কর মেলায় রেকর্ড রাজস্ব আদায়

ঢাকার বেইলি রোডের অফিসার্স ক্লাবে আয়োজিত সপ্তাহব্যাপী কর মেলার শেষ দিনে গতকাল অনেক করদাতা আয়কর রিটার্নের ফরম পূরণ করে জমা দেন l প্রথম আলো
ঢাকার বেইলি রোডের অফিসার্স ক্লাবে আয়োজিত সপ্তাহব্যাপী কর মেলার শেষ দিনে গতকাল অনেক করদাতা আয়কর রিটার্নের ফরম পূরণ করে জমা দেন l প্রথম আলো

সারা দেশে অনুষ্ঠিত আয়কর মেলা থেকে রেকর্ড পরিমাণ কর আদায় হয়েছে। এবার মেলা থেকে ২ হাজার ৩৫ কোটি ৩২ লাখ টাকার কর আদায় হয়, যা গত বছরের চেয়ে ৩৬০ কোটি টাকা বেশি। গত বছর মেলা থেকে ১ হাজার ৬৭৫ কোটি টাকার রাজস্ব আদায় হয়েছিল। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এদিকে গতকাল মেলার শেষ দিনেও ছিল করদাতাদের ব্যাপক ভিড়। তাঁদের মধ্যে উৎসাহও ছিল ব্যাপক। দেশের সবচেয়ে বড় কর মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে রাজধানীর বেইলি রোডের অফিসার্স ক্লাব প্রাঙ্গণে। মেলা শেষ হওয়ার নির্ধারিত সময় বিকেল পাঁচটার পরও কয়েক শ করদাতা বার্ষিক আয়কর বিবরণী বা রিটার্ন জমা দিয়েছেন। সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত মেলার বুথগুলোতে রিটার্ন জমা নিয়েছেন কর কর্মকর্তারা। এ ছাড়া সারা দিনই মেলায় করদাতাদের বেশ সমাগম ছিল।
এবারের মেলায় সর্বমোট ১ লাখ ৬১ হাজার ৬০ জন করদাতা তাঁদের বার্ষিক আয়কর বিবরণী জমা দিয়েছেন। গত বছর মেলায় রিটার্ন জমা পড়েছিল ১ লাখ ৪৯ হাজার ৩০৯টি। এ বছরের মেলায় কর-সংক্রান্ত সেবা নিয়েছেন ৭ লাখ ৫৭ হাজার ৭৫ জন। গত বছর এই সংখ্যা ছিল ৬ লাখ ৪৯ হাজার ১৮৫।
উল্লেখ্য, ১৬ থেকে ২২ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সাতটি বিভাগীয় শহর সাত দিন, সব জেলায় চার দিন ও ৮৬টি উপজেলায় এক থেকে দুই দিন কর মেলা অনুষ্ঠিত হয়। কর মেলায় ইটিআইএন নিবন্ধন, আয়কর বিবরণী জমা, পূরণে সহায়তাসহ সব ধরনের আয়কর সেবা দেওয়া হয়েছে। কর পরিশোধের জন্য ব্যাংকের বুথ ছিল মেলার প্রাঙ্গণে।

গতকাল মঙ্গলবার শেষ দিনে ৩৮ হাজার ২০৫ জন করদাতা রিটার্ন জমা দিয়েছেন। এতে রাজস্ব পাওয়া গেছে ৩৯৪ কোটি ৭৫ লাখ টাকার। এই এক দিনে মেলায় এসেছেন ১ লাখ ৭ হাজার ১৮৫ জন।

উল্লেখ্য, ২০১০ সালে ঢাকা ও চট্টগ্রামে প্রথমবারের মতো কর মেলা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর থেকে প্রতিবছরই মেলা আয়োজন করে
আসছে এনবিআর। প্রতিবছরই কর মেলার পরিধি বেড়েছে। এ বছরই প্রথম উপজেলা পর্যায়ে কর মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

এদিকে বিকেলে অফিসার্স ক্লাবে অনুষ্ঠিত কর মেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন আইন, বিচার ও সংসদ-বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি বলেন, আয়কর কেবল রাজস্ব আহরণের প্রধান উৎসই নয়, এটি অর্থনৈতিক ও সামাজিক সুবিচার প্রতিষ্ঠার কার্যকর মাধ্যম। যথাযথ আয়কর প্রদানের মাধ্যমে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা তথা একটি ন্যায়ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার কাজে আত্মনিয়োগ করতে হবে। এ জন্য সামর্থ্যবান প্রত্যেক ব্যক্তিকে সঠিকভাবে আয়কর প্রদানের জন্য তিনি আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান, এনবিআর-এর চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান, সদস্য আবদুর রাজ্জাক প্রমুখ।