৫৬ বছরে পা রাখল চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
৫৬ বছরে পা রাখল চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। ১৯৬৬ সালের এই দিনে ২০০ শিক্ষার্থী নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিল চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। আজ বৃহস্পতিবার গান, কবিতা ও কথামালায় দিনটি উদ্যাপন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
আজ সকালে শোভাযাত্রার মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শিরীণ আখতার। এরপর জারুলতলায় আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনার আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
বিশেষ অতিথি ছিলেন সাবেক উপাচার্য এম বদিউল আলম, মো. আনোয়ারুল আজিম আরিফ, সাবেক ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য মো. আলাউদ্দিন, বর্তমান সহ-উপাচার্য বেনু কুমার দে, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এস এম মনিরুল হাসান, চাকসুর সাবেক ভিপি মাজহারুল হক শাহ চৌধুরী প্রমুখ। প্রক্টর রবিউল হাসান ভূঁইয়ার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন উপাচার্য শিরীণ আখতার।
অনুষ্ঠানে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র হাছান মাহমুদ বলেন, শুধু অবকাঠামো নির্মাণের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক উন্নয়ন ফুটে ওঠে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক উন্নয়নের সঙ্গে গবেষণা ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তাই গবেষণার ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সেমিনার, সিম্পোজিয়াম ও সভার আয়োজন করতে হবে। তবেই বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম আন্তর্জাতিক সায়েন্টিফিক কমিউনিটিতে ছড়িয়ে পড়বে। বছরে দুটি বা তিন মাস পরপর সভা-সেমিনার হতে পারে।
মন্ত্রী বলেন, শুধু পাঠদান বা সনদ প্রদানের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠদান হবে, ডিগ্রি প্রদান করা হবে। একই সঙ্গে সংস্কৃতি, মুক্তবুদ্ধি ও জ্ঞানের চর্চাও হবে। জ্ঞানভিত্তিক, ন্যায়ভিত্তিক ও বহুমাত্রিক সমাজব্যবস্থা ব্যতিরেকে গণতন্ত্র সুসংহত হয় না, দেশ এগিয়ে যায় না। এ ছাড়া যেখানে বিজ্ঞানের চর্চা হয় না, ন্যায়-নীতির ব্যতয় ঘটে, মুক্তমতকে অবদমন করা হয়, সেখানে সমাজ এগোয় না।
বিশ্ববিদ্যালয়ে মুক্তমত ও সংস্কৃতিচর্চার গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, মুক্তবুদ্ধির চর্চা না হলে ঢাকা শহরের নিচতলায় পোশাক কারখানা, দ্বিতীয় তলায় বিপণিকেন্দ্র ও তৃতীয় তলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো পার্থক্য থাকবে না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এম বদিউল আলম বলেন, ‘জ্ঞাননির্ভর বিশ্ববিদ্যালয় কি আমরা প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছি? না পারিনি। ভারতের শিক্ষা কমিশনের একটি প্রতিবেদনে শ্রেণিকক্ষ শক্তিশালী করার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষগুলোর কী অবস্থা? আসলে শ্রেণিকক্ষ শক্তিশালী করতে হলে সত্যিকারের মেধাবীদের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিতে হবে। উপাচার্যের দায়িত্ব পালনকালে আমি মেধাবীদেরই শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিলাম। কিন্তু এখন খবর পাই, অনেকগুলো বিভাগে মেধাশূন্যদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।’
সহ-উপাচার্য বেনু কুমার দে তাঁর বক্তব্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে প্রথম আলোয় আজ প্রকাশিত সংবাদ নিয়ে কথা বলেন, তিনি বলেন, ‘প্রথম আলোতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু সীমাবদ্ধতার কথা তুলে ধরা হয়েছে। আমরা পরামর্শ নিয়ে এগিয়ে যেতে চাই।’
সভাপতির বক্তব্যে উপাচার্য শিরীণ আখতার বলেন, করোনায় সবকিছু অবরুদ্ধ ছিল, ক্লাসরুম ছিল ফাঁকা। সেশনজটে পড়ার আশঙ্কাও ছিল। শিক্ষকেরা অনলাইনে ক্লাস নিয়েছেন। ফলে সেশনজটের মধ্যে তেমন পড়েননি শিক্ষার্থীরা।