চরম দরিদ্রদের জন্য বরাদ্দ বাড়াতে হবে

দেশে সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনী কর্মসূচির আওতায় চরম দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য যে অর্থ খরচ করা হয়, তা বর্তমানে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ১ শতাংশের কম। চরম দারিদ্র্যসীমার নিচে থাকা ২ কোটি জনগোষ্ঠীর জন্য বরাদ্দ এই অর্থ বাড়িয়ে ১ শতাংশের বেশি করা হলে তা চরম দারিদ্র্য বিমোচনে সহায়ক হবে।

এমন মতামত উঠে এসেছে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) ‘চরম দারিদ্র্য জয়ে কেউ যেন বাদ না যায়’ শীর্ষক এক আলোচনা অধিবেশনে। বাংলাদেশের উন্নয়ন নিয়ে বিআইডিএস আয়োজিত দুই দিনব্যাপী সম্মেলনের শেষ দিনে গতকাল রোববার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত এ আলোচনায় সভাপতিত্ব করেন পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) সদস্য শামসুল আলম। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিআইডিএসের জ্যেষ্ঠ গবেষক এস এম জুলফিকার আলী।

প্রবন্ধে বলা হয়, চরম দরিদ্রদের জন্য প্রকৃতপক্ষে খরচ হচ্ছে মাত্র জিডিপির শূন্য দশমিক ৭৭ শতাংশ। সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা, রূপকল্প ২০২১, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) ও জাতীয় সামাজিক নিরাপত্তা কৌশলে চরম দারিদ্র্য কমিয়ে আনতে যেসব লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে সমন্বয় থাকতে হবে।

অধিবেশনের প্যানেল আলোচক বিআইডিএসের গবেষণা পরিচালক বিনায়ক সেন বলেন, চরম দরিদ্রদের জন্য বাজেটে যে বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে, তা প্রকৃতপক্ষে তাঁরা পাচ্ছেন কি না, সেটি নিশ্চিত করতে হবে। আবার প্রতিবছর দরিদ্র জনগোষ্ঠীর একটি অংশ যাতে চরম দরিদ্রের পর্যায়ে নেমে না যায়, সেই পদক্ষেপ থাকতে হবে। 

এদিকে আলোচকদের সঙ্গে দ্বিমত করে শামসুল আলম বলেন, দরিদ্র ও চরম দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য ব্যয় করতে সরকারের কোনো কার্পণ্য নেই। দারিদ্র্য দূরীকরণ কর্মসূচির আওতায় চলতি ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ৩৭ হাজার ৫৭০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, যা জিডিপির ১ শতাংশের অনেক বেশি।

অধিবেশনে প্যানেল আলোচক হিসেবে আরও ছিলেন ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্নেন্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (বিআইজিডি) জেন্ডার ক্লাস্টার বিভাগের প্রধান সিমিন মাহমুদ, কনসার্ন ওয়ার্ল্ডওয়াইডের দেশীয় প্রতিনিধি এ কে এম মুসা ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের খণ্ডকালীন শিক্ষক প্রশান্ত ত্রিপুরা।