কর্মসৃজনে চার প্রতিষ্ঠানের জন্য ১ হাজার কোটি টাকা ছাড়

অর্থ মন্ত্রণালয়
অর্থ মন্ত্রণালয়

টাকার অভাবে যাঁরা বিদেশে যেতে পারছেন না, অথবা করোনার কারণে ছোট ব্যবসায়ে মার খেয়েছেন—তাঁদের স্বল্প সুদে ঋণ দিতে চার প্রতিষ্ঠানকে সরকার ১ হাজার কোটি টাকা দিয়েছে। 

পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক, প্রবাসীকল্যাণ ব্যাংক, কর্মসংস্থান ব্যাংক ও পল্লী কর্ম–সহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) জন্য ২৫০ কোটি টাকা করে ছাড় করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ। এ টাকা বাজেট থেকে একবারে দিয়ে দেওয়া হয়েছে।

করোনার ক্ষতি পোষাতে সরকারঘোষিত ১ লাখ ৩ হাজার ১১৭ কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজে কর্মসৃজন কর্মসূচির নামে ২ হাজার কোটি টাকা রাখা হয়েছে। এ বরাদ্দ থেকেই আপাতত চার প্রতিষ্ঠানের জন্য ১ হাজার কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। পরে আবার তাদের সমপরিমাণ টাকা দেওয়া হবে।

কৃষি ও কৃষিসংশ্লিষ্ট উৎপাদন ও সেবা, ক্ষুদ্র ব্যবসা, ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প ইত্যাদি খাতের গ্রামের দরিদ্র কৃষক, বিদেশফেরত প্রবাসী শ্রমিক এবং প্রশিক্ষিত বেকার ও তরুণ যুবকদের ঋণ দিতেই এ প্যাকেজ হাতে নেয় সরকার। গ্রামে আত্মকর্মসংস্থানমূলক কাজে নিয়োজিতরা এ প্যাকেজ থেকে ঋণ সুবিধা পাবেন।

প্রবাসীকল্যাণ ব্যাংক সাধারণত ঋণ দেয় বিদেশগামীদের। এবার যাঁরা বিদেশ থেকে এসে করোনার কারণে আর ফিরে যেতে পারছেন না, তাঁদেরও দেওয়া হবে এই ঋণ।

জানতে চাইলে প্রবাসীকল্যাণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মাহতাব জাবিন প্রথম আলোকে বলেন, চিঠি এখনো পাননি। তবে সব প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন তাঁরা। নারীদের ঋণ দেওয়ার ব্যাপারে বেশি আয়োজন থাকলেও নারীরা খুব বেশি আসেন না বলে জানান মাহতাব জাবিন।

কর্মসংস্থান ব্যাংক ঋণ দেয় সাধারণত বেকার, প্রশিক্ষিত ও আত্মকর্মসংস্থানমূলক কাজের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের। ব্যাংকটির ২০ হাজার থেকে ৫ লাখ টাকার পর্যন্ত কোনো জামানতও লাগে না। জানতে চাইলে কর্মসংস্থান ব্যাংকের এমডি তাজুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা একটা কর্মপরিকল্পনা করে রেখেছি। টাকা পাওয়ার পরই ঋণ বিতরণে বেশি মনোযোগী হব।’

পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকও জামানতবিহীন ছোট ছোট ঋণ দিয়ে থাকে। জানা গেছে, ব্যাংকটির পর্ষদ এরই মধ্যে সিদ্ধান্ত নিয়ে রেখেছে ৫০ শতাংশ টাকা দেওয়া হবে একবারে নতুন ঋণগ্রহীতাদের। আর বাকি ৫০ শতাংশ টাকা দেওয়া হবে যাঁরা আগে ঋণ নিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত তাঁদের।

জানতে চাইলে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের এমডি আকবর হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা চিঠি এবং টাকা পাওয়ার অপেক্ষায়। সবকিছু গুছিয়ে রেখেছেন। টাকা হাতে পেলে কর্মসৃজন কর্মসূচির ঋণ কার্যক্রম হাতে নেবেন।
পিকেএসএফ সাধারণত ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানগুলোকে ঋণ দিয়ে থাকে। এই ২৫০ কোটি টাকাও সংস্থাটি সরাসরি ঋণ দেবে না। দেবে কয়েকটি ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানকে। সেসব প্রতিষ্ঠানই ঋণ দেবে গ্রাহকদের।

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর প্রথম আলোকে বলেন, পিকেএসএফের অভিজ্ঞতাটা ভালো। অন্যদের একটু সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। কারণ, অনেক দালাল থাকে। তাদের খপ্পরে পড়লে ব্যাংক-গ্রাহক উভয় পক্ষই ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। আহসান মনসুর মনে করেন, প্রথম দফায় ২০ বা ৫০ কোটি টাকা ঋণ দেওয়ার পর একটি রিভিউ করা দরকার। যদি এমন হয় যে পিকেএসএফ–ই ভালো করছে, তখন যেন অন্যদের জন্য রাখা বরাদ্দ কেটে পিকেএসএফ–কে দিয়ে দেওয়া যায়।