বাধাগ্রস্ত হবে উন্নয়ন লক্ষ্য

দেশের রাজস্ব আদায়ের প্রবৃদ্ধি কয়েক অর্থবছর ধরে কম হচ্ছে। এটি দেশের উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রাগুলো অর্জনকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে।
বেসরকারি গবেষণা সংস্থা উন্নয়ন অন্বেষণের আগস্ট মাসের ‘বাংলাদেশ অর্থনৈতিক পর্যালোচনা’য় এমন পর্যবেক্ষণ দেওয়া হয়েছে। গতকাল শনিবার এটি প্রকাশ করা হয়।
উন্নয়ন অন্বেষণ দেখিয়েছে, ২০১১-১২ অর্থবছরের পর থেকেই রাজস্ব আদায়ে প্রবৃদ্ধির হার কমছে। ওই বছর রাজস্ব আদায়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ২৩ দশমিক ৩ শতাংশ। এরপরের দুই অর্থবছরে এ হার কমে দাঁড়ায় যথাক্রমে ১১ দশমিক ৮ ও ৯ দশমিক ৪ শতাংশে।
আবার মোট আদায় হওয়া রাজস্বের মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর আদায়ে প্রবৃদ্ধির হার ২০১১-১২ অর্থবছরে ছিল ২০ দশমিক ১৬ শতাংশ। পরের দুই বছর তা কমে দাঁড়ায় ১২ দশমিক ৮২ এবং ৭ দশমিক ৮৩ শতাংশে। আর ওই তিন অর্থবছরে এনবিআর-বহির্ভূত কর আদায়ে প্রবৃদ্ধি হয় যথাক্রমে ৯ দশমিক ৩৩, ১৩ দশমিক ৪৩ এবং ১১ দশমিক ৮৪ শতাংশ।
মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) অনুপাতে রাজস্ব আদায়ে বাংলাদেশ এশিয়ার অন্য উন্নয়নশীল দেশগুলোর চেয়েও বেশ পিছিয়ে আছে বলে মন্তব্য করেছে উন্নয়ন অন্বেষণ। সংস্থাটি বলেছে, ২০১০-২০১৪ সাল পর্যন্ত সময়ে উন্নত দেশগুলোতে রাজস্ব আদায়ের হার জিডিপির ৩৫ দশমিক ৭ শতাংশ। একই সময়ে এশিয়ার উন্নয়নশীল দেশগুলোতে এ হার ছিল ২৪ দশমিক ৯ শতাংশ, সাব-সাহারার আফ্রিকায় ২১ দশমিক ৮ শতাংশ, আসিয়ানভুক্ত দেশগুলোতে ১৯ দশমিক ৮ শতাংশ, ভারতে ১৯ দশমিক ৪ শতাংশ, নেপালে ১৮ দশমিক ৯ শতাংশ, পাকিস্তানে ১৩ দশমিক ৭ শতাংশ এবং শ্রীলঙ্কায় ১৩ দশমিক ৪ শতাংশ। অথচ এই সময়ে বাংলাদেশে রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ জিডিপির মাত্র ১০ দশমিক ৮ শতাংশ।
দেশে আয়কর আদায়ে অসন্তোষজনক দক্ষতার দিকে নির্দেশ করে গবেষণা প্রতিষ্ঠানটি বলেছে, জাতীয় বাজেটে আয়কর থেকে সর্বাধিক রাজস্ব আদায়ের কথা বলা হলেও বাস্তবে তা হচ্ছে না। তবে স্থানীয় পর্যায়ে মূল্য সংযোজন কর (মূসক) আদায়ের পরিস্থিতি সন্তোষজনক। এই অবস্থায় উন্নয়ন অন্বেষণের মত হলো, এর ফলে উচ্চ আয়ের মানুষের চেয়ে নিম্ন আয়ের মানুষের ওপর বেশি করের বোঝা চাপছে।