বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরেও পরীক্ষা কেন্দ্র রাখার আহ্বান ইউজিসির

গুচ্ছভিত্তিক ভর্তি পরীক্ষায় কেবল বাছাই করা ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীরা অংশ নিতে পারবেন। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পরীক্ষায় বসার জন্য যত আসন আছে তত সংখ্যক শিক্ষার্থীকে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়ার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠেয় ২০টি সাধারণ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। এর ফলে প্রাথমিক যোগ্যতা থাকলেও ভর্তি-ইচ্ছুক সব পরীক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ পাবেন না। তাই তাঁরা এই ব্যবস্থা পরিবর্তনের দাবি করে আসছেন।

আজ ২৯টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের সঙ্গে ভার্চ্যুয়াল সভা করে ইউজিসি
ছবি: সংগৃহীত

এ অবস্থায় সর্বোচ্চসংখ্যক শিক্ষার্থীকে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জু্রি কমিশন (ইউজিসি)। এ জন্য কেবল বিশ্ববিদ্যালয়েই পরীক্ষার কেন্দ্র সীমাবদ্ধ না রেখে তার বাইরেও ভর্তি পরীক্ষার আয়োজন করতে বলেছে উচ্চশিক্ষা দেখভালের দায়িত্ব থাকা প্রতিষ্ঠানটি।


২৯টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের সঙ্গে ভার্চ্যুয়াল মতবিনিময় সভায় ইউজিসি আজ মঙ্গলবার এই আহ্বান জানায়। এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষে গুচ্ছ ভিত্তিতে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে (কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ২য় বার)। এর মধ্যে সাধারণ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে একটি গুচ্ছ (এই গুচ্ছে তিন বিভাগের জন্য তিনটি পরীক্ষা হবে), কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে নিয়ে একটি গুচ্ছ এবং তিনটি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে আরেকটি গুচ্ছে ভর্তি পরীক্ষা হবে।

সভায় ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক কাজী শহীদুল্লাহ শিক্ষার্থীদের স্বার্থ সমুন্নত রেখে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনের আহ্বান জানান। একই সঙ্গে তিনি শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে উত্থাপিত যুক্তিসংগত বিষয়গুলো আমলে নিতে বলেছেন।

বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রের বাইরেও ভর্তি পরীক্ষার আয়োজন ও সর্বোচ্চসংখ্যক শিক্ষার্থীকে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়ার আহ্বান জানান, ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক মুহাম্মদ আলমগীর। তিনি বলেন, এটি করা না গেলে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থী ছাড়া কেউ ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন না।

সভায় ইউজিসির সদস্যদের মধ্যে আরও যুক্ত ছিলেন অধ্যাপক দিল আফরোজা বেগম, অধ্যাপক মো. সাজ্জাদ হোসেন, অধ্যাপক বিশ্বজিৎ চন্দ, অধ্যাপক মো. আবু তাহের এবং ইউজিসির সচিব (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ফেরদৌস জামান।

উপাচার্যদের মধ্যে সাধারণ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার যুগ্ম আহ্বায়ক ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মীজানুর রহমান, প্রকৌশল গুচ্ছের আহ্বায়ক চট্টগ্রাম প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মোহাম্মদ রফিকুল আলম, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছের আহ্বায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. গিয়াসউদ্দীন মিয়া বক্তব্য দেন।

এর আগে গুচ্ছে থাকা ২০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের এক সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছিল, প্রথমে যোগ্যতা অনুযায়ী ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীরা আবেদন করবেন। এ জন্য কোনো টাকা লাগবে না। এরপর আবেদন করা প্রার্থীদের যাচাই-বাছাই (স্ক্রিনিং) করে নির্ধারিত সংখ্যক প্রার্থীদের ভর্তি পরীক্ষার সুযোগ দেওয়া হবে। যাঁরা ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার জন্য যোগ্য হবেন, সেটি তাঁদের জানিয়ে দেওয়া হবে। এরপর যোগ্য প্রার্থীরা ৫০০ টাকা ফি দিয়ে আবার আবেদন করবেন এবং তাঁরাই ভর্তি পরীক্ষা দিতে পারবেন। এ ছাড়া ভর্তি পরীক্ষায় ভুল উত্তরের জন্য নম্বর কাটা যাবে।

ওই বৈঠকেই প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হয়েছিল, এই ২০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটিতে কেন্দ্র থাকবে। মূলত এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে বসার ব্যবস্থা অনুযায়ী ভর্তি পরীক্ষার জন্য শিক্ষার্থী বাছাই করা হবে।

গত ৩০ জানুয়ারি এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার মূল্যায়নের ফল প্রকাশের পর এখন উচ্চশিক্ষায় ভর্তির প্রস্তুতি চলছে। ইতিমধ্যে প্রায় সব বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার সম্ভাব্য তারিখও ঘোষণা করেছে।