ঢাবি ভর্তিতে প্রতিবন্ধী কোটায় যুক্ত হলেন স্নায়ু-বিকাশগত প্রতিবন্ধীরা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক প্রথম বর্ষে শিক্ষার্থী ভর্তির ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধী কোটায় এবার যুক্ত হলেন নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল ডিজঅর্ডারসে (স্নায়ু-বিকাশগত প্রতিবন্ধিতা) আক্রান্ত শিক্ষার্থীরা। এখন থেকে অটিজম, ডাউন সিনড্রোম, সেরিব্রাল পালসি, বুদ্ধিপ্রতিবন্ধিতা ও অন্যান্য প্রতিবন্ধকতার শিকার শিক্ষার্থীরাও প্রতিবন্ধী কোটায় ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাবেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতি শিক্ষাবর্ষে প্রতিবন্ধীদের জন্য ১ শতাংশ আসন সংরক্ষিত থাকে।
আজ বৃহস্পতিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ ভর্তি কমিটির সভায় স্নায়ু-বিকাশগত প্রতিবন্ধীদের কোটায় যুক্ত করা হয়। ২০১৮ সালের আগপর্যন্ত শুধু দৃষ্টি, শ্রবণ ও বাক্প্রতিবন্ধীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটা–সুবিধা পেতেন। ২০১৮ সালে হৃদয় সরকার নামের এক শারীরিক প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীর প্রতিবন্ধী কোটায় ভর্তি হওয়ার সুযোগ না পাওয়ার ঘটনা গণমাধ্যমে উঠে এলে নিয়ম পরিবর্তন করে শারীরিক প্রতিবন্ধিতাকেও যুক্ত করা হয়। এবার যুক্ত হলেন স্নায়ু-বিকাশগত প্রতিবন্ধীরা।
ভর্তি কমিটির সভা সূত্রে জানা গেছে, সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিবন্ধী কোটায় স্নায়ু-বিকাশগত প্রতিবন্ধীদের যুক্ত করার প্রস্তাব তোলেন যোগাযোগবৈকল্য বিভাগের চেয়ারপারসন শান্তা তাওহিদা। পরে সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্তটি গৃহীত হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) মুহাম্মদ সামাদ প্রথম আলোকে বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিবন্ধী কোটায় নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল ডিজঅর্ডারসে (স্নায়ু-বিকাশগত প্রতিবন্ধিতা) আক্রান্ত শিক্ষার্থীদেরও যুক্ত করা হয়েছে। ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষ থেকেই এটি কার্যকর হচ্ছে।
প্রতিবন্ধী কোটায় নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল ডিজঅর্ডারসে আক্রান্ত শিক্ষার্থীদের যুক্ত করার প্রস্তাব তোলা শিক্ষক শান্তা তাওহিদা বলেন, প্রতিবন্ধী কোটায় নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল ডিজঅর্ডারস বা স্নায়ু-বিকাশগত প্রতিবন্ধিতাকে যুক্ত করার ফলে এখন থেকে অটিজম, ডাউন সিনড্রোম, সেরিব্রাল পালসি ও অন্যান্য স্নায়ু-বিকাশগত প্রতিবন্ধকতা আছে, এমন শিক্ষার্থীরাও ভর্তির জন্য বিশেষ সুবিধা পাবেন। বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ১৮ শতাংশ মানুষ স্নায়ু-বিকাশগত প্রতিবন্ধকতার শিকার। তাঁদের জন্য উচ্চশিক্ষার সুযোগ সৃষ্টিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এ উদ্যোগ বাংলাদেশের জন্য একটি মাইলফলক হিসেবে কাজ করবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে প্রতিবন্ধী কোটা ছাড়া আরও চার ধরনের কোটা রয়েছে। এগুলো হলো ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী, হরিজন ও দলিত সম্প্রদায় কোটা, খেলোয়াড় কোটা, মুক্তিযোদ্ধা কোটা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তানের জন্য পোষ্য কোটা। কোটায় ভর্তির ক্ষেত্রে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পাশাপাশি কাঙ্ক্ষিত বিভাগের নির্ধারিত শর্তও পূরণ করতে হয়। কোটায় আবেদন করা শিক্ষার্থীদের আলাদা মেধাতালিকা তৈরি করে আসন বণ্টন করা হয়ে থাকে। ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসনসংখ্যা ৬ হাজার ৮৫। এর ১ শতাংশ (৬১ জন) প্রতিবন্ধী কোটায় ভর্তির সুযোগ পাবেন।