বাংলাদেশ-ভারত ধানবীজ বাণিজ্য হোক আনুষ্ঠানিকভাবে

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ধানবীজের বাণিজ্য আনুষ্ঠানিকভাবে বা বৈধ পথে বাড়ানোর ও ধানবীজ বিষয়ে দুই দেশের মধ্যে তথ্য আদান-প্রদানের সুপারিশ করা হয়েছে৷ বর্তমানে অনানুষ্ঠানিকভাবে দুই দেশের মধ্যে ধানবীজের যে বাণিজ্য চলছে, তা আনুষ্ঠানিক রূপ দিলে দুই দেশের মধ্যে অন্তত দুই কোটি ডলারের বাণিজ্য বৃদ্ধি পাবে বলেও মনে করা হচ্ছে৷
ভারতের গবেষণাপ্রতিষ্ঠান কনজ্যুমার ইউনিটি ট্রাস্টস (কাটস) ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান উন্নয়ন সমন্বয়ের সহযোগিতায় বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ধানবীজ বাণিজ্যের প্রতিবন্ধকতা চিহ্নিতকরণ ও অপসারণ বিষয়ে একটি গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করছে৷ এই গবেষণাকাজের অগ্রগতি ও ফলাফল তুলে ধরে যে যৌথ ঘোষণাপত্র প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে এসব সুপারিশ করা হয়েছে৷
এতে বলা হয়েছে, দুই
দেশের সীমান্তসংলগ্ন এলাকায় অনানুষ্ঠানিকভাবে উচ্চফলনশীল (উফশী) ধানবীজের বাণিজ্য অনেক দিন ধরেই পরিলক্ষিত হচ্ছে৷ অথচ এই বাণিজ্য আনুষ্ঠানিক বা বৈধ রূপ দেওয়ার জন্য কোনো দেশেরই আগ্রহ নেই৷ বস্তুত বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ধানবীজ নিয়ে পারস্পরিক সহযোগিতা নেই বললেই চলে৷ ধানবীজ বিষয়ে দুই দেশ পরস্পরের সঙ্গে তথ্য আদান-প্রদান করে না, জ্ঞান বিনিময়েরও কোনো প্রয়াস নেই৷
একটি নির্দিষ্ট জাতের ধানবীজ উদ্ভাবন যথেষ্ট সময় ও ব্যয়সাপেক্ষ বিষয়৷ আর এতে মেধাস্বত্ব ও রয়্যালটির বিষয়টিও জড়িত৷ এসব কারণেই বাংলাদেশ বা ভারত কেউই এ বিষয়ে তথ্য আদান-প্রদানে বা সহযোগিতায় আগ্রহী হয় না৷
যৌথ ঘোষণাপত্রে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিআরআরআই) ও বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) এবং ভারতের কেন্দ্রীয় ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (সিআরআরআই) ও ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব এগ্রিকালচারাল রিসাচের্র (আইসিএআর) মধ্যে যোগাযোগ ও সহযোগিতা বাড়ানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে৷
উল্লেখ্য, এ গবেষণায় মাঠপর্যায়ের জরিপ প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, বর্তমানে ভারত সীমান্তঘেঁষা দিনাজপুর, লালমনিরহাট, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, কুষ্টিয়া ও যশোর জেলায় ভারত থেকে অবৈধ পথে ধানবীজ আসছে৷ বাংলাদেশের চাষিরা গুটি স্বর্ণা, স্বর্ণা ও রঞ্জিত নামের ধানবীজ ব্যবহার করছেন৷
অন্যদিকে, বাংলাদেশের ব্রি-১১ ও হীরা জাতের ধানবীজ ভারতের পশ্চিমবঙ্গে বেশ জনপ্রিয়৷ সেখানকার দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার চাষিরা ব্রি-১১ জাতের ধানবীজ ব্যবহার করছেন৷ বিহারে বাংলাদেশের বিআর-১২ প্রজাতির ধান জনপ্রিয়তা পেয়েছে৷