বিশ্বে মোট শ্রমশক্তির মাত্র ২৫ শতাংশ স্থায়ী

বিশ্বে মোট শ্রমশক্তির মাত্র ২৫ শতাংশ বা চার ভাগের এক ভাগেরই শুধু স্থায়ী চাকরি আছে। বাকি শতকরা তিন ভাগ বা ৭৫ শতাংশ শ্রমিক অস্থায়ী ভিত্তিতে বা স্বল্প মেয়াদের চুক্তিতে চাকরি করে থাকেন। এঁদের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক শ্রমিকেরাও আছেন, যাঁদের সঙ্গে নিয়োগদাতাদের কোনো রকম চুক্তি হয় না।
জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার সদ্য প্রকাশিত ‘ওয়ার্ল্ড এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল আউটলুক’ বা ‘বিশ্ব কর্মসংস্থান ও সামাজিক পূর্বাভাস ২০১৫’ (ডব্লিউইএসও) শীর্ষক এক গবেষণা প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।
আইএলওর প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, বিশ্বজুড়ে অধিকাংশ শ্রমিকই পূর্ণকালীন নিয়োগ এবং কোনোরকম পেনশন বা অবসর ভাতা ও অন্যান্য সুবিধা পান না। জাতিসংঘ সংস্থা আইএলও বিশ্বের প্রায় ৮৪ শতাংশ দেশের ওপর গবেষণা চালিয়ে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী যেসব দেশের উপাত্ত পাওয়া গেছে তাতে দেখা যায় খণ্ডকালীন শ্রমিকের সংখ্যা শুধু ২০০৯ ও ২০১৩ সালে পূর্ণকালীন শ্রমিক সংখ্যার চেয়ে বেশি ছিল। অন্য বছরগুলোতে ছিল কম।
আইএলও বলছে, শ্রমিক নিয়োগে শিথিলতা থাকলে তাতে কিছুটা সুবিধা আছে বটে, তবে এতে শ্রমিকদের শোষিত বা বঞ্চিত হওয়ারও প্রবল শঙ্কা থাকে।
গবেষণায় প্রাপ্ত উপাত্তের ভিত্তিতে সংস্থাটির মহাপরিচালক গাই রাইডার বলেন, বিশ্ব শ্রমবাজারে ক্রমাগত বৈচিত্র্য বাড়ছে। ‘নিম্নমানের’ কাজ করেন এমন শ্রমিকেরা নিজের পায়ে দাঁড়ানোর সুযোগ পাচ্ছেন। কিন্তু এই প্রবণতায় আবার ব্যাপক নিরাপত্তাহীনতারও প্রতিফলন ঘটছে, যা বর্তমানে বিশ্বব্যাপী শ্রমিকদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
আইএলওর মতে, নারীদের আগমনের সুবাদে বিশ্বে এখন খণ্ডকালীন শ্রমিকের সংখ্যা বাড়ছে। ৮৬টি দেশে দেখা গেছে, খণ্ডকালীন শ্রমিকের মধ্যে যাঁরা সপ্তাহে ৩০ ঘণ্টার কম কাজ করেন ২৪ শতাংশই হলো নারী।
স্থায়ী ও অস্থায়ী শ্রমিকদের মধ্যে আয়ের বৈষম্যও বাড়ছে। বিশেষ করে স্থায়ী শ্রমিকেরা পেনশন বা অবসর ভাতাসহ কিছু সুবিধা পেয়ে থাকেন। অস্থায়ী শ্রমিকদের জন্য এ ধরনের কোনো ব্যবস্থা অনুপস্থিত।
তবে আইএলও বিশ্বের সরকারগুলোকে শুধু ‘স্থায়ী শ্রমিকের’ জন্যই নয়, সেই সঙ্গে অন্য সব ধরনের শ্রমিকের কথাও বিবেচনায় নিয়ে তাঁদের বেলায়ও আয়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার নীতিমালা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
সূত্র: আইএলও, বিবিসি