জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়: খেলার চেয়েও বেশি কিছু

ধূপখোলা মাঠে আয়োজিত হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘মার্কেটিং প্রিমিয়ার লিগ’
ধূপখোলা মাঠে আয়োজিত হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘মার্কেটিং প্রিমিয়ার লিগ’
হোক ফুটবল বা ক্রিকেট; ক্যাম্পাসে বসে খেলা দেখার আনন্দই আলাদা। কখনো কখনো নিজেদের মাঠের খেলায়ও মেতে ওঠেন শিক্ষার্থীরা। হলের টিভি রুম হয়ে যায় গ্যালারি। ক্যানটিনে চায়ে চুমুক দিতে দিতে বাধে তুমুল তর্ক। মাঠের বাইরের এই রোমাঞ্চও কম কিসে! বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা লিখেছেন ক্যাম্পাসে খেলা দেখার আনন্দের অভিজ্ঞতা। এই নিয়ে আজ বিশেষ আয়োজন


আমরা বাঙালিরা খুব আবেগপ্রবণ জাতি। সেই আবেগের সঙ্গে যখন জড়িয়ে থাকে খেলা, তখন তো আর কথাই নেই!

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য ধূপখোলা মাঠ হলো সব খেলার কেন্দ্র। এখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিকেট, ফুটবলসহ যাবতীয় খেলার প্রতিযোগিতা হয়। যদিও ধূপখোলা মাঠ পুরোটাই ধুলোয় পরিপূর্ণ। ঘাসে ঢাকা হলে আরও ভালো হতো। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের হল না থাকায় একত্রে রাতে হলে বসে টিভিতে ম্যাচগুলো দেখার সুযোগ হয় না সত্যি, কিন্তু প্রতিবছর আন্তবিভাগ ক্রিকেট খেলা এবং ডিপার্টমেন্টের ব্যাচগুলোর মধ্যে খেলাগুলো আমরা বেশ উপভোগ করি। এই তো কয়েক মাস আগে, মার্চে অনুষ্ঠিত হয়েছিল মার্কেটিং ডিপার্টমেন্টের ব্যাচভিত্তিক এমপিএল (মার্কেটিং প্রিমিয়ার লিগ)। সেখানে ডিপার্টমেন্টের ৬টি ব্যাচের মধ্যে খেলা হলো। এই খেলায় প্রতিবছর সিনিয়র-জুনিয়র ব্যাচের মধ্যে তুমুল লড়াই হয়!

বাসে করে ধূপখোলা মাঠে যাওয়া থেকে শুরু করে একসঙ্গে চেঁচামেচি, হইহুল্লোড় করতে করতে ডিপার্টমেন্টের সিনিয়র-জুনিয়রদের মধ্যে সবার অজান্তেই এক মধুর সম্পর্ক তৈরি হয়। ‘সাকিব অব মার্কেটিং’ নামে খ্যাত ১১ ব্যাচের তালহা। এই ব্যাপারে তাঁর মন্তব্য, ‘আসলে আমাদের প্রত্যেকটা ব্যাচের কম্বিনেশন, লয়ালটি স্ট্রং থাকার কারণে আমাদের মধ্যে বোঝাপড়াটা খুব ভালো। আর আমরা যারা খেলি, তারা তো নতুন বছর এলেই অপেক্ষায় থাকি কখন এমপিএল শুরু হবে।’

বরাবরের মতো এবারও মাঠে ধারাভাষ্যের আয়োজন ছিল। মাঠে যখন প্রতিটি ব্যাচের শিক্ষার্থী উপস্থিত, তখন সবার মধ্যে এক চাপা উত্তেজনা কাজ করছিল। বিভাগের শিক্ষকেরা প্রতিটা টিমের ম্যানেজার থাকার পাশাপাশি খেলোয়াড়ের ভূমিকাও পালন করেন। খেলা শুরু হওয়ার পর সেই চাপা উত্তেজনা যেন বেরিয়ে আসতে লাগল সবার ভেতর থেকে! কোন ব্যাচ জেতে, কোন ব্যাচ হারে, সে নিয়ে কত যে কথা-কাটাকাটি! তবে এই কথা-কাটাকাটি কোনো সংঘর্ষে গড়ায় না, নিজেদের ব্যাচকে সেরা প্রমাণ করার চেষ্টা থাকে সবার মধ্যে। ছক্কা কিংবা আউট যেটাই হোক না কেন, উল্লাসে মাঠ তখন পুরো জমজমাট। কেননা কোনো ব্যাচই একটা আরেকটার চেয়ে কম যায় না।

গতবার চ্যাম্পিয়ন হওয়া সবচেয়ে সিনিয়র ৭ম ব্যাচ এবারও চ্যাম্পিয়ন হলো। আর রানার্সআপ হয় ৯ম ব্যাচ। তাই বলে কি আনন্দ কেবল তাদের? মোটেই না। আনন্দ উদ্‌যাপনে প্রতিটি ব্যাচের অংশগ্রহণ ছিল। উল্লাস করেছি আমরা সবাই একসঙ্গে। কাপ যেই ব্যাচই জিতুক না কেন, দিনশেষে আমরা সবাই তো একই পরিবারের সদস্য। সবাই মিলে আমরা মার্কেটিং পরিবার।

● মার্কেটিং বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়