গুচ্ছ ভিত্তিতে ভর্তি পরীক্ষা নিয়েও অস্পষ্টতা

সমমনা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে গুচ্ছ করে পরীক্ষা হবে কি না, তা সুনির্দিষ্ট করে কেউ বলতে পারছেন না। প্রস্তুতিও নেই।

ফাইল ছবি

করোনা পরিস্থিতির কারণে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভর্তি পরীক্ষা কোন পদ্ধতিতে হবে, তা এখনো ঠিক করতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনও (ইউজিসি) এ বিষয়ে কার্যকর কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি। গুচ্ছ ভিত্তিতে পরীক্ষা হবে কি না, তা–ও স্পষ্ট নয়। এই পরিস্থিতিতে ১৩ লাখের বেশি শিক্ষার্থী অনিশ্চয়তার মধ্যে আছে।

আগামী মাসে জেএসসি, এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার গড় ফলের ভিত্তিতে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের মূল্যায়নের ফল ঘোষণা করা হবে। করোনার কারণে এবার এইচএসসি পরীক্ষা না হওয়ায় ১৩ লাখ ৬৫ হাজারের বেশি পরীক্ষার্থীর সবাই পাস করবেন। বেশির ভাগ শিক্ষার্থীর প্রথম চেষ্টা থাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার।

এ বিষয়ে উচ্চশিক্ষা দেখভালের দায়িত্বে থাকা সংস্থা ইউজিসি সুনির্দিষ্ট করে কিছু বলতে পারছে না। ইউজিসির সদস্য অধ্যাপক মুহাম্মদ আলমগীর গতকাল শনিবার প্রথম আলোকে বলেন, এ বিষয়ে এখন একটি সিদ্ধান্ত নিতেই হবে। হয়তো এ সপ্তাহেই তাঁরা আলোচনা করবেন।

বর্তমানে দেশে ৪৬টি সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয় থাকলেও ৩৯টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে সরাসরি শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়। এগুলোতে ৬০ হাজারের কিছু বেশি আসন আছে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে সিদ্ধান্ত হয়েছিল, চারটি স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয় ও বুয়েট ছাড়া বাকি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে তিনটি গুচ্ছ করে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হবে। গুচ্ছগুলোর মধ্যে একটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিয়ে, সাধারণ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে একটি এবং প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিয়ে আরেকটি।

এবার করোনা পরিস্থিতির কারণে অনলাইনে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়ে আলোচনা হলেও শেষ পর্যন্ত তা হচ্ছে না। কিন্তু কোন পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেওয়া হবে, তা এখনো ঠিক হয়নি।

সর্বশেষ ৩ নভেম্বর ইউজিসির বিশেষজ্ঞ কমিটি অনলাইনে পরীক্ষা না নেওয়ার পক্ষে মত দেওয়ার পর সমন্বিত বা গুচ্ছ ভিত্তিতে ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো আলোচনা হয়নি। এরই মধ্যে কয়েক দিন আগে কুষ্টিয়ায় অবস্থিত ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে একটি সভা আহ্বান করেছিল।

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শেখ আবদুস সালাম গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, ৯৯ শতাংশ শিক্ষকই মত দিয়েছেন, এই বিশ্ববিদ্যালয়ে যেমন করে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হতো, সেভাবেই নেওয়া হোক। অবশ্য করোনার কারণে সরকার বা ইউজিসি কোনো বিশেষ সিদ্ধান্ত নিলে তাতেও তাঁদের আপত্তি নেই।

এর আগে ঢাকা, রাজশাহী ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় করোনার মধ্যেও আলাদা করে সরাসরি ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অবশ্য জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। এর মধ্যে সম্প্রতি এক সভায় স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয় ও বুয়েটকেও সমন্বিত বা গুচ্ছভিত্তিক পরীক্ষায় আসার অনুরোধ করেছিলেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। কিন্তু এখনো ইতিবাচক সাড়া মেলেনি বলে জানিয়েছেন ইউজিসির একজন কর্মকর্তা।

এবার গুচ্ছভিত্তিক ভর্তি পরীক্ষা হবে কি না জানতে চাইলে উপাচার্যদের সংগঠন বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদের সভাপতি এবং চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মোহাম্মদ রফিকুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, কথাবার্তা চলছে, এখনো আনুষ্ঠানিক আলোচনা হয়নি। তিনি আশা করছেন, আগামী সভায় আলোচ্যসূচি রেখে বিস্তারিত আলোচনা করবেন। তবে কবে এ সভা অনুষ্ঠিত হবে, তা তিনি স্পষ্ট করেননি।