মিথ্যাকে 'সত্য' দাবি করল কেপিপিএল কর্তৃপক্ষ

এবার সংবাদ সম্মেলন করে ‘মিথ্যা তথ্য’কে সত্য বলে দাবি করল খুলনা প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং লিমিটেড (কেপিপিএল) কর্তৃপক্ষ। কোম্পানিটির চেয়ারম্যান এস এম আমজাদ হোসেন বলেছেন, কোম্পানিটি অত্যন্ত লাভজনক প্রতিষ্ঠান। প্রাক-আইপিও প্লেসমেন্টের মাধ্যমে টাকা তোলার সুযোগ থাকলেও বিনিয়োগকারীদের কথা চিন্তা করে তিনি এটির অধিকাংশ শেয়ার বিক্রি করে দিচ্ছেন।
সংবাদ সম্মেলন মঞ্চে কোম্পানির চেয়ারম্যানের সঙ্গে ছিলেন ইস্যু ব্যবস্থাপক সোনালি ইনভেস্টমেন্টের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আলী এরশাদ ও আইপিওর প্রক্রিয়ায় প্রযুক্তি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান সেটকমের স্বদেশ রঞ্জন সাহা। কোম্পানির পাশাপাশি এই দুজনও তাঁদের বক্তব্য দেন।
গত ৩০ এপ্রিল প্রথম আলোতে প্রকাশিত ‘মিথ্যা তথ্যে ৪০ কোটি টাকা তোলার প্রস্তাব’ শীর্ষক সংবাদের পরিপ্রেক্ষিতেই মূলত এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। রাজধানীর সেগুনবাগিচার একটি রেস্তোরাঁয় আজ শনিবার এই সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। তবে এতে গুটিকয়েক সংবাদমাধ্যমের সাংবাদিক ছাড়া কোম্পানির স্বার্থসংশ্লিষ্ট লোকজনের উপস্থিতিই ছিল চোখে পড়ার মতো। ওই রেস্তোরাঁ ভবনে আবার কোম্পানিটির ঢাকা কার্যালয়ও অবস্থিত।
সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়, কোম্পানির ওয়েবসাইটটি হ্যাকড হওয়ায় ঠিকানা পরিবর্তন করা হয়েছে। আর চার পরিচালকের স্থায়ী ঠিকানাও কোম্পানির ঠিকানায় দেখানোর ব্যাখ্যায় বলা হয়, ওই চারজনই মনোনীত পরিচালক। তাই যোগাযোগের সুবিধার্থে কোম্পানির ঠিকানাকে তাঁদের ঠিকানা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
কোম্পানির লাভ-লোকসানের হিসাবসংক্রান্ত বিবরণীতে উল্লেখিত তথ্যের বিষয়ে বলা হয়, প্রায় ১০৩ কোটি টাকার পণ্য বিক্রি করলে কোম্পানিটির লাভ-লোকসান সমান সমান হয়। মুদ্রণজনিত ভুলে প্রসপেক্টাসে ১০৩ কোটি টাকার হিসাব ১ কোটি ৩ লাখ টাকা হয়ে গেছে।
উল্লেখ্য, ১০৩ কোটি টাকায় লাভ-লোকসান সমান সমান বলা হলেও ২০০৯ সালে প্রায় ১১ কোটি ও ২০১০ সালে ৩৪ কোটি টাকার বিপরীতে কোম্পানিটির যথাক্রমে সাড়ে ছয় লাখ ও তিন কোটি টাকার বেশি মুনাফা দেখানো হয়েছে বিবরণীতে।
সংবাদ সম্মেলনের পর কোম্পানির খুলনা কার্যালয়ের সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। প্রসপেক্টাসে উল্লেখিত খুলনার কার্যালয়ের তিনটি নম্বরে (০৪১-৭২০৩১৮, ৭২২৩৪৭,৭৩৩৯৪২) যোগাযোগের চেষ্টা করে সেগুলো বিকল পাওয়া যায়। এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে কোম্পানির চেয়ারম্যানের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
এদিকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে শেয়ারবাজার থেকে আইপিওতে ৪০ কোটি টাকা তুলতে যাচ্ছে কেপিপিএল। আগামীকাল রোববার থেকে কোম্পানিটির আইপিওর চাঁদা সংগ্রহ শুরু হওয়ার কথা।