ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে অস্থায়ী ৫ পশুর হাট

ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে পাঁচটি অস্থায়ী পশুর হাট বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। সংস্থাটি বলছে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে এসব হাট পরিচালনা করা হবে।

করোনা পরিস্থিতিতে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর ও চট্টগ্রাম শহরে অস্থায়ী পশুর হাট না বসানোর সুপারিশ করেছিল করোনাসংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি।

ডিএসসিসি কর্মকর্তারা জানান, গত ১৪ জুন ১৪টি অস্থায়ী পশুর হাট ইজারা দিতে গণমাধ্যমে দরপত্র আহ্বান করা হয়। দরপত্র জমা পড়ার পর ২ জুলাই তিনটি ও গতকাল রোববার আরও দুটি হাটের ইজারা চূড়ান্ত করা হয়।

সংস্থার সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, শহরের ভেতরে হাট বসানো হলেও স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করার ওপর তাঁরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছেন। এ জন্য সরকার–নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি টাকা পাওয়া গেলেও পাঁচটি হাটের ইজারা চূড়ান্ত করেননি তাঁরা।

ডিএসসিসি সূত্র জানায়, উত্তর শাহজাহানপুর খিলগাঁও রেলগেট বাজারের মৈত্রী সংঘের মাঠসংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা, হাজারীবাগে ইনস্টিটিউট অব লেদার টেকনোলজির মাঠসংলগ্ন উন্মুক্ত এলাকা, পোস্তগোলা শশ্মানঘাটসংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা, লিটল ফ্রেন্ডস ক্লাবসংলগ্ন গোপীবাগ বালুর মাঠ ও কমলাপুর স্টেডিয়ামসংলগ্ন বিশ্বরোডের আশপাশের খালি জায়গা এবং আফতাব নগর (ইস্টার্ন হাউজিং) ব্লক-ই, এফ, জি, এইচ ও সেকশন-১ ও ২–এর খালি জায়গায় হাটগুলো বসবে।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনও (ডিএনসিসি) মাসখানেক আগে গাবতলীর স্থায়ী হাট বাদে ১০টি অস্থায়ী হাট ইজারা দিতে দরপত্র আহ্বান করে। পরে করোনা পরিস্থিতিতে কম জনবহুল স্থানে ছয়টি পশুর হাট বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংস্থাটি।

>১৪টি অস্থায়ী পশুর হাট ইজারা দিতে দরপত্র আহ্বান করেছিল ডিএসসিসি। তবে করোনার কারণে সংখ্যা কমানো হয়েছে।

গত ১৩ জুন করোনা প্রতিরোধে গঠিত কেন্দ্রীয় কারিগরি কমিটি ঢাকার উত্তর ও দক্ষিণ সিটির ৪৫টি এলাকাকে ‘রেড জোন’ হিসেবে চিহ্নিত করে। এর মধ্যে উত্তরের ১৭টি ও দক্ষিণের ২৮টি এলাকা রয়েছে। দক্ষিণ সিটির খিলগাঁওয়ের শাহজাহানপুরও ‘রেড জোন’। এ এলাকায়ও বসছে অস্থায়ী পশুর হাট।

এ প্রসঙ্গে শাহজাহানপুরের বাসিন্দা আমানুল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, ‘রেড জোন’ হিসেবে চিহ্নিত এলাকাগুলোর মধ্যে শাহজাহানপুরও আছে। এ এলাকায় যাতে পশুর হাট না বসানো হয়, সে জন্য তাঁরা মানববন্ধন করেছেন। কিন্তু এরপরও এখানে বাজার বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সুপারিশ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ডিএসসিসির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা রাসেল সাবরিন প্রথম আলোকে বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনেই তাঁরা হাট পরিচালনা করবেন। করপোরেশনের স্বাস্থ্য বিভাগ ইতিমধ্যে একটি নীতিমালা তৈরি করেছে। হাটের ইজারাদারদের নীতিমালা মেনে হাট পরিচালনা করতে হবে।

ডিজিটাল হাট চালুর কোনো সিদ্ধান্ত আছে কি না, এ প্রশ্নের জবাবেএই কর্মকর্তা বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে বিষয়টি চূড়ান্ত করা হবে।

এ প্রসঙ্গে জানতে ডিএসসিসির হাট-বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও সংস্থার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ মো. ইমদাদুল হকের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ধরেননি।

আর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সাবেক উপাচার্য নজরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ঘনবসিতপূর্ণ এলাকায় হাট বসানো হলে যথাযথভাবে ব্যবস্থাপনা করা কঠিন। কারণ, সেখানে অনেক লোকজন যাবেন। স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করা কঠিন হবে। তিনি আরও বলেন, ‘হাটে সামাজিক দূরত্ব মানা হলে, মাস্ক ব্যবহার করলে সংক্রমণ কম হবে। কিন্তু এসব মানার নিশ্চয়তা কে দেবে?’