বন্দরের তিন জাহাজ ভাড়া নিল সামিট

চট্টগ্রাম বন্দরের তিনটি পুরোনো জাহাজ গতকাল বুধবার সামিট অ্যালায়েন্স পোর্ট লিমিটেডের কাছে হস্তান্তরের পর জাহাজগুলোর পাশে অতিথিরা l প্রথম আলো
চট্টগ্রাম বন্দরের তিনটি পুরোনো জাহাজ গতকাল বুধবার সামিট অ্যালায়েন্স পোর্ট লিমিটেডের কাছে হস্তান্তরের পর জাহাজগুলোর পাশে অতিথিরা l প্রথম আলো

চট্টগ্রাম বন্দরের কেনা তিনটি পুরোনো কনটেইনার জাহাজ পরিচালনার জন্য বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সামিট অ্যালায়েন্স পোর্ট লিমিটেডের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল জেটিতে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তিনটি জাহাজ হস্তান্তর করা হয়।
অনুষ্ঠানে বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল নিজামউদ্দিন আহমেদ এ-সংক্রান্ত কাগজ তুলে দেন সামিট অ্যালায়েন্স পোর্ট লিমিটেডের চেয়ারম্যান মো. আজিজ খানের হাতে। এ সময় নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান উপস্থিত ছিলেন।
নৌপরিবহনমন্ত্রী বলেন, বন্দরের কাজ কিন্তু জাহাজ চালানো নয়। সেই সক্ষমতা বন্দর আয়ত্ত করেনি। সামিটের সঙ্গে চুক্তির ফলে প্রতি মাসে ভাড়া বাবদ বন্দরের ৪২ লাখ টাকা আয় হবে। পাঁচ বছরের জন্য এই জাহাজগুলো হস্তান্তর করা হয়েছে।
নিজামউদ্দিন আহমেদ বলেন, সমুদ্র পরিবহন অধিদপ্তর থেকে ৩২টি জাহাজের লাইসেন্স দেওয়া হলেও এত দিন একটি জাহাজও পানগাঁও-চট্টগ্রাম নৌপথে নামেনি। জাহাজ পরিচালনা করে মুনাফা করা বন্দরের উদ্দেশ্য ছিল না। কিন্তু এই নৌপথ চালু করতে বন্দর তিনটি জাহাজ কিনেছে। এখন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সামিট অ্যালায়েন্স এই উদ্যোগ এগিয়ে নেবে।
মো. আজিজ খান বলেন, ১৯৯৭ সালে পতেঙ্গায় সামিট অ্যালায়েন্স পোর্ট লিমিটেড (বেসরকারি কনটেইনার ডিপো) ৪০টি কনটেইনার ওঠানো-নামানোর মাধ্যমে যাত্রা শুরু করে। গত বছর দুই লাখ কনটেইনার ওঠানো-নামানো হয়েছে। এই তিনটি জাহাজ ছাড়াও সামিটের আরও একটি জাহাজ চট্টগ্রাম থেকে পানগাঁও ও সামিটের রিভার টার্মিনালে কনটেইনার পরিবহন শুরু করবে।
বন্দর সূত্রে জানা গেছে, জাহাজের পরিচালনা, রক্ষণাবেক্ষণসহ কার্যত সবকিছুই করবে সামিট। তবে প্রথম চার মাস কোনো ভাড়া দিতে হবে না। চার মাস পর থেকে প্রতি মাসের জন্য বন্দরকে মূল্য সংযোজন করসহ প্রায় ৪২ লাখ টাকা পরিশোধ করবে সামিট।
২০১৩ সালে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান থেকে ৪৯ কোটি ৮৫ লাখ টাকায় এই তিনটি পুরোনো জাহাজ কেনে বন্দর কর্তৃপক্ষ। ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে দুটি এবং ২০১৪ সালের আগস্টে একটি জাহাজ বুঝে নেয় বন্দর। তবে কেনার পর শুল্ক-কর, বিমা বিলসহ বন্দরের মোট খরচ হয় সাড়ে ৭১ কোটি টাকা।
গতকাল অনুষ্ঠানে বন্দর চেয়ারম্যান দাবি করেন, এই তিনটি জাহাজের মাধ্যমে এরই মধ্যে বন্দরের আয় হয়েছে সোয়া এক কোটি টাকা। এখন সামিটকে ভাড়া দেওয়ার পর প্রথম পাঁচ বছরে বন্দরের আয় হবে প্রায় ২৫ কোটি টাকা। সেই হিসাবে তিন জাহাজের খরচ তুলতে হলে বন্দরের ১৫ বছরের বেশি সময় লাগবে।