সঠিক পথেই আছে বাংলাদেশ

ইসাবেলা লুভিন
ইসাবেলা লুভিন

সুইডেনের কোয়ালিশন সরকারের গ্রিন পার্টির নেতা ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতাবিষয়ক মন্ত্রী ইসাবেলা লুভিন সম্প্রতি বাংলাদেশ সফরে এসেছিলেন। এ সময় িতনি নানা বিষয়ে কথা বলেছেন প্রথম আলোর সঙ্গে
প্রথম আলো: আপনি কি মনে করেন, ২০২১ সালের মধ্যে মধ্য আয়ের দেশে উন্নীত হতে বাংলাদেশ সঠিক পথেই এগোচ্ছে?
ইসাবেলা লুভিন: হ্যাঁ, বাংলাদেশ সঠিক পথেই রয়েছে। গত কয়েক বছর ধরেই মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ৬ শতাংশের ওপরে রয়েছে। তবে উৎপাদনশীলতা আরও বাড়াতে হবে, বিনিয়োগও বাড়াতে হবে। এ ছাড়া টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে সামাজিক ও পরিবেশগত বিষয়গুলোকে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। বিশ্বের অন্য দেশগুলো এ বিষয়ে বেশ সচেতন। এ ছাড়া ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়ানোর দিকে বেশি মনোযোগী হতে হবে।
প্রথম আলো: বাংলাদেশের সামনে এ মুহূর্তে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জগুলো কী?
লুভিন: বাংলাদেশের সামনে এখন সামাজিক ও পরিবেশগত বিপর্যয়ই বড় চ্যালেঞ্জ। এ বিষয়ে খুব সুস্পষ্ট উদ্যোগ নিতে হবে। আর গণতন্ত্রকে সুসংহত করতে হবে। এ নিয়ে গণমাধ্যম ও সুশীল সমাজকে আরও দৃঢ় ভূমিকা রাখতে হবে। দুর্নীতি প্রতিরোধে বাংলাদেশ লড়াই করছে। এ লড়াই জোরদার করতে হলে সরকারি প্রতিষ্ঠানের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে। এ জন্য পাবলিক ডোমেইন তৈরি করা উচিত। অর্থাৎ এটি এমন ওয়েবসাইট, যেখানে জনগণ সব তথ্য পান। সুইডেনে সব সরকারি প্রতিষ্ঠানের পাবলিক ডোমেইন রয়েছে।

প্রথম আলো: বাংলাদেশের সঙ্গে সুইডেনের ব্যবসা-বাণিজ্য পরিস্থিতি কেমন?
লুভিন: বাংলাদেশ থেকে যত পণ্য রপ্তানি হয়, ২ শতাংশই যায় সুইডেনে। কিন্তু সুইডেন থেকে ততটা পণ্য আমদানি করে না বাংলাদেশ। উভয় দেশের মধ্যে ব্যবসা আরও বাড়ানো উচিত। তবে সুইডেন ‘ফেয়ার ট্রেড’ বা ন্যায্য বাণিজ্যকে বেশি প্রাধান্য দেয়।
প্রথম আলো: দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য সম্প্রসারণ কীভাবে সম্ভব?
লুভিন: বাংলাদেশকে বাণিজ্য সহায়ক কর ও শুল্কব্যবস্থা প্রবর্তন করতে হবে। বর্তমান ব্যবস্থার আমূল সংস্কার করতে হবে। তাহলে বিদেশি কোম্পানি, বিশেষ করে সুইডেনের কোম্পানিগুলো এ দেশে বিনিয়োগে উৎসাহী হবে। বর্তমানে উচ্চ কর হার এবং জটিল ও দীর্ঘসূত্রতার শুল্কায়ন প্রক্রিয়ার করণে কাঙ্ক্ষিত বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে পারছে না বাংলাদেশ।
প্রথম আলো: সুইডেন আগামী কয়েক বছরে বাংলাদেশের উন্নয়ন-প্রক্রিয়ায় কীভাবে সম্পৃক্ত হচ্ছে?
লুভিন: দীর্ঘমেয়াদি সহযোগিতার কৌশল হিসেবে ২০১৪ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে ২৩ কোটি ডলার দেবে সুইডেন। উন্নয়নকে টেকসই করতে দারিদ্র্যবিমোচন, গণতন্ত্র সুসংহত করা, মানবাধিকার সমুন্নত রাখা ও নারীর ক্ষমতায়নের মতো কর্মসূচিগুলোতে এ অর্থ দেওয়া হবে। সুইডেন ও বাংলাদেশ পরস্পরের বিশ্বস্ত বন্ধু। বাংলাদেশে কার্যরত অন্য উন্নয়ন সহযোগীদের তুলনায় সুইডেনের অবস্থা ছোট। কিন্তু সুইডেন অন্য সহযোগীদের চেয়ে ভিন্ন উপায়ে সহযোগিতা করে থাকে। যেসব খাতে বাংলাদেশ ও সুইডেন, উভয় পক্ষের অগ্রাধিকার রয়েছে, সেসব খাতেই সহযোগিতা দেওয়া হয়। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এবং নারীর ক্ষমতায়নের মতো বিষয়ে সুইডেনের বিশেষ অগ্রাধিকার রয়েছে।
{সাক্ষাৎকার নিয়েছেন জাহাঙ্গীর শাহ}