আশা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেতু

মো. রুবেল সেতু
মো. রুবেল সেতু

পড়ালেখার পাশাপাশি ব্যবসা করা, ব্যবসার আয় দিয়ে নিজের হাত খরচ জোটানো, পরিবারে নিয়মিত অর্থের জোগান দেওয়া...সব মিলিয়ে মো. রুবেল সেতুর সংগ্রামটা সহজ নয়। ঢাকার আশা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ থেকে স্নাতক শেষ করে এখন সেখানেই স্নাতকোত্তর করছেন তিনি। কাজ করছেন ক্যাম্পাসের ও ক্যাম্পাসের বাইরের একাধিক সংগঠনে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগিতায় এরই মধ্যে দেশের বাইরে আয়োজিত বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন তিনি। আত্মবিশ্বাস বেড়েছে আরও। গত বুধবার কথা হলো আশা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের এই ‘প্রিয়মুখ’-এর সঙ্গে।

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার ইচ্ছে ছিল, কিন্তু সুযোগ হয়নি বলে সেতু ভেঙে পড়েননি। ‘আশা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের ক্যাম্পাস আমার বাসার কাছে। তাই বাবা বলেছিলেন এখানেই ভর্তি হতে। আমিও ভেবে দেখলাম, বাড়ির কাছে ক্যাম্পাস হলে আমার জন্য সুবিধা হয়। ভর্তি হয়ে গেলাম। আমার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আমি এত কিছু পেয়েছি যে মনে এখন আর কোনো আক্ষেপের জায়গা নেই।’ কৃতজ্ঞতা টের পাওয়া গেল সেতুর কথায়। নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি এই ভালোবাসা কী করে গড়ে উঠল? বিস্তারিত শুনি সেতুর মুখ থেকেই। ‘আমি কখনো ভাবিনি, আমার পাসপোর্টের প্রয়োজন হবে। অথচ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগিতায় এরই মধ্যে আমি মালয়েশিয়া, চীন ও সিঙ্গাপুরে আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেছি। অস্ট্রেলিয়ায় আরেকটি সম্মেলন হতে যাচ্ছে, সেখানেও অংশ নেওয়ার আমন্ত্রণ পেয়েছি। আগামী অক্টোবরে হয়তো যাব। বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই আমাকে সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত আছেন সেতু। ‘আশা ইউনিভার্সিটি বিজনেস ক্লাব’-এর ‘অ্যাসিস্ট্যান্ট অর্গানাইজিং সেক্রেটারি’ পদটা তাঁর দখলে। বললেন, ‘আমাদের ফ্যাকাল্টি অব বিজনেস স্টাডিজ-এর সব রকম আয়োজন আমাদের ক্লাবই করে। হোক সেটা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান কিংবা পিকনিক।’ অনুষ্ঠান আয়োজনের পাশাপাশি উপস্থাপনার কাজটিও উপভোগ করেন সেতু। জানালেন, ছোটবেলায় গান গাইতেন, কবিতা আবৃত্তি করতেন, তাই সংগঠনের কাজে তাঁর আগ্রহ ছিল বিশ্ববিদ্যালয়জীবনের শুরু থেকেই।

টুথব্রাশ থেকে শুরু করে টিশার্ট সরবরাহের ব্যবসাও করেছেন আশা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের এই বিবিএর ছাত্র। পরিশ্রমের আয় বাবার হাতে তুলে দিতে পারাই তাঁর আনন্দ। আর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা? মো. রুবেল সেতু বললেন, ‘পড়ালেখা শেষ করে আমি ব্যবসার দিকে মনোযোগ দিতে চাই। পাশাপাশি দেশের উন্নয়নে কাজ করতে চাই। এ ছাড়া পথশিশুদের নিয়েও কাজ করার ইচ্ছে আছে। যখনই কোনো পথশিশুর মুখে হাসি দেখি, এই হাসি আমাকে ভালো কিছু করার অনুপ্রেরণা দেয়।’