অপারেটররা ইন্টারনেট প্যাকেজ আলাদা করতে রাজি নয়

.
.

মোবাইল ইন্টারনেট ডেটা প্যাকেজের মূল্য নির্ধারণে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) নতুন নির্দেশনা বাস্তবায়নে অপারগতা প্রকাশ করেছে দেশের সব মোবাইল অপারেটর।
মুঠোফোন অপারেটরদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব মোবাইল টেলিকম অপারেটরস বাংলাদেশ (অ্যামটব) গত মঙ্গলবার বিটিআরসিকে চিঠি দিয়ে তাদের অপারগতার কথা জানিয়েছে।
অ্যামটবের মহাসচিব টি আই এম নুরুল কবির স্বাক্ষরিত এ চিঠিতে বলা হয়েছে, দ্বিতীয় প্রজন্মের (টুজি) ও তৃতীয় প্রজন্মের (থ্রিজি) ইন্টারনেট ডেটা প্যাকেজের মূল্য ১০ সেপ্টেম্বরের (গতকাল) নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, তা বাস্তবায়ন করা অপারেটরদের পক্ষে সম্ভব নয়। এ বিষয়ে আরও বিস্তারিত ও ধারাবাহিক আলোচনার মাধ্যমে নতুন নির্দেশনা চূড়ান্ত করতে হবে।
থ্রিজি ও টুজি ইন্টারনেট ডেটা প্যাকেজের আলাদা মূল্য নির্ধারণসহ এ-সংক্রান্ত মোট চারটি বিষয় বাস্তবায়নে মোবাইল অপারেটরদের নির্দেশনা দেয় বিটিআরসি। বাকি তিনটি নির্দেশনা হলো থ্রিজির দামে টুজি ইন্টারনেট প্যাক কেনা হলে ৪০ শতাংশ ডেটা গ্রাহককে ক্ষতিপূরণ হিসেবে দেওয়া, থ্রিজি নেটওয়ার্কের বাইরে থেকে একজন গ্রাহক থ্রিজি ডেটা প্যাকেজ কিনতে চাইলে তাকে খুদে বার্তা দিয়ে জানানো যে তিনি ওই নেটওয়ার্কের আওতায় নেই এবং ইন্টারনেট প্যাকেজের গতি নিশ্চিত করা।
এসব নির্দেশনা বাস্তবায়নে কারিগরি জটিলতার দিক তুলে ধরে চিঠিতে বলা হয়েছে, একজন গ্রাহক যখন মোবাইলে থ্রিজি ইন্টারনেট ব্যবহার করেন, একই সময়ে অবস্থানগত পরিবর্তনের কারণে তিনি অনেক ক্ষেত্রে টুজি নেটওয়ার্ক পেতে পারেন। একজন গ্রাহক টুজি নাকি থ্রিজি প্রযুক্তির ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন, এটা তাঁর মোবাইলের স্ক্রিনে স্বয়ংক্রিয়ভাবে চলে আসে। এ ক্ষেত্রে ইন্টারনেট প্যাকেজ কেনার সময় আবার একজন গ্রাহককে খুদে বার্তা দিয়ে তা জানানোর প্রয়োজন নেই।
অ্যামটবের চিঠিতে বলা হয়েছে, ইন্টারনেট ব্যবহারে গ্রাহককে দুই ধরনের ডেটা প্যাক পরিচালনার ঝামেলা থেকে মুক্ত রাখতে মোবাইল অপারেটররা থ্রিজি ও টুজি প্যাককে আলাদা করে না। গ্রাহক যাতে বৈষম্যের শিকার না হন, সে জন্য সব অপারেটরই টুজির দামে থ্রিজি ইন্টারনেট দিচ্ছে। এ জন্য গত দুই বছরে ইন্টারনেট ডেটা প্যাকেজের দাম গড়ে ৫৫ থেকে ৬০ শতাংশ কমানো হয়েছে।
ইন্টারনেটের ডেটা প্যাকের গতির বিষয়ে থ্রিজি লাইসেন্সের নীতিমালার শর্তগুলো উল্লেখ করে অ্যামটবের চিঠিতে বলা হয়েছে, ইন্টারনেটের গতি গ্রাহকের ব্যবহার করা মুঠোফোনের মান ও নেটওয়ার্ক থেকে ব্যবহারকারীর অবস্থানের দূরত্বের ওপর নির্ভর করে। এ ধরনের প্রতিবন্ধকতার পরও মুঠোফোন অপারেটররা নির্দেশনা অনুযায়ী ইন্টারনেট প্যাকেজে ৭০ শতাংশ গতি নিশ্চিত করছে।
বিটিআরসি নতুন নির্দেশনায় ইন্টারনেট প্যাকেজের গতি ১০০ শতাংশ নিশ্চিত করতে বলেছে অপারেটরদের।
অ্যামটব বলছে, ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর অবস্থানগত পরিবর্তনের ফলে গ্রাহককে অতিরিক্ত ডেটা ক্ষতিপূরণ হিসেবে দেওয়ার বিষয়টি বাস্তবসম্মত নয়। বিশ্বের আর কোনো দেশে ইন্টারনেট ডেটা প্যাকেজের ক্ষেত্রে এমন নির্দেশনা নেই।
এসব কারিগরি সমস্যা সম্পর্কে বিটিআরসির চেয়ারম্যান সুনীল কান্তি বোস সম্প্রতি প্রথম আলোকে বলেছিলেন, নির্দেশনা বাস্তবায়নে মোবাইল অপারেটরদের সমস্যা হলে সেটি নিয়ে আলোচনার সুযোগ অবশ্যই আছে।