছবি: রয়টার্স
করোনার বিরূপ প্রভাবে দেখা দেওয়া মন্দায় মার্চ–এপ্রিল দুই মাসে লাখো মানুষ তাদের কাজ হারিয়ে ফেলার পর মে মাস থেকে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে মার্কিন শ্রমবাজার। ছবি: রয়টার্স

যুক্তরাষ্ট্রে জুনে রেকর্ডসংখ্যক ৪৮ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। ১৯৩৯ সাল থেকে কর্মসংস্থানের হিসেব রেকর্ড করে মার্কিন শ্রমবিভাগ। সেই সময় থেকে এই পর্যন্ত এটিই সর্বোচ্চ। বিবিসি অনলাইনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

করোনার বিরূপ প্রভাবে দেখা দেওয়া মন্দায় মার্চ–এপ্রিল দুই মাসে লাখো মানুষ তাদের কাজ হারিয়ে ফেলার পর মে মাস থেকে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে মার্কিন শ্রমবাজার। মে মাসে ২৫ লাখ নতুন কর্মসংস্থান হয়। এবার একেবারে ৪৮ লাখ কর্মসংস্থান হয়েছে।মূলত প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে নেওয়া লকডাউন উঠে যাওয়ায় বিভিন্ন সংস্থা কর্মী নিতে শুরু করায় কর্মসংস্থান বেড়েছে। এর আগে অর্থনীতিবিদেরা আশা করছিলেন, জুনে ৩০ লাখ নতুন কর্মসংস্থান যুক্ত হবে। তবে সেই প্রত্যাশার তুলনায় অনেক বেশি কর্মসংস্থান হয়েছে।

এই পরিসংখ্যানে ব্যাপক সন্তুষ্ট মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। কর্মসংস্থানের এই বৃদ্ধিকে 'চমতকার' বলে অভিহিত করেছেন তিনি। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র প্রমাণ করেছেন যে অর্থনীতি 'গর্জে উঠছে'।

মার্কিন শ্রম বিভাগ জানিয়েছে, অবসর ও আতিথেয়তা খাতে ২০ লাখের বেশি কর্মসংস্থান তৈরি হয়েছে এবং খুচরাভাবে যুক্ত হয়েছে প্রায় সাড়ে সাত লাখ মানুষ। স্বাস্থ্যসেবা খাতে কর্মসংস্থান ৫ লাখ ৬৮ হাজার বেড়েছে। কারখানাগুলো পুনরায় চালু হওয়ায় তিন লাখ ৫৬ হাজার কর্মসংস্থান বেড়েছে। গাড়ি শিল্পে ১ লাখ ৯৫ হাজার কর্মসংস্থান তৈরি হয়েছে।

তবে শ্রমবিভাগের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, জুনের শেষে সপ্তাহে কর্মসংস্থানের গতি কিছুটা কমে এসেছিল। যা কিছুটা আশঙ্কার। অক্সফোর্ডের অর্থনীতিবিদেরা এটিকে উদ্বেগজনক বলে অভিহিত করেছেন। কারণ, বর্তমানে করোনার সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলা করছে যুক্তরাষ্ট্র।

সরকারের সুরক্ষা কর্মসূচির আওতায় ব্যবসায়ীদের ঋণ প্রদান করায় গত দুই মাসে কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে উৎসাহ বাড়িয়েছে। তবে ক্যাপিটাল ইকোনমিকসের জ্যেষ্ঠ মার্কিন অর্থনীতিবিদ মাইকেল পিয়ার্স বলেন, এখান থেকে পুনরুদ্ধার অনেকটা কঠিন হবে। তবে ধীরে ধীরে সবাই চাকরি পাবে।

মুডি অ্যানালিটিকসের অর্থনীতিবিদ সোফিয়া কোরোপেকিজ বলেন, জুনের কর্মসংস্থান বৃদ্ধি অর্থনীতির 'অম্নমধুর' অবস্থা। কারণ সংক্রমণের হার বৃদ্ধি পাওয়ায় অর্থনীতির 'ভি-শেপ' পুনরুদ্ধারের সম্ভাবনা কমিয়ে দিচ্ছে। তিনি আশঙ্কা করছেন যে এই ঘুরে দাঁড়ানো কর্মসংস্থানের সাফল্য তেমনভাবে নেওয়া যাবে না—যতক্ষণ না কোনো ভ্যাকসিন ব্যাপকভাবে পাওয়া যাচ্ছে।