প্রশ্ন: বিশেষ্য পদ কাকে বলে? বিশেষ্য পদের শ্রেণিবিভাগ উদাহরণসহ আলোচনা করো।
উত্তর: যে পদে কোনো ব্যক্তি, বস্তু, জাতি, কাজ বা গুণের নাম বোঝায়, তাকে বিশেষ্য পদ বলে।
যেমন: বই, নদী, পাখি, ফুল, বাংলাদেশ ইত্যাদি। বিশেষ্য পদের কয়েকটি শ্রেণিবিভাগ আছে। যেমন:
১. সংজ্ঞাবাচক বিশেষ্য: যেসব বিশেষ্য পদে কোনো নির্দিষ্ট স্থান, নদী, পর্বত, সমুদ্র, প্রসিদ্ধ গ্রন্থ বা ব্যক্তির নাম বোঝায়, তাকে সংজ্ঞাবাচক বিশেষ্য বলা হয়। যেমন: আকবর, রানা, ঢাকা, তাজমহল ইত্যাদি।
২. স্থানবাচক বিশেষ্য: যেসব বিশেষ্য পদে কোনো নির্দিষ্ট স্থানের নাম বোঝায়, তাকে স্থানবাচক বিশেষ্য বলা হয়। যেমন: ঢাকা, রাজশাহী, ময়নামতি ইত্যাদি।
৩. বস্তুবাচক বিশেষ্য: যে বিশেষ্য পদের সাহায্যে কোনো বস্তু বোঝায় এবং যার সংখ্যা নির্দেশ করা যায় না, শুধু পরিমাণ নির্দেশ করা যায়, তাকে বস্তুবাচক বিশেষ্য বলে। যেমন: চিনি, পানি, লবণ ইত্যাদি।
৪. জাতিবাচক বিশেষ্য: যে বিশেষ্য পদের সাহায্যে কোনো প্রাণী বা বস্তুর জাতি বোঝায়, তাকে জাতিবাচক বিশেষ্য বলে। যেমন: মানুষ, মুসলমান, হিন্দু ইত্যাদি।
৫. গুণবাচক বিশেষ্য: যে বিশেষ্য পদে কোনো গুণ, অবস্থা ও ভাবের নাম বোঝায়, তাকে গুণবাচক বিশেষ্য বলে। যেমন: সুখ, দুঃখ, দয়া, বীরত্ব ইত্যাদি।
৬. ক্রিয়াবাচক বিশেষ্য: যে বিশেষ্য পদে কোনো কাজের নাম বোঝায়, তাকে ক্রিয়াবাচক বা ভাববাচক বিশেষ্য বলে। যেমন: ঘুমান, গমন, যাওয়া ইত্যাদি।
৭. সমষ্টিবাচক বিশেষ্য: যে বিশেষ্য পদে সমষ্টি বোঝায়, তাকে সমষ্টিবাচক বিশেষ্য বলে। যেমন: জনতা, সমিতি, সভা, দল ইত্যাদি।
প্রশ্ন: অনুসর্গ কাকে বলে? অনুসর্গ ও উপসর্গের পার্থক্য লেখো।
উত্তর: সাধারণভাবে অনুসর্গ বলতে বোঝায় যা পরে ব্যবহৃত হয়। উপসর্গ যেমন ধাতুর আগে বসে, অনুসর্গ তেমন পদের পরে বসে। যেসব অব্যয় বিশেষ্য বা সর্বনাম পদের পরে পৃথকভাবে বসে শব্দ বিভক্তির মতো তাদের কারক-সম্বন্ধ নির্ধারণ করে, তাদের অনুসর্গ বলা হয়। কেবল বিভক্তির মতো কারক-সম্বন্ধ নির্দেশ করলে তবেই তাদের অনুসর্গ বলে।
অনুসর্গ ও উপসর্গের মধ্যে পার্থক্য
অনুসর্গ
১. অনুসর্গ সাধারণভাবে অব্যয় হলেও বিশেষ্য, বিশেষণ বা ক্রিয়া থেকেও সৃষ্টি হতে পারে।
২. অনুসর্গ পদের পরে বসে।
৩. অনুসর্গ শব্দের সঙ্গে জুড়ে যায় না, পৃথক শব্দ হিসেবে থাকে।
৪. অনুসর্গ কারকের বোধ জন্মায়।
৫. অনুসর্গের স্বতন্ত্র ব্যবহার আছে।
উপসর্গ
১. উপসর্গমাত্রই অব্যয়।
২. উপসর্গ পদের আগে বসে।
৩. উপসর্গ শব্দের সঙ্গে জুড়ে গিয়ে এক শব্দ হয়ে যায়।
৪. উপসর্গ একই ধাতু থেকে ভিন্ন অর্থবোধক শব্দ সৃষ্টি করতে পারে।
৫. উপসর্গের স্বাধীন ব্যবহার নেই।