চীনের তুলনায় ভারত থেকে আমদানি বেড়েছে বেশি হারে

.
.

বাংলাদেশের আমদানির প্রধান উৎস দেশ চীন। এরপর ভারত। তবে গত অর্থবছরে চীন থেকে যে হারে পণ্য আমদানি বেড়েছে, তার চেয়ে বেশি হারে বেড়েছে ভারত থেকে। বাংলাদেশ ব্যাংক আমদানির যে হালনাগাদ উপাত্ত প্রকাশ করেছে, তা থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
এতে দেখা যায় যে ২০১৩-১৪ অর্থবছরে চীন থেকে পণ্য আমদানির জন্য ব্যয় হয়েছে ৭৫৪ কোটি ৪৯ লাখ ডলার। আর তার আগের বছর এই আমদানি ব্যয়ের পরিমাণ ছিল ৬৩০ কোটি ৭৬ লাখ ডলার। তার মানে এক বছরে চীন থেকে আমদানি বেড়েছে প্রায় সাড়ে ১৯ শতাংশ।
অন্যদিকে একই সময়ে ভারত থেকে পণ্য আমদানি বেড়েছে ২৭ দশমিক ৩২ শতাংশ। ২০১২-১৩ অর্থবছরে যেখানে ৪৭৪ কোটি ডলারের পণ্য আমদানি হয়েছিল, সেখানে গত অর্থবছরের তা বেড়ে হয়েছে ৬০৩ কোটি ৬১ লাখ ডলার।
তবে ভারত থেকে আমদানি বৃদ্ধির হার বেশি হলেও দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের ঘাটতি চীনের সঙ্গে এখনো অনেক বেশি।
গত অর্থবছরে চীনে বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭৪ কোটি ৬১ লাখ ডলার। তার আগের বছর ছিল ৪৫ কোটি ৮১ লাখ ডলার। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) এই তথ্যানুসারে, এক বছরে চীনে বাংলাদেশ থেকে পণ্য রপ্তানি প্রায় ৬৩ শতাংশ বেড়েছে।
যদিও গত অর্থবছরে চীনে রপ্তানি অনেক বেশি বেড়েছে, তার পরও দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যে ঘাটতি বেড়ে হয়েছে ৬৭৯ কোটি ৮৮ লাখ ডলার। ২০১২-১৩ অর্থবছরের ঘাটতি ছিল ৫৮৫ কোটি ৫৮ লাখ ডলার। তার মানে এক বছরের ব্যবধানে চীনের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি বেড়েছে ১৬%।
চীন বাংলাদেশকে প্রায় পাঁচ হাজার পণ্যে অগ্রাধিকারমূলক প্রবেশাধিকার দিয়েছে। এসব পণ্য বর্তমানে চীনের মোট আমদানির ৬০ শতাংশ। ২০১০ সাল থেকে চীন ক্রমাগত এই সুবিধা বাড়িয়েছে। এসব পণ্যে ৩৫ শতাংশ স্থানীয় মূল্য সংযোজনের শর্তে শুল্কমুক্ত সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। আর এই সুবিধা দেওয়া হয়েছে এশীয় প্রশান্ত মহাসাগরীয় বাণিজ্য চুক্তির (আপটা) আওতায়।
তবে একই সময়ে ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যে ঘাটতি বেড়েছে ৩৩ শতাংশ। ২০১২-১৩ অর্থবছরে যেখানে ৪১৭ কোটি ৬৮ লাখ ডলারের বাণিজ্য ঘাটতি ছিল, সেখানে তা গত অর্থবছর বেড়ে হয়েছে ৫৫৭ কোটি ৪১ লাখ ডলার।
ভারত শতভাগ শুল্কমুক্ত বাজারসুবিধা প্রদান করার পরও বাংলাদেশ থেকে ভারতে রপ্তানি কাঙ্ক্ষিত হারে বাড়েনি। গত ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ভারতে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানি ২৩ শতাংশ কমে গেছে। ওই বছর ভারতে পণ্য রপ্তানি থেকে আয় হয়েছে ৪৫ কোটি ৬৬ লাখ ডলার। আর ২০১২-১৩ অর্থবছরে এই রপ্তানি আয়ের পরিমাণ ছিল ৫৬ কোটি ৩৯ লাখ ডলার।ৎ
২০১১ সালের নভেম্বর মাসে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং দক্ষিণ এশিয়ার স্বল্পোন্নত দেশগুলোর জন্য ভারতের স্পর্শকাতর পণ্য তালিকা ৪৮০টি থেকে কমিয়ে ২৫টিতে নামিয়ে আনার ঘোষণা দেন। এর মধ্য দিয়েই কার্যত বাংলাদেশকে ভারতের বাজারে বহুল কাঙ্ক্ষিত প্রায় শতভাগ শুল্কমুক্ত বাজারসুবিধা প্রদান করা হয়। তবে এই বাজারসুবিধা এখনো যথেষ্ট ভালোভাবে কাজে লাগাতে পারেনি বাংলাদেশ।