পদার্থবিজ্ঞানে বাংলাদেশের রৌপ্য

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘টিম ১৮৯’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘টিম ১৮৯’

নবম ‘ইউনিভার্সিটি ফিজিকস কমপিটিশন’–এ রৌপ্যপদক জিতেছে বাংলাদেশের দুটি দল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘টিম ১৮৯’ ও শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) ‘টিম ৪১৩’। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দলটির সদস্যরা হলেন সুমিত বিশ্বাস, তুষার মিত্র ও অমিত লাহিড়ি। সবাই চতুর্থ বর্ষের ছাত্র। দলের ‘ফ্যাকাল্টি স্পনসর’ হিসেবে ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যাপক মোহাম্মদ ওয়াহিদুজ্জামান। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের দলটির সদস্যরা হলেন নওশের জাহান, ওলিউর রহমান ও মোহাম্মদ আবরার। এখানেও সবাই চতুর্থ বর্ষে পড়ছেন। এই দলের ‘ফ্যাকাল্টি স্পনসর’ ছিলেন শাবিপ্রবির পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যাপক পঙ্কজ কুমার দাস।
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যারোল কলেজের প্রফেসর কেলি এস ক্লিনের পরিচালনা এবং ইউনিভার্সিটি অব উইনিপেগের অধ্যাপকসহ আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের অধ্যাপকদের তত্ত্বাবধানে প্রতিবছর আন্তর্জাতিকভাবে এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। পদার্থবিজ্ঞানের অন্যান্য প্রতিযোগিতার চেয়ে এটা কিছুটা ভিন্ন। এখানে অনলাইনে ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দেওয়া হয় নির্দিষ্ট সমস্যার সমাধান চেয়ে। প্রতিযোগিতায় দুটি সমস্যা দেওয়া হয়েছিল। প্রবলেম ‘এ’ ও প্রবলেম ‘বি’। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দলটি প্রবলেম ‘এ’ বিভাগে জিতেছে রৌপ্য পদক। ‘বি’ বিভাগে রৌপ্য জিতেছে শাবিপ্রবির শিক্ষার্থীদের দল। এবারের প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ৪২০টির বেশি দল অংশগ্রহণ করেছিল।

শাবিপ্রবির ‘টিম ৪১৩’
শাবিপ্রবির ‘টিম ৪১৩’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘টিম ১৮৯’–এর সদস্যরা জানালেন, অনলাইনে অংশ নেওয়া যায় বলে এই প্রতিযোগিতা নিয়ে শিক্ষার্থীদের আগ্রহ বেশি। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সমস্যার দ্রুত সমাধান করে পাঠিয়ে দিতে হয় আয়োজকদের ই–মেইল ঠিকানায়। ফলাফল প্রকাশের পর পদকজয়ীর তালিকায় নিজেদের নাম দেখার আনন্দ তাঁদের কাছে বড় পাওয়া। তবে এই শিক্ষার্থীরা মনে করেন, দেশে এ ধরনের প্রতিযোগিতা নিয়মিত আয়োজন করা সম্ভব হলে ছেলেমেয়েরা আরও বেশি চর্চা করার সুযোগ পাবে, পদার্থবিজ্ঞান নিয়ে ভীতি দূর হওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন মৌলিক সমস্যা সমাধানের ব্যাপারেও ব্যাপক আগ্রহ সৃষ্টি হবে।
উল্লেখ্য, এ দল গতবারও একই প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের পক্ষে রৌপ্যপদক জিতেছিল।
শাবিপ্রবির ‘টিম ৪১৩’–এর সদস্যদের সঙ্গে কথা হলো প্রতিযোগিতার নিয়মকানুন প্রসঙ্গে। বললেন, ‘পদার্থবিজ্ঞানের নীতিগুলো ব্যবহার করে এখানে দুটি বাস্তবভিত্তিক সমস্যার মধ্যে একটি সমস্যার সমাধান করতে হয়। মজার ব্যাপার হলো, নিয়ম অনুযায়ী যেকোনো ধরনের বই, গবেষণাপত্র বা ইন্টারনেটের সাহায্য নেওয়ার সুযোগ আছে। কিন্তু কোনো ব্যক্তির সাহায্য নেওয়া যাবে না। ভেরিফিকেশনের জন্য প্রতি দলে একজন ফ্যাকাল্টি স্পনসর থাকেন।’
এই দুই দল ছাড়াও বাংলাদেশ থেকে আরও চারটি দল জিতেছে ব্রোঞ্জ পদক—ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘টিম ১৭৬’–এর শুভদীপ বড়ুয়া, তাসনিম আকবর ফারুকী ও আসিফ আকবর; শাবিপ্রবির ‘টিম ৩৯৬’–এর তরিকুল ইসলাম, সোলায়মান হোসাইন ও মামুনুর রশিদ; বুয়েটের ‘টিম ১৭৭’–এর মোহাম্মদ মুনতাসির হাসান, ফারিবা ইসলাম ও সাদমান শাহরিয়ার এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘টিম ১৭৯’–এর হামিদুর রহমান, আয়মান ফিরোজ ও মোহাম্মদ রাকিব হাসান।