পেশা পরিকল্পনা

নেতৃত্ব উন্নয়ন–বিষয়ক কর্মশালা আয়োজন করেছিলেন সংগঠনের সদস্যরা। ছবি: সংগৃহীত
নেতৃত্ব উন্নয়ন–বিষয়ক কর্মশালা আয়োজন করেছিলেন সংগঠনের সদস্যরা। ছবি: সংগৃহীত

শুরুটা হয়েছিল ২০১১ সালে। ব্যবস্থাপনা বিভাগের আটজন শিক্ষার্থীর হাত ধরে প্রতিষ্ঠা পায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যারিয়ার ক্লাব (জেএনইউসিসি)। একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি ক্যারিয়ারের প্রস্তুতিমূলক ‘প্ল্যাটফর্ম’ হিসেবে কাজ করে সংগঠনটি। শুরু থেকেই চিফ মডারেটর হিসেবে পাশে আছেন ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. মহিউদ্দিন। হাফিজুর রহমান, কে এম হাবিবুর রহমান, শফিকুল ইসলাম, আবু জাহিদ, শাকিল দেওয়ান, মাসুদুর রহমান, সুমন হালদার ও সাব্বিরুল ইসলাম—শুরু হয়েছিল এই আটজনের হাত ধরে। এখন সংগঠনটির নিবন্ধিত সদস্যসংখ্যা প্রায় পাঁচ শতাধিক! ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা হাফিজুর রহমান বলছিলেন, ‘এখন চাকরির বাজারে সবাই চায় বাড়তি যোগ্যতা। ক্লাবের মাধ্যমে আমরা শিক্ষার্থীদের মধ্যে সেসব যোগ্যতা তৈরির চেষ্টা করছি। কোন ধরনের চাকরিতে কোন ধরনের যোগ্যতা চাওয়া হচ্ছে, সে ব্যাপারেও আমরা শিক্ষার্থীদের ধারণা দিতে চাই। যেন তারা নিজেদের সেভাবে গড়ে তোলার ব্যাপারে উদ্যোগী হয়।’
চাকরিবিষয়ক তথ্যসহায়তা প্রদান, দেশের সুপরিচিত পেশাদার ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে ক্যারিয়ারবিষয়ক কর্মশালা, প্রশিক্ষণ, তিন মাসব্যাপী লিডারশিপ ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম, শিল্পকারখানা পরিদর্শনসহ (ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্যুর) নানাবিধ কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে আসছে সংগঠনটি। এ ছাড়া ফেসবুক গ্রুপের মাধ্যমে নোটিশ বোর্ড আকারে থাকে সাম্প্রতিক চাকরির খোঁজখবর। সংগঠনের বর্তমান প্রেসিডেন্ট মো. আল আমিন বলছিলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় সব বিভাগের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে আমরা ক্যারিয়ারবিষয়ক প্রশিক্ষণের কাজ করে আসছি। ক্যারিয়ারবিষয়ক সাময়িকী প্রকাশের কাজ চলছে। এ বছর মার্চ-এপ্রিলের দিকে আশা করছি প্রকাশিত হবে। পরবর্তী সময়ে প্রতিবছর নিয়মিত এই সাময়িকী বের হবে।’
সংগঠন চালাতে গিয়ে কী ধরনের বাধার সম্মুখীন হয়েছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে আল আমিন বলেন, ‘বাধা পেরোনোর জন্যই তো এই সংগঠনের জন্ম। তবে আমরা আসলে প্রতিবন্ধকতা, বাধা কিংবা সমস্যাকে কখনোই সমস্যার চোখে দেখিনি; বরং আমরা একে চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখতে পছন্দ করি। সব ধরনের চ্যালেঞ্জ জয় করে এগিয়ে যাওয়াই তো সফল নেতৃত্বের লক্ষণ।’
তবে কিছু কিছু বাধাবিপত্তির কথা বললেন সংগঠনের সদস্যরা। যেমন ক্যারিয়ারবিষয়ক কর্মশালার আয়োজন করতে হয় শুক্রবার ও সরকারি ছুটির দিন ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত কার্যদিবসে। ‘ওয়ার্কিং ডে’ হওয়ায় ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও অনেক প্রশিক্ষকের উপস্থিতি নিশ্চিত করা যায় না। কেন্দ্রীয় মিলনায়তন ভাড়া করতে হয় ক্লাব সদস্যদের নিজস্ব অর্থায়নে। এসব ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা পেলে এগিয়ে যাওয়াটা আরও সহজ হতো বলে শিক্ষার্থীরা মনে করেন।
প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে ক্লাবের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে ক্লাব সদস্যরা নিজেরা যেমন নিজেদের প্রস্তুত করে তুলছেন, তেমনি সুযোগ করে দিচ্ছেন নতুনদের জন্যও।