৪৬ বছর বয়সে পরীক্ষার হলে

পরীক্ষা দিচ্ছেন শফিকুল।   ছবি: প্রথম আলো
পরীক্ষা দিচ্ছেন শফিকুল। ছবি: প্রথম আলো

বগুড়ার শেরপুর উপজেলার শালফা টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএম কলেজ পরীক্ষা কেন্দ্র। বাইরে অভিভাবকদের ভিড়। কেন্দ্রের বিভিন্ন কক্ষে উত্তর লিখে যাচ্ছে পরীক্ষার্থীরা। কেন্দ্রের ৭ নম্বর কক্ষে কিশোর বয়সী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা দিতে দেখা গেল বয়স্ক এক ব্যক্তিকেও। তাঁর নাম শফিকুল ইসলাম। বয়স ৪৬ বছর হলেও তিনি হাল ছাড়েননি।

শফিকুল ধুনট উপজেলার চৌকিবাড়ী ইউনিয়নের চান্দিয়ার গ্রামের মৃত সোনাউল্লাহ সেখের ছেলে। পারিবারিক জীবনে তাঁর তিন মেয়ে। বড় মেয়ে শেরপুরে একটি কলেজের অনার্সের ছাত্রী। মেজ মেয়ে ধুনট উপজেলার একটি কলেজ এবং ছোট মেয়ে একটি উচ্চবিদ্যালয়ে লেখাপড়া করে। গতকাল পরীক্ষা শেষে শফিকুল ইসলাম বলেন, তাঁর বয়স অন্তত ৪৬ বছর। পরিবারে মেয়েরা শিক্ষার আলোয় আলোকিত হচ্ছে। তিনি কেন এই আলো থেকে বঞ্চিত থাকবেন। তাই সাংসারিক জীবনের পাশাপাশি তিনিও লেখাপড়ায় শুরু করেন। তিনি নিজের জীবনকে নতুনভাবে গড়তে চান।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শেখ নজমুল ইসলাম বলেন, শফিকুল ইসলাম ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে উপজেলার হাপুনিয়া দাখিল মাদ্রাসায় নবম শ্রেণির ভোকেশনালে ভর্তি হন। এ বছর তিনি কারিগরি বোর্ডের অধীনে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছেন।

শফিকুলের পরীক্ষার কক্ষে দায়িত্ব পালন করা শিক্ষক সমীরণ মণ্ডল বলেন, অন্যান্য পরীক্ষার্থীর চাইতে শফিকুলের বয়স অনেক বেশি। কিন্তু তাঁর লেখার মধ্যে কোনো জড়তা দেখা যায়নি। পরীক্ষা কেন্দ্রের সচিব অধ্যক্ষ মো. ইউসুফ আলী বলেন, শফিকুলের এই গল্প অনেক স্বল্পশিক্ষিতকে অনুপ্রেরণা জোগাবে।