পরিপূর্ণ বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে আস্থা অর্জন করেছি

মো. কামরুজ্জামান চৌধুরী, উপাচার্য
মো. কামরুজ্জামান চৌধুরী, উপাচার্য
লিডিং ইউনিভার্সিটি। সিলেটের প্রথম বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। ২০০১ সালে শিল্পপতি সৈয়দ রাগীব আলী এটি প্রতিষ্ঠা করেন। ২০১৮ সালের মে মাস থেকে সিলেটের দক্ষিণ সুরমা এলাকায় স্থায়ী ক্যাম্পাসে শিক্ষা কার্যক্রম চলছে। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ১০টি বিভাগে পাঁচ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছেন। বিশ্ববিদ্যায়ের প্রবেশপথ দিয়ে ঢুকলেই বাঁ পাশে চোখে পড়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল, আর ডান পাশে বৃহৎ পরিসরে তৈরি শহীদ মিনার। প্রবেশপথের বাঁ দিকে প্রশাসনিক ভবন আর সোজা এগোলে একাডেমিক ভবন। গত কয়েক বছরে বিশ্ববিদ্যালয়টি বিভিন্ন ক্ষেত্রে ঈর্ষণীয় সাফল্য অর্জন করেছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের শিক্ষার্থীরা এরই মধ্যে মঙ্গল গ্রহে ব্যবহারের উপযোগী রোবট, যানজট নিরসনে স্বয়ংক্রিয় গাড়ি পার্কিং পদ্ধতির উদ্ভাবন, প্রতিবন্ধীদের জন্য স্বয়ংক্রিয় হুইলচেয়ার তৈরি করেছেন। দেশ ও দেশের বাইরে রোবটিকসসহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে ২০টির বেশি প্রথম পুরস্কার পেয়েছেন। মুখোমুখি: মো. কামরুজ্জামান চৌধুরী, উপাচার্য

প্রথম আলো: সিলেটের প্রথম বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। কী লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে যাত্রা শুরু হয়েছিল?

উপাচার্য: সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে সিলেটে কোনো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ছিল না। স্বাধীনতার পরপর সিলেট লেখাপড়ায় খুব ভালো অবস্থানে থাকলেও প্রবাসমুখিতার কারণে এই শতকের গোড়ার দিকে সিলেট একটু পিছিয়ে ছিল। এই পরিপ্রেক্ষিতে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে এ অঞ্চলে দক্ষ মানবসম্পদ ও শিক্ষিত, সুযোগ্য নাগরিক তৈরির লক্ষ্য নিয়ে শিল্পপতি সৈয়দ রাগীব আলী সিলেটে প্রথম বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন।
প্রথম আলো: শিক্ষার মান উন্নয়ন ও গবেষণা নিয়ে কী কী উদ্যোগ আছে?
উপাচার্য: লিডিং ইউনিভার্সিটি শিক্ষার মান ও গবেষণা কার্যক্রমকে সব সময় গুরুত্ব দিয়ে আসছে। প্রতিটি প্রোগ্রামে দক্ষ শিক্ষকেরা ‘আউটকাম বেসড কারিকুলামের’ মাধ্যমে পাঠদান করে থাকেন। ইনস্টিটিউশনাল কোয়ালিটি অ্যাসিউরেন্স সেলের (আইকিউএসি) উদ্যোগে নিয়মিত শিক্ষাপদ্ধতি ও গবেষণা-বিষয়ক কর্মশালা ও সেমিনারের আয়োজন করা হয়। শিক্ষকদের বিদেশে উচ্চশিক্ষা এবং দেশ ও দেশের বাইরে বিভিন্ন সম্মেলন ও সেমিনারে অংশগ্রহণ করার জন্য সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের গবেষণার জন্য প্রতিবছর গবেষণা প্রকল্পে পর্যাপ্ত বরাদ্দ দেওয়া হয়। এ ছাড়া গবেষণায় উৎসাহিত করার জন্য প্রতিবছর লিডিং ইউনিভার্সিটির শিক্ষকদের পূর্ববর্তী বছরে উল্লেখযোগ্য জার্নালে প্রকাশিত শ্রেষ্ঠ গবেষণা প্রবন্ধ নির্বাচন করে ‘দানবীর সৈয়দ রাগীব আলী গবেষণা পুরস্কার’ দেওয়া হয়।
প্রথম আলো: শিক্ষার্থীরা কেন ভর্তি হওয়ার ক্ষেত্রে এই বিশ্ববিদ্যালয়কে প্রাধান্য দেবেন?
উপাচার্য: সবচেয়ে সমৃদ্ধ এই বিশ্ববিদ্যালয়। স্থায়ী ক্যাম্পাসে স্থানান্তরিত হয়ে পরিপূর্ণ অবয়ব লাভ করেছে। সিলেটের দক্ষিণ সুরমা এলাকায় গড়ে ওঠা সবুজে ঘেরা দৃষ্টিনন্দন ও শিক্ষাবান্ধব স্থাপত্যশৈলীতে তৈরি স্থায়ী ক্যাম্পাসে মনোরম পরিবেশে পাঠদান চলছে। তাই আমাদের নিজস্ব পরিবহনব্যবস্থায় সিলেট নগরীর বিভিন্ন স্থান থেকে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেই মুগ্ধ হয়ে যায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব পরিবহনব্যবস্থা থাকায় শিক্ষার্থীদের অভিভাবকেরাও তাঁদের ছেলেমেয়েদের নিরাপদ যাতায়াত বিষয়ে চিন্তামুক্ত থাকেন। আর পড়াশোনার ক্ষেত্রে বলা যায়, আমরা এমনভাবে আমাদের সিলেবাস প্রণয়ন করেছি যেন আমাদের শিক্ষার্থীরা আদর্শ মানুষ হিসেবে নিজেকে তৈরি করে চাকরি ক্ষেত্রেও প্রাধান্য পায়। বিভিন্ন বিভাগের সমৃদ্ধ ল্যাব ছাড়াও এখানে তৈরি হয়েছে সর্বাধুনিক সুযোগ-সুবিধাসম্পন্ন শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব। এই সব কারণে এই বিশ্ববিদ্যালয় দেড় যুগ অতিক্রম করার পর আমরা ইতিমধ্যে এর সুফল পেতে শুরু করেছি।
প্রথম আলো: সহশিক্ষা কার্যক্রম কেমন?
উপাচার্য: এ ক্ষেত্রেও শীর্ষ স্থানে আছি আমরা। সিন্যাপ্স অ্যাটকোডার রেটিং অ্যালগরিদমের ভিত্তিতে বিগত ২০১৪ আইসিপিসি থেকে ২০১৮ পর্যন্ত ৩০টি জাতীয় পর্যায়ের প্রোগ্রামিং কনটেস্টে অংশ নিয়ে বাছাইয়ের পর লিডিং ইউনিভার্সিটি ঢাকার বাইরের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম স্থান অর্জন করে। সিন্যাপ্স র‍্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের সব সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে লিডিং ইউনিভার্সিটির অবস্থান ১২তম।
প্রথম আলো: আরও এগিয়ে যাওয়া, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে বলুন।
উপাচার্য: লিডিং ইউনিভার্সিটির আইন বিভাগে পড়াশোনা করে স্নাতকেরা সহকারী জজ বা বিচারিক হাকিমসহ বিভিন্ন আইন পেশায় কর্মরত আছে। ব্যবসায় প্রশাসন (বিবিএ) থেকে পাস করে দেশের স্বনামধন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, সুইডেন, ফিনল্যান্ডের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষা নিচ্ছে বহু শিক্ষার্থী। সাফল্যের ধারায় আমরা আরও এগিয়ে যেতে চাই।